Advertisement
০৭ মে ২০২৪

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, পুলিশ পাহারায় কাজে পঞ্চায়েত প্রধান

দলীয় কোন্দলের জেরে নির্বাচিত তৃণমূল প্রধানকে পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকে কাজ সারতে হল পুলিশি ঘেরাটোপে! গড়বেতা ৩ ব্লকের কড়সা পঞ্চায়েতের শুক্রবারের ঘটনা। গণ্ডগোলের আশঙ্কায় সকাল থেকে পঞ্চায়েত চত্ত্বরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সকাল দশটা নাগাদ ওই পঞ্চায়েতের সদ্য নির্বাচিত প্রধান ইদ্রিশ আলি খান অফিসে ঢোকেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৪ ০১:২১
Share: Save:

দলীয় কোন্দলের জেরে নির্বাচিত তৃণমূল প্রধানকে পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকে কাজ সারতে হল পুলিশি ঘেরাটোপে! গড়বেতা ৩ ব্লকের কড়সা পঞ্চায়েতের শুক্রবারের ঘটনা। গণ্ডগোলের আশঙ্কায় সকাল থেকে পঞ্চায়েত চত্ত্বরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সকাল দশটা নাগাদ ওই পঞ্চায়েতের সদ্য নির্বাচিত প্রধান ইদ্রিশ আলি খান অফিসে ঢোকেন। কর্মীদের সঙ্গে আলাপচারিতাও, পরে কাজও করেন। গোটা সময়টাই পুলিশ উপস্থিত ছিল। বিডিও সুশোভন মণ্ডল বলেন, “প্রধানের লিখিত আর্জি মতোই পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।”

ওই পঞ্চায়েত ও প্রশাসন সূত্রের খবর, নির্বাচনের পর থেকেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্য প্রধান নিয়ে পঞ্চায়েতে জটিলতা হয়। কোন্দলের জেরেই প্রথম প্রধান কবিরুল ইসলামকে অফিসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। জোর করে ঢুকতে গেলে দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে তাঁকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল। তা সত্ত্বেও কবিরুল তাঁর সঙ্গীদের সাহায্যে কাজ করতেন। তৃণমূলেরই একটি সূত্রের খবর, ধীরে ধীরে তাঁর বিরোধী গোষ্ঠী শক্তিশালী হলে কবিরুল বেপাত্তা হয়। উল্লেখ্য, ঘটনাটি প্রাক্তন প্রধান কবিরুল ইসলাম মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুকুল রায়-সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছিলেন। পরে দলীয় স্তরে আলোচনাও হয়।

এ দিকে, মাস ছ’য়েকের বেশি সময় প্রধান অফিসে না আসায় ব্লক প্রশাসন উপ-প্রধান অর্জুন টুডুকেই প্রধানের দায়িত্ব দিয়ে কাজ চালানোর অনুমতি দেন। কিন্তু, তার পরেও প্রধান কবিরুল ইসলাম অফিসে না আসায় সেপ্টেম্বর মাসের গোড়ায় কবিরুলের বিরুদ্ধে অনাস্থা সকল সদস্যেরা। উল্লেখ্য, কড়সা পঞ্চায়েতে কবিরুল ইসলাম-সহ ১৬ জন সদস্যের মধ্যে ১৫ জন সদস্যই তাতে সম্মতি দেন। অনাস্থা প্রস্তাব আনার পর বিডিও গত ২৬ সেপ্টেম্বর ওই পঞ্চয়েতে প্রধান নির্বাচনের দিন ঠিক হয়। দলীয় ভাবে এলাকার নেতৃত্ব এবং সব সদস্যের মতামত নিয়ে ইব্রাহিম খানকে প্রধান বাছা হয়। দলেরই এক ব্লক নেতার কথায়, “কবিরুল এলাকায় না থাকলেও তাঁর অনুগামী একাধিক সদস্য এখনও রয়েছেন। ফলে প্রধান নির্বাচনের দিন শেষ পর্যন্ত ভোটাভুটি হয়। তাতে কবিরুলের অনুগামী ইদ্রিশ আলি খান প্রধান নির্বাচিত হন। তাই ফের ইদ্রিশকে ঢুকতে বাধা দেয় দলেরই একাংশ।”

ইদ্রিশ প্রধান হওয়ার পর থেকেই ফের এলাকায় কোন্দল শুরু হয়। তাঁকেও পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। শেষে শুক্রবার পুলিশ দিয়ে প্রধানকে অফিসে ঢুকতে হয়। এমন ঘটনায় পঞ্চায়েতের কাজ কতটা সুষ্ঠু ভাবে হবে, তা নিয়ে সন্দিহান তৃণমূলের একাংশ কর্মীরাই। তবে, উপ-পুরপ্রধান এ দিন অনুপস্থিত থাকায় প্রথা মাফিক ক্ষমতা হস্তান্তর হয়নি।

নতুন প্রধানকে অফিসে ঢুকতে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে ওই ব্লকের সভাপতি নিমাই বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি নিয়ে দলের মধ্যে একাধিক বার আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু দলেরই একাংশ কর্মী এতে যুক্ত রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।” এ দিন বহু চেষ্ঠা করেও কবিরুলকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ghatal group conflict panchayat pradhan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE