বৃষ্টির জল ধরে রাখা, ভূমিক্ষয় রোধ, উর্বরতা বজায় রাখা-সহ নানা কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে সুসংহত জল বিভাজিকা ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের। পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর কিংবা পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় চালু রয়েছে এই প্রকল্প। এ বার পূর্ব মেদিনীপুরেরও বিভিন্ন ব্লকে মোট ৮টি প্রকল্পের অনুমোদন মিলল। এ জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৪১ কোটি টাকা।
জেলা পরিষদের কৃষি সেচ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ বুদ্ধদেব ভৌমিক বলেন, “এই প্রকল্পের মাধ্যমে উর্বর জমির ক্ষয় রোধ করার পাশাপাশি শীতকালে বোরো চাষ, সবজি চাষ, ডাল শস্য, তৈলবীজ, পশুপালন ও মাছ চাষ প্রভৃতি করে প্রকল্প এলাকার বাসিন্দাদের জীবিকার ব্যবস্থা করা হবে।” জেলায় দ্রুত এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানান।
কৃষি সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ষাকালে বৃষ্টির জল উঁচু এলাকা থেকে নিচু এলাকায় নামার ফলে ভূমিক্ষয় হয়। পাশাপাশি ক্ষতি হয় মাটির উর্বর অংশের। তা ঠেকাতে এবং জীবন-জীবিকার সুরক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ইন্টিগ্রেটেড ওয়াটারশেড ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট’ চালু রয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে এক দিকে যেমন ভূমিক্ষয়, উর্বরতা রোধ করা যাবে তেমনি জলাশয় খনন, খাল সংস্কারের ফলে বৃষ্টির জল ধরে রাখা যাবে। সেই জল দিয়েই এলাকার বাসিন্দারা ধান, সবজি, ফলের চাষ, মাছচাষ ইত্যাদি করতে পারবেন। ইতিমধ্যেই রাজ্যের পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় এই প্রকল্পের কাজ চলছে।
প্রাথমিক ভাবে চলতি বছরে এই প্রকল্প রূপায়ণের জন্য জেলার বিভিন্ন ব্লকের নির্দিষ্ট এলাকা চিহ্নিত করে মোট ১৮টি প্রকল্প অনুমোদনের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে জেলায় ৮টি প্রকল্পের অনুমোদন মিলেছে। জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরে অনুমোদিত ৮টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে এগরা ১ ব্লকের পাঁচরোল ওয়াটার শেড ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট, এগরা ২ ব্লকের চাতলা, কাঁথি ১ ব্লকের আমতলিয়া, কাঁথি ২ ব্লকের জাজোয়া, কাঁথি ৩ ব্লকের সোফিয়াবাদ, নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের মহম্মদপুর, ভগবানপুর ২ ব্লকের জুখিয়া ও পটাশপুর ২ ব্লকের খাড় ওয়াটার শেড ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট। প্রকল্প এলাকার পরিমাণ গড়ে সাড়ে তিন হাজার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার হেক্টর।
প্রকল্পগুলি রূপায়ণের জন্য মোট ৪১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার দেবে ৩৭ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। বাকি ৪ কোটি ২০ লক্ষ টাকা দেবে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘সয়েল অ্যান্ড ল্যান্ড ইউজ সার্ভে অফ ইন্ডিয়া’ চিহ্নিত প্রকল্প এলাকায় সমীক্ষা করে বিভিন্ন পরিকল্পনা রূপায়ণে সাহায্য করবে। কৃষি ও সেচ দফতর, কৃষি, উদ্যানপালন ও প্রাণিসম্পদ প্রভৃতি দফতর এই প্রকল্প রূপায়ণের মূল কাজটি করবে।
কৃষি ও সেচ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ বুদ্ধদেব ভৌমিক জানান, জল বিভাজিকা প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত হবে যে সব এলাকায়, সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করে সব কাজ করা হবে। বুদ্ধদেববাবুর কথায়, “প্রস্তাবিত বাকি ১০টি ওয়াটার শেড ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প অনুমোদনের জন্য ফের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy