Advertisement
০৬ মে ২০২৪

ছুটিতেও মন কাড়ল আদিবাসী পড়ুয়ারা

‘ছুটি হল ছুটিছুটি চলো যাই মাঠে....দিন আর বাঁধা নয় ছয়-দুই-আটে’। গ্রীষ্মাবকাশের সন্ধ্যায় গানে-কবিতায়-নাচের ছন্দে মাতল একদল আদিবাসী পড়ুয়া। গরমের ছুটিকে স্মরণীয় করে রাখার এমন উদ্যোগে সামিল হলেন ঝাড়গ্রাম একলব্য আদর্শ আবাসিক স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরাও। শনিবার ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির এই সরকারি স্কুলে ছুটির ঘন্টা পড়ল।

একলব্য স্কুলে গ্রীষ্মাবকাশের অনুষ্ঠান। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

একলব্য স্কুলে গ্রীষ্মাবকাশের অনুষ্ঠান। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

কিংশুক গুপ্ত
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৬ ০১:০৪
Share: Save:

‘ছুটি হল ছুটিছুটি চলো যাই মাঠে....দিন আর বাঁধা নয় ছয়-দুই-আটে’।

গ্রীষ্মাবকাশের সন্ধ্যায় গানে-কবিতায়-নাচের ছন্দে মাতল একদল আদিবাসী পড়ুয়া। গরমের ছুটিকে স্মরণীয় করে রাখার এমন উদ্যোগে সামিল হলেন ঝাড়গ্রাম একলব্য আদর্শ আবাসিক স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরাও।

শনিবার ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির এই সরকারি স্কুলে ছুটির ঘন্টা পড়ল। সান্ধ্য অনুষ্ঠানের সূচনার সুর বেঁধে দিলেন টিচার-ইনচার্জ নৃপেন টুডু। বললেন, “উত্তরণের যাত্রাপথে অবসরেরও প্রয়োজন। তবে সেই অবসর সৃজনশীল হওয়া চাই।” ঘটনাচক্রে শনিবার ছিল বুদ্ধ পূর্ণিমা। ক্ষমার সাগর গৌতমবুদ্ধের জীবনী প্রাঞ্জল ভাষায় ব্যাখ্যা করলেন সহশিক্ষিকা গুরুবারি মুর্মু। বুদ্ধদেবের প্রতিকৃতিতে মাল্যার্পণ করে শ্রদ্ধা জানালেন অনুষ্ঠানের মুখ্য অতিথি বেলুড় রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের ভারপ্রাপ্ত স্বামী শুভকরানন্দ। ছিলেন অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রকল্প আধিকারিক সন্দীপ টুডু।

ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের এই সরকারি স্কুলটির পরিচালনার দায়িত্ব মাস চারেক আগে রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই দ্রুত বদলাচ্ছে স্কুলের ছবিটা। গত জানুয়ারিতে স্কুল পরিদর্শন করে গিয়েছেন বেলুড় রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুহিতাননন্দ-সহ মঠ-মিশনের সন্ন্যাসীরা। স্বামী শুভকরানন্দের তত্ত্বাবধানে স্কুলটিকে আদর্শ হিসেবে গড়ে তোলা চলছে। ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে শুভকরানন্দ অবশ্য শান্তনু মহারাজ নামে পরিচিত।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি জেলা প্রকল্প আধিকারিক সন্দীপ টুডু জানালেন, তিনি পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাক্তন ছাত্র। পড়ুয়াদের শুভকরানন্দ বললেন, “তোমরা একলব্য থেকে সমাজের সকলের স্বীকৃতি পেয়ে যথার্থ সব্যসাচী হয়ে ওঠো।” স্বামী বিবেকানন্দের বাণী উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, “জন্মেছ যখন, তখন একটা দাগ রেখে যাও। সুকর্মের সেই দাগ ইতিহাসের পাতায় মানুষকে চিরস্মরণীয় করে রাখে।”

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সহশিক্ষক শুভদীপ বসুর তত্ত্বাবধানে ছুটির নামতা শোনায় পড়ুয়ারা। নজরুলগীতি, সাঁওতালি রবীন্দ্রসঙ্গীত ও আদিবাসী সঙ্গীতের সুরে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে ছাত্রীরা। শিক্ষক-শিক্ষিকারও বৃন্দগান করেন। ধন্যবাদ-জ্ঞাপন করেন সহশিক্ষক প্রশান্ত দাস।

সবশেষে সকলে গেয়ে ওঠেন ‘এসে শ্যামল সুন্দর’। গ্রীষ্মাবকাশের প্রাক সন্ধ্যায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে শ্যামল-কিশোর মুখগুলি!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tribal-Student Celebration Teachers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE