ডিঙি চেপে পানীয় জল আনছে গ্রামবাসী। ঘাটালে কৌশিক সাঁতরার তোলা ছবি।
জলমগ্ন ঘাটালে জলের তোড়ে ভেসে গেলেন এক ব্যক্তি। পরে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। বুধবার ভোরে শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের কৃষ্ণনগরে শ্রীকান্ত মালিক (৩৮) তাঁর বা়ড়ির কাছেই তলিয়ে যান। খবর পেয়েই পুরসভার চেয়ারম্যান বিভাস ঘোষ, মহকুমাশাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধান ও বিধায়ক শঙ্কর দোলই ঘটনাস্থলে পৌঁছন। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা দু’ঘণ্টার চেষ্টায় ওই ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
সোমবার সকাল থেকেই শিলাবতী, ঝুমি ও কংসাবতী নদীতে জল বাড়তে শুরু করেছিল। ওই রাতে শিলাবতী উপচে জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল ঘাটাল পুরসভার ১২টি ওয়ার্ড-সহ ব্লকের দশটি পঞ্চায়েতের শতাধিক গ্রাম এবং চন্দ্রকোনা-১ ও ২ ব্লকের ছ’টি পঞ্চায়েতের শতাধিক মৌজা। বুধবার ফের জলছাড়ায় পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্লকগুলির প্রায় ৭০টি গ্রাম নতুন করে জলের দখলে গিয়েছে। জল ঢুকেছে ঘাটাল থানা চত্বরেও।
বুধবার ঘাটালের পরিস্থিতি দেখতে আসেন জেলাশাসক জগদীশ প্রসাদ মীনা। তিনি বলেন, ‘‘প্লাবিত সমস্ত এলাকাতেই আমরা শুকনো খাবার, ত্রিপল, পানীয় জলের প্যাকেট বিলি করছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই।” মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘মহকুমায় তিনটি ‘ফ্লাড শেল্টার’ খোলা হয়েছে। দুর্গত এলাকায় পর্যাপ্ত নৌকো দেওয়া হয়েছে। বিলি হয়েছে জলের পাউচ।’’
ঘাটাল শহর-সহ প্লাবিত এলাকার বেশিরভাগ নলকূপই জলের তলায়। ফলে পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জল বাড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে বহু এলাকায়। খড়ার ও ক্ষীরপাই পুরসভাতে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ক্ষীরপাই পুরসভার তরফে দু’নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু মানুষকে সরিয়ে অন্যত্র রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আচমকাই জলমগ্ন হয়ে পড়ায় সঙ্কটে প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ। গোটা মহকুমায় এখন পর্যন্ত প্রায় দেড়শোটি মাটির বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক বাড়ি। ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সড়কের উপর ক্ষীরপাই সংলগ্ন মনসাতলা চাতালটি এখনও জলমগ্ন। ফলে বুধবারও যানবাহন চলাচল বন্ধ। বন্যার জেরে ঘাটাল শহর-সহ গ্রাম গঞ্জের সমস্ত স্কুলে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। মহকুমাশাসকের আশ্বাস, ‘‘নতুন করে জল না-ছাড়লে আর সমস্যা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy