বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকারি ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন জানানোর ফর্ম তোলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আহত হলেন দুই কৃষক। মঙ্গলবার সকালে এই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার পঞ্চায়েত সমিতির অফিসের সামনে। নন্দকুমারের বরগোদা গ্রামের বাসিন্দা বুদ্ধদেব মণ্ডল ও সুদর্শন মণ্ডল নামে আহত ওই দুই কৃষককে নন্দকুমার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকারি ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন জানাতে কৃষি দফতর থেকে ফর্ম বিলি করা হচ্ছে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, মঙ্গলবার থেকে নন্দকুমার ব্লকের কৃষকদের ফর্ম দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছ । ওই ফর্ম তোলার জন্য এ দিন নন্দকুমার পঞ্চায়েত সমিতির অফিসের প্রাঙ্গণে বাধা মঞ্চের সামনে ভোর থেকেই ব্লকের কয়েকটি গ্রামপঞ্চায়েত থেকে প্রায় দেড় হাজার কৃষক লাইন দিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। ফর্ম দেওয়া শুরু হওয়ার পরে সকাল ১১টা নাগাদ লাইনে দাঁড়ানো কৃষক সুদর্শন মণ্ডল নিজের ফর্ম তোলার পর তাঁর এক ভাইয়ের জন্য ফর্ম চান। এইসময় লাইনে তাঁর পিছনে দাঁড়ানো অন্য কৃষকরা আপত্তি জানান। এনিয়ে সুদর্শনের সঙ্গে অন্য কৃষকদের বচসা ও ধস্তাধস্তি বাধে।
ধস্তাধস্তির সময় সুদর্শন ও বুদ্ধদেবের নাকে আঘাত লাগে। দু’জনেই আহত হন। ঘটনার জেরে উত্তেজনা তৈরি হয়। পঞ্চায়েত সমিতির প্রতিনিধি ও নন্দকুমার থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। স্থানীয় লোকজন আহত দু’জনকেই কাছেই নন্দকুমার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে ভর্তি করে। ঘটনার কথা স্বীকার করে নন্দকুমার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকুমার বেরা বলেন, ‘‘ফর্ম চাওয়া নিয়ে লাইনে অপেক্ষা করা কৃষকদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে পরবর্তী সময়ে যথারীতি ফর্ম বিলির কাজ হয়েছে।’’
অন্য দিকে এ দিনই জেলার চণ্ডীপুর ব্লকের ব্রজলালচক গ্রামপঞ্চায়েত অফিস সংলগ্ন ভূমি রাজস্ব পরিদর্শকের অফিসে জমির খাজনা জমা দিতে আসা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের একাংশ খাজনা জমা দিতে সুযোগ না পাওয়ায় ক্ষুদ্ধ হয়ে গ্রামপঞ্চায়েত অফিসের কাছে দুপুর ২ টা নাগাদ দিঘা-কলকাতা সড়ক অবরোধ করেন বলে অভিযোগ। প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে অবরোধের পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে।
তমলুকের মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক স্বপনকুমার হাজরা এই ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘‘ওই অফিসে খাজনা দেওয়ার জন্য এ দিন অনেক কৃষক এসেছিলেন। তবে একই দিনে অনেক কৃষক জমির খাজনা জমা দিতে আসার অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করতে হওয়ায় ক্ষুদ্ধ হয়ে কৃষকদের সড়ক অবরোধ করেছিল বলে জানতে পেরেছি। পরে সমস্যা মিটে গিয়েছে।’’