Advertisement
০৪ মে ২০২৪

তৃণমূলের দ্বন্দ্বে দিনভর ট্রেকার বন্ধ নন্দীগ্রামে

ট্রেকার স্ট্যান্ড নিয়ে তৃণমূল নেতাদের মধ্যে বিরোধের জেরে শনিবার সকাল থেকে নন্দীগ্রাম বাজার থেকে কেন্দেমারি ও সোনাচুড়া রুটের ট্রেকার চলাচল বন্ধ রইল। এ দিন সকালে নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রী বোঝাই একটি ট্রেকারকে হাজরাকাটা বাজারের কাছে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার অনুগামীরা আটকে দেয় বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৫ ০০:৪৮
Share: Save:

ট্রেকার স্ট্যান্ড নিয়ে তৃণমূল নেতাদের মধ্যে বিরোধের জেরে শনিবার সকাল থেকে নন্দীগ্রাম বাজার থেকে কেন্দেমারি ও সোনাচুড়া রুটের ট্রেকার চলাচল বন্ধ রইল। এ দিন সকালে নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রী বোঝাই একটি ট্রেকারকে হাজরাকাটা বাজারের কাছে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার অনুগামীরা আটকে দেয় বলে অভিযোগ। ফলে নন্দীগ্রাম বাজার থেকে কেন্দেমারি, সোনাচূড়া রুটের সব ট্রেকার বন্ধ হয়ে যায়। বিপাকে পড়েন ওই এলাকার বাসিন্দারা।

দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নন্দীগ্রাম বাজার থেকে কেন্দেমারি খেয়াঘাট, সোনাচূড়া বাজার, তেখালি বাজার প্রভৃতি রুটে এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের যাতায়াতের জন্য প্রতিদিন প্রায় ৩০টি ট্রেকার চলাচল করে। ট্রেকারগুলি গত কয়েক বছর ধরে নন্দীগ্রাম বাজার সংলগ্ন হাসপাতাল মোড় এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে ওই এলাকাটি ট্রেকার স্ট্যান্ড হিসেবে পরিচিত ছিল। সম্প্রতি নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড থেকে তেখালি বাজারগামী রাস্তার সংযোগকারী নতুন বাইপাস রাস্তা তৈরি হয়। এরপর স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ট্রেকারগুলি হাসপাতাল মোড়ের পরিবর্তে নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড থেকে বাইপাস রাস্তা হয়ে কেন্দেমারি, সোনাচুড়া ও তেখালি রুটে চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড থেকে বাইপাস হয়ে ওইসব রুটে ট্রেকার চলাচল করার ফলে নন্দীগ্রামের কেন্দেমারি ঘাট, সোনাচুড়া, গড়চক্রবেড়িয়া প্রভৃতি দূরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের যাতায়াতে অসুবিধা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানায় কেন্দেমারি এলাকার স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এরপরই প্রকাশ্যে আসে তৃণমূলের স্থানীয় দুই নেতার বিরোধ। শনিবার সকালে হাজরাকাটা বাজারের কাছে কেন্দেমারি গ্রামপঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তথা বর্তমান তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য সেখ সাহাউদ্দিনের নেতৃত্বে স্থানীয় লোকজন একটি ট্রেকারকে আটকায় বলে অভিযোগ। পরে ওই রাস্তায় যাতায়াতকারী কেন্দেমারি ঘাট ও সোনাচূড়া বাজার রুটে চলাচলকারী প্রায় ২২ টি ট্রেকারই বন্ধ করে দেন ট্রেকার মালিকরা। ট্রেকার স্ট্যান্ড নিয়ে কেন্দেমারি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার তৃণমূল নেতা শেখ সাহাউদ্দিনের সঙ্গে নন্দীগ্রাম গ্রামপঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান সুদীপ খাঁড়ার বিরোধের জেরে ট্রেকার চলাচল নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ।

নন্দীগ্রাম গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান সুদীপবাবু বলেন, ‘‘বাইপাস রাস্তা চালু হওয়ায় আমরা চেয়েছিলাম নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড থেকে ট্রেকারগুলি বাইপাস রাস্তা হয়ে কেন্দেমারি, সোনাচূড়া, তেখালি রুটে চলাচল করুক। কিছু মানুষ এতে আপত্তি করেছেন বলে জানতে পেরেছি। তবে এতে আমাদের দলের কোনও নেতা জড়িত আছে বলে জানা নেই।’’ ট্রেকার চলাচলে বাধা দেওয়ার কথা স্বীকার করে কেন্দেমারি পঞ্চায়েতের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য শেখ সাহাউদ্দিন বলেন, ‘‘নন্দীগ্রাম হাসপাতাল মোড় এলাকায় ট্রেকার স্ট্যান্ড থাকার ফলে হাসপাতাল, বিডিও অফিস, থানা-সহ বিভিন্ন অফিসে আসার ক্ষেত্রে বাসিন্দাদের সুবিধা হত। কিন্তু নতুন বাসস্ট্যান্ডে অসুবিধার অভিযোগ জানান স্থানীয়রা। তাই আজ সকাল ওই রুটে চলা ট্রেকার আটকেছিলাম। আমরা চাই আগের মত হাসপাতাল মোড়ে স্ট্যান্ড থাকুক।’’ দলেরই নেতাদের বিরোধের জেরে ট্রেকার বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মেঘনাদ পাল বলেন, ‘‘নন্দীগ্রাম বাজারের কাছে নতুন বাইপাস রাস্তা চালু হওয়ায় বাসস্ট্যান্ড থেকে বাইপাস হয়ে বিভিন্ন রুটে ট্রেকার চলাচলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ নিয়ে আজ দলের স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশ আপত্তি করেছে বলে জানতে পেরেছি। সমস্যা মেটানোর জন্য ওই দুই এলাকার দলের স্থানীয় নেতৃত্ব ও ট্রেকার মালিকদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। আশা করি শীঘ্রই সমস্যা মিটবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tamluk Vehicle trinamool BJP congress clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE