Advertisement
১৯ মে ২০২৪

নিখোঁজ মূক-বধিরের সন্ধান

তারকেশ্বরের মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার পথে হারিয়ে যাওয়া মূক-বধির এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পরিবারের হাতে ফিরিয়ে দিল পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের সাঁকরাইলের দহিপাল গ্রামের বাসিন্দা শশাঙ্ক পাত্র নামে বছর পয়তাল্লিশের ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছিল পাঁশকুড়া থানার পুলিশ। এরপর ওই ব্যক্তির পরিবারের সন্ধান পাওয়ার পর শনিবার তমলুক আদালতের নির্দেশে তাঁকে পরিবারের সদস্যরা ফিরিয়ে নিয়ে যান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৪ ০০:৩৮
Share: Save:

তারকেশ্বরের মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার পথে হারিয়ে যাওয়া মূক-বধির এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পরিবারের হাতে ফিরিয়ে দিল পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের সাঁকরাইলের দহিপাল গ্রামের বাসিন্দা শশাঙ্ক পাত্র নামে বছর পয়তাল্লিশের ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছিল পাঁশকুড়া থানার পুলিশ। এরপর ওই ব্যক্তির পরিবারের সন্ধান পাওয়ার পর শনিবার তমলুক আদালতের নির্দেশে তাঁকে পরিবারের সদস্যরা ফিরিয়ে নিয়ে যান।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের সাঁকরাইল থানার দহিপাল গ্রামের বাসিন্দা শশাঙ্ক পাত্র। তাঁর পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিন ভাইই মূক ও বধির। গত ৯ আগস্ট সকালে শশাঙ্কবাবু ও তাঁর স্ত্রী-সহ গ্রামের ১৩ জন প্রতিবেশী তারকেশ্বরে শিব পুজো দিতে গিয়েছিলেন। সেখানে যাওয়ার পথেই নিরুদ্দেশ হয়ে যান শশাঙ্কবাবু। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তারকেশ্বরে খোঁজ মেলেনি শশাঙ্কবাবুর। তারকেশ্বর থেকে বাড়ি ফিরে সাঁকরাইল থানায় তাঁর নামে নিখোঁজ ডায়েরিও করেন পরিবারের সদস্যরা।

গত ১৯ অগস্ট রাতে পাঁশকুড়ার পুরাতন বাজার লাগোয়া দক্ষিণ গোপালপুর গ্রামে একজনকে সন্দেহজনকভাবে ঘুরতে দেখে স্থানীয় এক বাসিন্দা পুলিশকে জানান। রাতেই পুলিশ ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। মূক ও বধির ওই ব্যক্তি জানান, তাঁর নাম শশাঙ্ক পাত্র। তবে কোনও ঠিকানা তিনি জানাতে পারেননি। ওই ব্যক্তিকে তমলুক আদালতে তোলা হলে বিচারকের নির্দেশে ওই ব্যক্তির পরিচয় জানার চেষ্টা চলছিল। ডেবরার একটি হোমে নিয়ে গিয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের দিয়ে তাঁর পরিচয় জানার চেষ্টাও করা হয়।

শুক্রবার সকালে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে পাঁশকুড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে কর্মরত দাহিপাল গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মীকান্ত পাত্র নামে এক স্বাস্থ্যকর্মী তাঁকে চিনতে পারেন। লক্ষ্মীকান্তবাবু গ্রামের এক বাসিন্দাকে ফোন করে শশাঙ্কের হারিয়ে যাওয়ার ঘটনার কথা জানতে পারেন। এরপরই পরিবার ও প্রতিবেশীরা পাঁশকুড়া থানায় এসে শশাঙ্কবাবুকে শনাক্ত করেন।

পুলিশ শনিবার শশাঙ্কবাবুকে তমলুক আদালতে তুললে তাঁর স্ত্রী তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন করেন। শুনিানর পর বিচারক শশাঙ্কবাবুকে পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

এ দিন তমলুক আদালতে শশাঙ্কের স্ত্রী চায়নাদেবী, বৌদি ছবি পাত্র ছাড়াও গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা এসেছিলেন। চায়নাদেবী বলেন, “আমরা তারকেশ্বর মন্দিরে প্রথমবার যাচ্ছিলাম। পথে ভিড়ে হারিয়ে গিয়েছিলেন স্বামী। অনেক জায়গায় খোঁজ করলেও হদিশ মেলেনি। এভাবে যে ওঁকে ফিরে পাব ভাবতে পারিনি।” হারিয়ে যাওয়ার পর প্রায় দু’সপ্তাহ পরে শশাঙ্কবাবুকে ফিরে পেয়ে খুশি গ্রামের বাসিন্দারাও। পাঁশকুড়া থানার ওসি বিশ্বজিৎ হালদার বলেন, “নিখোঁজ ওই ব্যক্তিকে বাড়ি ফিরিয়ে দিতে পারায় আমরাও খুশি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE