Advertisement
২৭ মার্চ ২০২৩

পুলিশের আর্জি মঞ্জুর, জারি রামবাবুর নামে পরোয়ানা

পুলিশের আর্জি মঞ্জুর করল মেদিনীপুর সিজেএম আদালত। খড়্গপুরের রেল মাফিয়া শ্রীনু নায়ডু হত্যা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হল আর এক ‘ডন’ বাসব রামবাবু ও তার শাগরেদ কে কাশী রাওয়ের বিরুদ্ধে।

বাসব রামবাবু। ফাইল চিত্র।

বাসব রামবাবু। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

পুলিশের আর্জি মঞ্জুর করল মেদিনীপুর সিজেএম আদালত। খড়্গপুরের রেল মাফিয়া শ্রীনু নায়ডু হত্যা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হল আর এক ‘ডন’ বাসব রামবাবু ও তার শাগরেদ কে কাশী রাওয়ের বিরুদ্ধে। এই দু’জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে চেয়ে সোমবার মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে আবেদন জানিয়েছিল পুলিশ। সোমবার শুনানির পরে মঙ্গলবারও আর এক দফা শুনানি হয়। তারপর ওই দু’জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন মঞ্জুর করে আদালত। পরোয়ানা কার্যকর হল কি না তা আগামী ৭ মার্চের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এই মামলার বিশেষ সরকারি আইনজীবী সমরকুমার নায়েক বলেন, “আদালতে রামবাবু-সহ দু’জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানানো হয়েছিল। আদালত আবেদন মঞ্জুর করেছে।” রামবাবু কি ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত? মামলার বিশেষ সরকারি আইনজীবী সমরকুমার নায়েক বলেন, “কয়েকজন সাক্ষীর বয়ানে ওর নাম উঠে এসেছে।”

Advertisement

এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিক খুনের মামলায় নাম জড়িয়েছে রামবাবুর খড়্গপুরের প্রয়াত সিপিআই সাংসদ নারায়ণ চৌবের দুই ছেলে মানস ও গৌতম খুনে অভিযুক্ত ছিল সে। গৌতম চৌবেকে খুনের ঘটনায় ২০০৩ সালে অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাকে। তারপর দীর্ঘ দিন জেলে ছিল রামবাবু। ২০১০ সালে সুপ্রিম কোর্টে জামিন মেলে। তারপর খড়্গপুরে অশান্তি ছড়ানোর ঘটনায় গত অক্টোবরে ফের গ্রেফতার হয় রামবাবু। শর্তসাপেক্ষে জামিনও পায়। তারপর থেকে সে খড়্গপুর ছাড়া। জানা গিয়েছে, রামবাবুর খোঁজে পুলিশের একটি দল এ বার ভিন্ রাজ্যে হানা দেবে।

এক সময়ে রেলশহরের মাফিয়া দুনিয়ার বেতাজ বাদশা ছিল এই রামবাবু। পরে সে জেলে থাকাকালীন সেই রাজ্যপাট শ্রীনুর হাতে যায়। এখন সেই শ্রীনু খুনেই নাম জড়াল রামবাবুর। এর আগে ২০১০ সালে রামবাবুর উপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল শ্রীনুর বিরুদ্ধে।

গত ১১ জানুয়ারি খড়্গপুরে তৃণমূলের পার্টি অফিসের মধ্যেই গুলিতে খুন হয় শ্রীনু ও তার এক সঙ্গী। প্রাথমিক তদন্তের পরে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ দাবি করেন, ‘কিছু পুরনো শত্রু এবং কিছু নতুন মাথা, এক জায়গায় হয়েই শ্রীনুকে খুন করেছে।” ঘটনার পিছনে ‘বড় মাথা’ রয়েছে বলেও দাবি ছিল তাঁর। এই ‘বড় মাথা’ কে তা নিয়ে কম চাপানউতোর হয়নি। তৃণমূলের তরফে এক সময় খড়্গপুরের বিধায়ক, বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দিকেও আঙুল তোলা হয়েছিল। এখন অবশ্য সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, ‘বড় মাথা’ আসলে রামবাবুই। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মামলায় একাধিকজনের জবানবন্দিতে রামবাবুর নাম উঠে এসেছে।

Advertisement

শ্রীনু হত্যা মামলায় এখনও পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, শ্রীনুকে খুনের পরিকল্পনা শুরু হয় মাস ছয়েক আগে থেকে। ২০১৬ সালের অগস্টে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের এক হোটেলে এক বৈঠক হয়। তাতে রামবাবুও ছিল। এ দিন আদালতে শুনানি চলাকালীন জোর তরজা হয়। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিরোধিতা করেন অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী মৃণাল চৌধুরী, চন্দন গুহরা। বিশেষ সরকারি আইনজীবীর পাশাপাশি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পক্ষে সওয়াল করেন সরকারি আইনজীবী সৈয়দ নাজিম হাবিব। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন মঞ্জুর করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.