Advertisement
E-Paper

খেজুরিতে সেই হিংসা, ফিরল গুলি-বোমার রাজনীতির পুরনো ছবি

বিধানসভা ভোটের কয়েক মাস আগেও ‘বদলা’ র রাজনীতি অব্যাহত খেজুরিতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২০ ০২:৩২
সংঘর্ষের পর প্রতিবাদে জাতীয় সড়ক অবরোধ বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। রবিবার । নিজস্ব চিত্র

সংঘর্ষের পর প্রতিবাদে জাতীয় সড়ক অবরোধ বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। রবিবার । নিজস্ব চিত্র

বদলেছে সময়, বদলেছে শাসক দলের রং। তবু বদলের চিহ্ন নেই খেজুরিতে। গোলাগুলি, বোমাবাজি যেন রাজনীতির ভবিতব্য হয়ে গিয়েছে খেজুরিতে। ‘বদলা নয়, বদলের’স্লোগান তুলে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদল ঘটিয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু বিধানসভা ভোটের কয়েক মাস আগেও ‘বদলা’ র রাজনীতি অব্যাহত খেজুরিতে।

আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি নিয়ে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে উত্তেজনা ছিলই খেজুরির হলুদবাড়ি পঞ্চায়েত এলাকায়। তার উপর টেন্ডার ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে পড়া গাছ বিক্রি নিয়ে শাসক ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্যে রবিবার উত্তপ্ত হল এলাকা। বিজেপির জেলা সম্পাদক পবিত্র দাস গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে দলীয় নেতৃত্বের অভিযোগ। পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধে স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য সহ কয়েকজন দলীয় কর্মীকে মারধর এবং বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ এনেছেন এলাকার বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডল। কটকা দেবীচক, গোড়াহার জলপাই গ্রামে পুলিশের উপস্থিতিতেই শাসক দলের বিরুদ্ধে বোমাবাজি ও গুলি ছোড়ার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। যদিও গুলি ছোড়া এবং বোমাবাজির অভিযোগ পুলিশ এবং শাসক দল উভয়েই অস্বীকার করেছে.

জেলার পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খেজুরিতে একটা গোলমাল হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। দু’পক্ষের কেউই লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত হবে।’’

২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলন পর্ব থেকে গুলি আর বোমার রাজনীতি খেজুরির পরিচিত ছবি। জাহানাবাদের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘সে সময় নন্দীগ্রামের শেরখানচক থেকে গুলির আওয়াজ ঘর থেকেও শোনা যেত। ঘরের দেওয়ালে এবং নারকেল গাছে এখনও গুলির দাগ স্পষ্ট।’’ পরে, ২০০৮ সালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ দখল করে তৃণমূল। তারপর কিছুদিন শান্ত ছিল এলাকা। ২০১০ সালে এলাকা দখল ঘিরে সিপিএম এবং তৃণমূলের সংঘর্ষ ঘিরে রণক্ষেত্র হয়েছিল গোটা খেজুরি। কামারদা, কলাগেছিয়ায় সেদিনের গুলি আর বোমার লড়াই এখনও আতঙ্ক জাগায় এখানকার মানুষের মনে। পরে সিপিএম নেতারা এলাকা ছেড়ে চলে যান। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের পর থেকে একাধিক বার সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়েছে বীরবন্দর এলাকা। বার বার বোমাবাজি এবং গুলি ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল আর বিজেপির বিরুদ্ধে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী রণজিৎ মণ্ডল ৪২ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে বিধায়ক হন। কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে জিতে সাংসদ হলেও খেজুরি বিধানসভা থেকে মাত্র হাজার ছয়েক ভোটের লিড পেয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী শিশির অধিকারী। মূলত সিপিএমের পুরো সমর্থন এবং তৃণমূলের একটা অংশ বিক্ষুব্ধ হয়ে বিজেপিকে সমর্থন করেছিল। এলাকায় গেরুয়া শিবিরের প্রভাব বাড়ার পর থেকেই শাসক দলের সঙ্গে একদা পুরনো কর্মীদের রেষারেষি বাড়তে শুরু করে। বার বার এমন অশান্তির জন্য এলাকায় বেআইনি অস্ত্র মজুতকেই দায়ী করেছে সিপিএম।

সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য হিমাংশু দাস বলেন, ‘‘যারা তৃণমূল থেকে বেরিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছে তাদের কাছেও অস্ত্র রয়েছে। তাই দু’পক্ষ মুখোমুখি হলে বোমা-গুলি চলছে। খেজুরিকে বদলাতে গেলে অবিলম্বে সমস্ত অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করতে হবে।’’

শাসক দলের জেলা পর্যায়ের এক নেতার কথায়, ‘‘বিনাশ কালে বুদ্ধিনাশ ঘটে। যাদের পতন আসন্ন হয় তারাই খেজুরিতে গুলি আর বোমার রাজনীতি করে। রাজনীতিকরা যে যাই বলুক, লকডাউনে রুটিরুজি হারানো মানুষ কিন্তু ভাত চায়।’’

Violence Khejuri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy