Advertisement
০৬ মে ২০২৪
haldia port

কর্মবিরতি উঠলেও প্রশ্নে সংগঠন

শ্রমিকদের টানা ৩ দিন কর্মবিরতির জেরে বন্দরের কাজ পণ্ড হওয়া নিয়ে শ্রমিক সংগঠনের বিশেষ করে শাসক দলের শ্রমিক সংগঠনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
হলদিয়া শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২১ ০৬:০৪
Share: Save:

অবশেষে সাময়িক মিটল শ্রমিক অসন্তোষ। লাগাতার ৩ দিন কর্মবিরতির পরে রবিবার রাতে শ্রমিকেরা তা তুলে নেওয়ায় কাজ শুরু হল হলদিয়া বন্দরের ৩টি বার্থে। বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার হলদিয়া বন্দরে ৪টি জাহাজ ঢুকেছে ও ৫টি জাহাজ বন্দর ছেড়ে রওনা হয়েছে। বন্দরের অন্যান্য কাজকর্মও স্বাভাবিক ছিল।

তবে শ্রমিকদের টানা ৩ দিন কর্মবিরতির জেরে বন্দরের কাজ পণ্ড হওয়া নিয়ে শ্রমিক সংগঠনের বিশেষ করে শাসক দলের শ্রমিক সংগঠনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যেখানে এক দিনও কর্ম দিবস নষ্ট না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে বন্দরের শ্রমিকরা কী ভাবে তিন দিন ধরে কর্মবিরতি করলেন সে বিষয়ে শাসক দলের শ্রমিক সংগঠনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

কর্মী অসন্তোষের জেরে হলদিয়া বন্দরের ৩টি বার্থে পণ্য খালাসের কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। ঠিকাদার সংস্থা এবং কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থার দ্বৈরথে ১৭ জুন রাত থেকে কাজ বন্ধ হয়ে যায় ওই ৩টি বার্থে। পণ্য খালাস না হওয়ায় বার্থেই আটকে পড়ে ৩টি জাহাজ। পিএফ, ইএসআই সংক্রান্ত কাগজপত্র সংস্থার পক্ষ থেকে জমা না পড়ার দাবি করেছিলেন শ্রমিকরা। যদিও সংস্থার তরফে বলা হয়, পিএফ এবং ইএসআই-এর টাকা ঠিকাদার সংস্থাকে আগেই দেওয়া হয়েছে। তারাই সরকারি দফতরে সেই সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা দেয়নি। ফলে শ্রমিকরা পিএফ, ইএসআই-এর
সুযোগ-সুবিধা পাননি।

শেষ পর্যন্ত কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে রবিবার রাতে কাজে যোগ দেন শ্রমিকরা। কিন্তু তিন দিন কাজ বন্ধ থাকার পরেও তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না কেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে শ্রমিক মহলে। সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংস্থার এক আধিকারিকের দাবি, আসলে শ্রমিকদের সঙ্গে স্থানীয় এক তৃণমূল যুব নেতার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। তিনি উস্কানি দিয়ে কাজ বন্ধ করে দিচ্ছেন। যদিও শ্রমিকদের একাংশের দাবি, যোগ্য নেতৃত্বের অভাবেই শ্রমিক সংগঠন উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আইএনটিটিইউসি সভাপতি দিব্যেন্দু রায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ। কার্যকরী সভাপতি মিলন মণ্ডল সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হননি। ফলে শ্রমিক নেতা বলতে তেমন আর কেউ নেই।

২০১৬ ও ২০২১ সালে দু’টি বিধানসভা নির্বাচনেই তৃণমূল হলদিয়ায় হেরে গিয়েছে। হলদিয়া বিধানসভার সিংহভাগই ভোটারও তাঁরা ও তাঁদের পরিবার। শ্রমিক মহলের দাবি, রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পর হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে যিনিই শ্রমিক নেতা হিসেবে উঠে এসেছেন দেখা গিয়েছে তিনি ঠিকাদার হয়ে গিয়ে‌ছেন। ফলে নেতা ও ঠিকাদারের ব্যবধান ঘুচে গিয়েছে। যে নেতা যে কারখানায় দায়িত্ব পান বকলমে তিনি সেই কারখানার ঠিকাদার হয়ে যান। ফলে শ্রমিক শোষণও অব্যাহত থাকে।ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হন শ্রমিকেরা। অভিযোগ জানাতে গেলেও সেই ঠিকাদার শ্রমিক নেতার কাছেই যেতে হয়। ফলে সমস্যা আর মেটে না। এই অবস্থায় শ্রমিকদের একাংশের দাবি, রাজ্য আইএনটিটিইউসি এবং শ্রমিক নেতৃত্ব ঠিক করুক শ্রমিক নেতা যাঁরা হবেন, তাঁদের নামে-বেনামে কোনও ঠিকাদারি ব্যবসা থাকা চলবে না। যদিও এই বিষয়ে রাজ্য আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC haldia port
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE