Advertisement
E-Paper

দুবাইয়ে মৃত তমলুকের দুই শ্রমিক

সোমবার রাতে দুঃসংবাদটা আসার পর থেকে আর চোখের পাতা এক করতে পারেনি দুই পরিবার। সংসারে সাশ্রয় হবে বলে দু’জনেই সুদূর দুবাইয়ে কাজে গিয়েছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৮ ০২:০৪

সোমবার রাতে দুঃসংবাদটা আসার পর থেকে আর চোখের পাতা এক করতে পারেনি দুই পরিবার। সংসারে সাশ্রয় হবে বলে দু’জনেই সুদূর দুবাইয়ে কাজে গিয়েছিলেন। দুই পরিবার সূত্রেই জানানো হয়েছে, ওই দিন রাতে দুবাই থেকে খবর আসে সেখানে কারখানায় কাজ করার সময় দুর্ঘটনায় সাবির আলি (২৮) ও সাকিল মল্লিক (২৬) নামে ওই দুই যুবক মারা গিয়েছেন। তাঁদের সহকর্মীরাই এই খবর দেন।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক থানার চনশ্বরপুর এলাকার অনন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা সাবির আলি। সাকিল মল্লিকের বাড়ি কাছেই বড়বড়িয়া গ্রামে। দুই পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সাবির ও সাকিল দুবাইয়ে একটি অ্যালুমিনিয়াম কারখানায় কাজ করতেন। বছরখানেক আগে তাঁরা কাজে গিয়েছিলেন। মাঝে দু’জনেই বাড়িতে এসেছিলেন। মাসখানেক আগে ফের দুবাই চলে যান কাজে যোগ দিতে। সোমবার বিকেলে কারখানায় ফার্নেসে কাজের সময় ফার্নেস ভেঙে দুর্ঘটনায় দু’জনেই মারা যান বলে অভিযোগ। রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ তাঁদেরই সহকর্মী চনশ্বরপুরেরই বাসিন্দা এক যুবকের কাছ থেকে ফোনে মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর থেকেই শুদু দুই পরিবার নয়, এলাকাতেও শোকের পরিবেশ। সাবিরের বাড়িতে বাবা-মা, একভাই, স্ত্রী ও চার মাসের শিশুপুত্র রয়েছে। সাকিলের বাড়িতে রয়েছেন বাবা-মা, স্ত্রী ও মাস ছয়েকের এক কন্যা।

মঙ্গলবার সাবিরের বাবা সাফিউল ইসলাম বলেন, ‘‘সংসারে সাশ্রয় হবে বলে এলাকার ১৫-২০ জন ছেলের সঙ্গে দুবাইয়ে অ্যালুমিনিয়াম কারখানায় কাজ করতে গিয়েছিল ছেলে। কয়েক মাস পরে সাবির সহ কয়েকজন বাড়ি এসেছিল। গত ৬ জুন ফের ওরা কাজে গিয়েছিল। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ সেখানে থাকা এলাকার এক যুবক প্রথমে ফোন করে জানায় কারাখানায় কাজের সময় দুর্ঘটনায় সাবির ও সাকিলের মৃত্যু হয়েছে। পরে ওই কারখানা থেকেও দুর্ঘটনায় ছেলের মৃত্যুর কথা জানানো হয়।’’

এক বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সাবিরই বড়। ছোটভাই রুহুল আমিন আইটিআই পড়ছে। সাফিউল বলেন, ‘‘বাড়ির ওই একমাত্র রোজগেরে ছিল। ওর পাঠানো টাকায় সংসার চলত। এ ভাবে ছেলেকে হারাতে হবে ভাবিনি। এখন কী হবে বুঝতে পারছি না।’’ প্রায় একই ছবি সাকিলের বাড়িতেও।

এলাকার বাসিন্দা ও তমলুক পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শেখ আকবর আলি বলেন, ‘‘এলাকার বেশ কয়েকজন যুবক দুবাইয়ে অ্যালুমিনিয়াম কারখানায় কাজ করতে গিয়েছিল। সোমবার কারখানায় কাজ করার সময় ফার্নেস ভেঙে দুর্ঘটনায় সাবির ও সাকিলের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। আমরা সেখানে কর্মরত এলাকার অন্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছি।’’ তিনি জানান, মৃতদেহ দেশে নিয়ে আসার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো হবে। তমলুক থানার পুলিশ জানিয়েছে, দুবাইয়ে গিয়ে দুই যুবকের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে আমাদের কাছে এখনও কেউ কোনও খবর দেননি। খবর পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।

এই অবস্থায় ছেলের দেহ পেতে দুই পরিবারই প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন।

Labour Dead
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy