Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
চিন্তায় খোদ খাদ্য দফতরই

কবে মিলবে ডিজিটাল রেশন কার্ড, সংশয়

রেশন কার্ডের আধুনিকীকরণ করতে পুরানো রেশন কার্ডের পরিবর্তে ‘ডিজিটাল রেশন কার্ড’ তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছিল খাদ্য দফতর। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে গত বছরে রাজ্যবাসীর থেকে কার্ড সংক্রান্ত পারিবারিক নানা তথ্য সংগ্রহের কাজও শুরু হয়েছিল। দেখভালের দায়িত্বে ছিল প্রথম সারির একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা। কিন্তু, বছর ঘুরলেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এখনও সেই কাজ অসম্পূর্ণই থেকে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে।

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০০:০০
Share: Save:

রেশন কার্ডের আধুনিকীকরণ করতে পুরানো রেশন কার্ডের পরিবর্তে ‘ডিজিটাল রেশন কার্ড’ তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছিল খাদ্য দফতর। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে গত বছরে রাজ্যবাসীর থেকে কার্ড সংক্রান্ত পারিবারিক নানা তথ্য সংগ্রহের কাজও শুরু হয়েছিল। দেখভালের দায়িত্বে ছিল প্রথম সারির একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা। কিন্তু, বছর ঘুরলেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এখনও সেই কাজ অসম্পূর্ণই থেকে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে।

জেলা খাদ্য দফতরের নিয়ামক রণজিত্‌ গোস্বামী বলেন, “ডিজিটাল রেশন কার্ড তৈরির জন্য জেলার প্রায় ৯২ শতাংশ বাসিন্দার কার্ড সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। আর ৮ শতাংশ বাসিন্দার রেশন কার্ড সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ বাকি।” তবে তথ্য সংগ্রহের কাজ যেহেতু বেসরকারি ওই সংস্থার মাধ্যমে হচ্ছে তাই, সব কাজ শেষে কবে সাধারণ মানুষের হাতে ডিজিটাল রেশন কার্ড পৌঁছবে তা নির্দিষ্ট ভাবে জেলা খাদ্য দফতর জানাতে পারেনি। রণজিত্‌বাবুর অবশ্য আশা, বাকি কাজও দ্রুত শেষ হবে।

পূর্ব মেদিনীপুরে বর্তমানে রেশন কার্ডের সংখ্যা প্রায় ৫০ লক্ষ ৬৯ হাজার। খাদ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, এঁদের ডিজিটাল রেশন কার্ড তৈরিতে ২০১৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে কার্ড সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়। এই কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার কর্মীরা জেলার প্রতিটি এলাকায় পূর্ব নির্ধারিত দিনে রেশন দোকান সংলগ্ন একটি জায়গায় কম্পিউটার নিয়ে বসে বাসিন্দাদের রেশন কার্ড দেখে তাঁদের নাম, ঠিকানা, বয়স সংক্রান্ত তথ্যের প্রয়োজনীয় সংশোধনের কাজ করছিল। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত জেলাজুড়ে রেশন কার্ড সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের কাজ চলে।

খাদ্য দফতরের হিসেবে এ ভাবে ৯১.৮ শতাংশ রেশন কার্ডের তথ্য সংগ্রহ হয়েছে। কিন্তু সম্পূর্ণ শেষ না হওয়ায় বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছেন সাধারণ বাসিন্দা থেকে রেশন ডিলাররা। কবে ওই নতুন কার্ড হাতে মিলবে, তা নিয়ে স্পষ্ট আশ্বাসও দিতে পারছে না খাদ্য দফতর। ওয়েস্ট বেঙ্গল এম আর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনে জেলা সম্পাদক মাধব পাঁজার অভিযোগ, “এক বছরেরও বেশি আগে ডিজিটাল কার্ডের তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়েছিল। খাদ্য দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী, জেলার প্রতিটি এলাকায় রেশন দোকানদার ওই কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার কর্মীদের কাজে সব রকম সহযোগিতা করেছিল। কিন্তু এখনও জেলার ২৫টি ব্লকের সবক’টিতেই অনেক বাসিন্দার তথ্য সংগ্রহ বাকি।”

রেশন ডিলাররা জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অধিকাংশ বাসিন্দা রেশন দোকানে এসে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার কর্মীদের কাছে তাঁদের রেশন কার্ডের বিভিন্ন তথ্য নথিভুক্ত করলেও বেশ কিছু পরিবার নানা কারণে ওই সময়ের মধ্যে আসতে পারেননি। ফলে তাঁদের তথ্য সংগ্রহের কাজ বাকি থেকে গিয়েছে। তবে এই কাজ সম্পূর্ণ করতে না পারলে ভবিষ্যতে ওই সব বাসিন্দাদের ডিজিটাল রেশন কার্ড পেতে তো বটেই, রেশন ডিলারদেরও বিভিন্ন অসুবিধায় পড়তে হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

ডিজিটাল কার্ড নিয়ে এই সমস্যার কথা মেনে জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিমান পণ্ডা বলেন, “তথ্য সংগ্রহের কাজ কয়েক মাস বন্ধ থাকায় আমরাও উদ্বিগ্ন। ওই কাজ দ্রুত করতে প্রথমে ব্লক স্তরে ও পরে মহকুমা খাদ্য নিয়ামকের অফিসে শিবির করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

digital ration card ananda mondal tamluk
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE