Advertisement
E-Paper

জোনাল সম্পাদক নন, এ বার অনুজ শুধুই সদস্য

নেতাই-কাণ্ডে অভিযুক্ত অনুজ পাণ্ডেকে বিনপুর জোনাল সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দিল সিপিএম। তবে অনুজবাবু-সহ ওই ঘটনার সাত অভিযুক্ত জেলবন্দি নেতা-নেত্রীকে বিনপুর জোনাল কমিটির সদস্য পদে পুনর্নির্বাচিত করা হয়েছে। রবিবার লালগড়ের ধরমপুরে দলের বিনপুর জোনাল কমিটির সম্মেলনে সম্পাদক পদে রদবদল ঘটিয়ে সুশান্ত কুণ্ডুকে জোনাল সম্পাদক পদে নির্বাচিত করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৩৯

নেতাই-কাণ্ডে অভিযুক্ত অনুজ পাণ্ডেকে বিনপুর জোনাল সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দিল সিপিএম। তবে অনুজবাবু-সহ ওই ঘটনার সাত অভিযুক্ত জেলবন্দি নেতা-নেত্রীকে বিনপুর জোনাল কমিটির সদস্য পদে পুনর্নির্বাচিত করা হয়েছে।

রবিবার লালগড়ের ধরমপুরে দলের বিনপুর জোনাল কমিটির সম্মেলনে সম্পাদক পদে রদবদল ঘটিয়ে সুশান্ত কুণ্ডুকে জোনাল সম্পাদক পদে নির্বাচিত করা হয়েছে। বস্তুত পক্ষে, নেতাইকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত অনুজবাবুর অন্তর্ধান-পর্বে ২০১১ সালের দলীয় সম্মেলনে সুশান্তবাবুকে জোনাল কমিটির কাজকর্ম পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এ বার তিনি পুরোদস্তুর জোনাল সম্পাদক হলেন। এ দিন সম্মেলনে অনুজবাবুর পাশাপাশি নেতাই কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত অনুজবাবুর সম্পর্কিত ভাই ডালিম পাণ্ডে, জয়দেব গিরি, তপন দে, চণ্ডী করণ, শেখ খলিলুদ্দিন ও ফুল্লরা মণ্ডলের মতো জেলবন্দি সাত নেতা-নেত্রীদের জোনাল কমিটিতে রাখা হয়েছে।

জেলবন্দি সাত নেতা-নেত্রীকে জোনাল কমিটিতে রাখার ব্যাপারে সিপিএম সূত্রের ব্যাখ্যা, নেতাই মামলাটি মেদিনীপুরের বিশেষ দায়রা আদালতে বিচারাধীন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এখনও অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। ফলে তাঁদের কমিটিতে না রাখলে নিচু তলার কর্মীদের মধ্যে ভুল বার্তা যেত। তা হলে অনুজবাবুকে সম্পাদক পদ থেকে সরানো হল কেন? এ প্রসঙ্গে মুখ খুলতে চাননি ওই জোনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সত্যেন মাইতি। তাঁর কথায়, “পার্টির নিয়ম মেনে সদস্যদের নির্বাচিত করা হয়েছে। সম্মেলনে আগত প্রতিনিধিরা সদস্যদের নির্বাচিত করেছেন।”

তবে সিপিএমেরই একটি সূত্রের খবর, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দলকে ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে উপযুক্ত নেতৃত্ব প্রয়োজন। অনুজবাবু ‘যোগ্য’ হলেও তিনি জেলে রয়েছেন। তাঁর পক্ষে দলের সভা-মিছিল-কর্মসূচি কোনও কিছুই পরিচালনা করা সম্ভব নয়। ফলে, বিনপুর-লালগড়ে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সম্পাদক পদে রদবদল জরুরি ছিল।

এ দিন সকালে ধরমপুরে সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ে ওই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ৯৫ জন দলীয় প্রতিনিধি। তাঁরাই জোনাল কমিটির সদস্যদের নির্বাচিত করেন। আগে জোনাল কমিটির সদস্য ছিলেন ১৩ জন। এ বার নব নির্বাচিত জোনাল কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৭ জন। পুরনো কমিটির ১২ জন সদস্য নতুন কমিটিতে রয়েছেন। ‘নিষ্ক্রিয়তার’ অভিযোগে পুরনো কমিটির এক মহিলা সদস্যাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। নব নির্বাচিত জোনাল কমিটিতে নতুন মুখ পাঁচ জন। জোনাল কমিটির ১৭ জন সদস্য ছাড়াও বাড়তি আরও ৬ জন সদস্যকে ‘সম্মানীয়’ ও ‘আমন্ত্রিত’ হিসেবে রাখা হয়েছে।

দলীয় সূত্রের ব্যাখ্যা, নতুন জোনাল কমিটির ১৭ জন সদস্যের মধ্যে অনুজবাবু-সহ সাত জন সদস্য জেলে রয়েছেন। ফলে, জোনাল কমিটির কাজকর্মে ‘গতি’ আনার জন্য বাড়তি ৬ জন ‘সম্মানীয়’ ও ‘আমন্ত্রিত’ সদস্যকে নেওয়া হয়েছে। এই ৬ সদস্যের অবশ্য দলীয় ভোটাধিকার থাকবে না। তবে তাঁরা জোনাল কমিটির বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রস্তাব ও পরামর্শ দিতে পারবেন।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে প্রথমবার বিনপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক হন অনুজবাবু। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি লালগড়ের নেতাই গ্রামে দলের সশস্ত্র শিবির থেকে গুলি চালনার অভিযোগ ওঠে সিপিএমের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। কিছু দিনের মধ্যেই সিআইডি-র হাত থেকে মামলার তদন্তভার নেয় সিবিআই। গ্রেফতার হন ১২ জন নেতা-কর্মী। কিন্তু অনুজবাবু ও দলীয় কর্মী রথীন দণ্ডপাট (অভিযোগ, নেতাই গ্রামে রথীনবাবুর বাড়িতেই সিপিএমের সশস্ত্র শিবিরটি ছিল)-সহ অভিযুক্ত বাকি ৮ সিপিএম নেতা-নেত্রী ফেরার হয়ে যান। চলতি বছরের গোড়ায় অনুজবাবু-সহ ৭ জনকে সিআইডি গ্রেফতার করে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয়। পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জেলে যান ফুল্লরা মণ্ডল। অনুজবাবু পলাতক থাকার সময় ২০১১ সালে বিনপুর জোনাল কমিটির সম্মেলনে তাঁকে দ্বিতীয়বার সম্পাদক পদে পুর্ননির্বাচিত করা হয়েছিল। তিন বছর আগের ওই সম্মেলনে পলাতক অবস্থায় ডালিম পাণ্ডে, জয়দেব গিরি, তপন দে, চণ্ডী করণ, শেখ খলিলুদ্দিন ও ফুল্লরা মণ্ডলরাও জোনাল সদস্য নির্বাচিত হন।

jhargram anuj pandey lalgarh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy