এক সময়ে দুর্গমতার সুযোগ নিয়ে জঙ্গলমহলে প্রভাব বাড়িয়েছিল মাওবাদীরা। এবার মাওবাদীদের এক সময়ের ধাত্রীভূমি বেলপাহাড়ি ব্লকের সিংহভাগ এলাকাগুলি পিচ রাস্তার মাধ্যমে জুড়তে চলেছে। বুধবার বেলপাহাড়ি ব্লক অফিসের সভাঘরে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর এ কথা জানিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি। বেলপাহাড়ির পাশাপাশি, গোয়ালতোড় ব্লকেরও সিংহভাগ এলাকায় পিচ রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ দিন বেলপাহাড়ি ব্লক অফিসের সভাঘরে বিডিও সহ-ব্লক প্রশাসনের আধিকারিক ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, বিভিন্ন কর্মাধ্যক্ষ ও দশটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন শৈবালবাবু। ছিলেন জেলার এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা, মেদিনীপুর ডিভিশন-১) পার্থসারথি শীল। জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি বলেন, “বেলপাহাড়ি ও গোয়ালতোড় ব্লকের যে সব মৌজায় একশোর বেশি বাসিন্দা আছেন, ওই সব এলাকার মধ্যে পিচ রাস্তার পরিকল্পনা রয়েছে।”
রাজ্যে ক্ষমতার পালা বদলের পরে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে জঙ্গলমহলে একাধিক রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু তা সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়। গত জানুয়ারি মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমলাশোলে এসে রাজ্যব্যাপী পঞ্চায়েত স্তরে মোরাম রাস্তার সঙ্গে সংযোগকারী ঢালাই রাস্তা তৈরির কাজের সূচনা করেছিলেন। তার পরও রাজ্য প্রশাসনের একাংশ মনে করেন, এক সময়ের মাওবাদী প্রভাবিত এলাকাগুলির যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটানো প্রয়োজন। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার মাধ্যমে বেলপাহাড়ি ও গোয়ালতোড় ব্লকের দুর্গম এলাকাগুলিতে পিচ রাস্তা করার জন্য জেলা পরিষদের তরফে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ড রাজ্য থেকে আসা মাওবাদীরা বেলপাহাড়ির দুর্গম এলাকাগুলিতে ফের প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছে। পুলিশ-প্রশাসনের একটি মহলের বক্তব্য, যত দ্রুত সম্ভব দুর্গম এলাকাগুলিতে উপযুক্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রয়োজন।
তবে প্রশাসনিক তথ্য বলছে, ২০১২-১৩ অর্থবর্ষে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনায় ১,৫১০ কিলোমিটার পিচ রাস্তা তৈরির জন্য ২৮৯টি টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। ৮৯টি কাজের ওয়ার্কঅর্ডার হয়েছিল। সরকারি দর না-পসন্দ হওয়ায় ঠিকাদারের বাকি দু’শোটি টেন্ডারে কেউই যোগ দেয়নি বলে সূত্রের খবর। পরে ন্যাশন্যাল বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (এনবিসিসি) নামে একটি সংস্থাকে ২০১২-১৩ ও ১০১৩-১৪ বর্ষের বকেয়া রাস্তার কাজগুলি শেষ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ফলে, ফের নতুন রাস্তার জন্য সমীক্ষা হওয়ার কত পরে সেগুলি বাস্তবায়িত হবে, প্রশ্নও উঠছে। শৈবালবাবুর আশ্বাস, “আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy