Advertisement
E-Paper

শ্রমিক বিক্ষোভে বের করা গেল না যন্ত্রপাতি

শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে যন্ত্রপাতি বের করতে এসেও ফিরে যেতে হল কলকাতা হাইকোর্টের নোটিস নিয়ে আসা এক লিকুইডেটরকে। ২০১০ সাল থেকে বন্ধ খড়্গপুরের রামস্বরূপ লৌহ উদ্যোগ কারখানা থেকে শুক্রবার যন্ত্রপাতি বের করতে এসেছিলেন ঠিকাদার সংস্থার লোকজন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৬ ০২:৪৩
খড়্গপুরে স্পঞ্জ আয়রন কারখানার সামনে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

খড়্গপুরে স্পঞ্জ আয়রন কারখানার সামনে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে যন্ত্রপাতি বের করতে এসেও ফিরে যেতে হল কলকাতা হাইকোর্টের নোটিস নিয়ে আসা এক লিকুইডেটরকে।

২০১০ সাল থেকে বন্ধ খড়্গপুরের রামস্বরূপ লৌহ উদ্যোগ কারখানা থেকে শুক্রবার যন্ত্রপাতি বের করতে এসেছিলেন ঠিকাদার সংস্থার লোকজন। তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন হাইকোর্টের লিকুইডেটর সন্দীপ চক্রবর্তী। তার আগেই কারাখানার গেটের বাইরে জমায়েত করেন বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের শ্রমিক-কর্মীরা। বন্ধ কারখানা না খুলে কেন যন্ত্রপাতি বের করা হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলে শুরু হয় অবস্থান-বিক্ষোভ। দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ চলায় আসে পুলিশ। দুপুরে হাইকোর্টের লিকুইডেটর এলেও শ্রমিকেরা যন্ত্রপাতি সরিয়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে সরব হন। পিছু হটেন ওই লিকুইডেটর। লিকুইডেটর সন্দীপবাবু বলেন, “এর আগেও তিনবার এসে আমাকে ফিরে যেতে হয়েছে। শ্রমিকেরা রাজি না হলে আমার কিছু করার নেই। আমি এ বার হাইকোর্টে বিষয়টি জানাব।’’

খড়্গপুর নিমপুরা শিল্পতালুকের এই স্পঞ্জ আয়রনের কারখানায় এক সময়ে জেলার বহু শ্রমিক কাজ করতেন। কিন্তু ২০১০ সাল থেকে এখানে উৎপাদন বন্ধ। তবে রোজ শ্রমিক-কর্মীরা হাজিরা দিচ্ছেন। ৫৭ মাস হাজিরা দিয়েও ১,৭৭৩ জন শ্রমিক বেতন পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যে প্রায় কয়েকশো কোটি টাকা দেনার দায়ে কারখানার মালিকানা কেড়ে নিয়েছেন একাধিক ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। এখন ওই ব্যাঙ্কগুলির পক্ষ থেকে অ্যাসেট রিকনস্ট্রাকশন কোম্পানি ইন্ডিয়া লিমিটেড (আরসিল)-কে কারখানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গত ৫ ডিসেম্বর কারখানার গেটে আরসিলের পক্ষ থেকে এই সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শ্রমিকদের দাবি, এর পরে গত ২৭ডিসেম্বর আরসিলের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের সঙ্গে বসে ওই কারখানা চালু করার কথা বলা হয়েছিল। আশায় বুক বেঁধেছিলেন শ্রমিকেরা। শ্রম দফতরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সেই বৈঠক স্থগিত হয়ে যাওয়ায় শ্রমিকেরা ক্ষোভে ফুঁসছে।

এমন পরিস্থিতিতে এ দিন কারখানা থেকে যন্ত্রপাতি সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার খবরে চটে যান শ্রমিক-কর্মীরা। সিপিআইয়ের শ্রমিক সংগঠন এআইটিইউসি, তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র পক্ষ থেকে শ্রমিকদের নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। এআইটিইউসি নেতা বিপ্লব ভট্ট বলেন, “রাজ্য সরকারের উচিত জমি ফিরিয়ে নিয়ে কারখানা খোলার ব্যবস্থা করা। এই সময়ে কারখানা থেকে এ ভাবে যন্ত্রপাতি বের করা হলে শ্রমিকদের বিপদ অনিবার্য।’’ একই সুরে আইএনটিটিইউসি নেতা দেবাশিস চৌধুরী বলেন, “ঠিক হয়েছিল কারখানা না খোলা পর্যন্ত যন্ত্রপাতি বের করা যাবে না। তাই আমাদের এই বিক্ষোভ।’’

কারখানা চালু থাকাকালীনই উৎপাদনের বরাত নেয় ‘আইভিআরসিএল’। পরে এই সংস্থার অধীনে কাজে আসে ‘এটিডব্লিউ’ নামে আর একটি সংস্থা। কারখানা বন্ধের পরে এটিডব্লিউ নামে ওই সংস্থা ‘সিমরন’ নামে একটি সংস্থাকে তাঁদের যন্ত্রপাতি বিক্রি করে। তবে যন্ত্রপাতি বের করতে গিয়ে বারবার হোঁচট খেতে হচ্ছে ওই সংস্থাকে। কারখানার শ্রমিক সুকান্ত বেরা, উত্তম পালদের ক্ষোভ, “কারখানা খোলা হবে আশায় বসে রয়েছি। অথচ কৌশলে যন্ত্রপাতি বের করে নেওয়ার চক্রান্ত করছে কিছু দালাল। প্রাণ থাকতে কারখানা থেকে যন্ত্রপাতি বের করতে দেব না।’’

Police workers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy