মূলত বিজেপিকে ভাঙিয়েই খড়্গপুরে বোর্ড গড়েছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে বিদ্রোহ শুরু হয়ে গেল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিজেপিতে। দলের অন্দরে ক্ষোভ এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছল যে বিজেপি-র জেলা সভাপতি সাংবাদিক বৈঠক করে স্বীকার করে নিলেন, দলের নব-নির্বাচিত কাউন্সিলরদের ধরে রাখতে না পারা তাঁরই ব্যর্থতা।
শুক্রবার দুপুরে মেদিনীপুরে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন দলের জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা মেনে নিচ্ছি। এই পরিস্থিতির অনেক দায়ই আমার। আমরা কাউন্সিলরদের ধরে রাখতে পারিনি। নতুনদের প্রার্থী করার ক্ষেত্রেও আরও বেশি সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।’’ বস্তুত, খড়্গপুরে বোর্ড গড়ার জন্য প্রথমে বিজেপিকেই ভাঙে তৃণমূল। রেল মাফিয়া শ্রীনু নায়ড়ু স্ত্রী পূজা-সহ বিজেপি-র চার কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। পরে তিন বারের জেতা বিজেপি কাউন্সিলর বেলারানি অধিকারীও দল ছেড়ে তৃণমূলে চলে যান। এমনকী বোর্ড গঠনের ভোটাভুটিতে যে সমীকরণ সামনে তাতে অনুমান, বিজেপি-র বাকি দুই কাউন্সিলরও তৃণমূল শিবিরকেই সমর্থন করেছেন। এই দু’জনের সমর্থনের কথা অবশ্য মানতে নারাজ তুষারবাবু। তাঁর যুক্তি, ‘‘যাঁরা দুষ্কৃতী হামলা, পুলিশি জুলুমের মধ্যেও দল ছাড়েননি, তাঁরা গোপন ব্যালটের ভোটে তৃণমূলকে সমর্থন করেছেন বলে বিশ্বাস করি না।’’
এ বারের পুরনির্বাচনে খড়্গপুরে ৭টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। পাঁচ জন দলবদল করায় বোর্ড গঠনের আগেই তারা কমে দাঁড়ায় ২-এ। সেই দু’জনও যদি তৃণমূলকেই সমর্থন করে থাকেন, তাহলে কিন্তু এই মুহূর্তে রেলশহরে বিজেপির ঝুলি শূন্য। অথচ গত লোকসভা ভোটে খড়্গপুর সদর কেন্দ্রে বাকি সব দলকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছিল বিজেপি। প্রায় ২৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। সেই অবস্থা তলানিতে এসে পৌঁছনোয় জেলা বিজেপির এখন তছনছ দশা। আগামী ১৪ জুন খড়্গপুরে বিজেপি-র এক সাংগঠনিক বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। সেখানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, দলের তরফে রাজ্যের পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহের। কিন্তু পাঁচ সাংগঠনিক জেলাকে নিয়ে সেই কর্মসূচিতে খড়্গপুরে করার আর ঝুঁকি নিচ্ছে না বিজেপি-র জেলা নেতৃত্ব। তুষারবাবু বলেন, ‘‘অন্য জেলায় ওই বৈঠক করার জন্য রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি।’’