Advertisement
E-Paper

নির্মাণ ভাঙতে বাধা, নালিশ

রেলশহরের অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে পুরসভা উদ্যোগী হলেও তৃণমূলের একাংশ কাউন্সিলর বিরোধিতা করছেন বলে অভিযোগ তুললেন খড়্গপুরের কংগ্রেস পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে। বৃহস্পতিবার পুরভবনে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এই অভিযোগ করেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৪ ০০:৪০

রেলশহরের অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে পুরসভা উদ্যোগী হলেও তৃণমূলের একাংশ কাউন্সিলর বিরোধিতা করছেন বলে অভিযোগ তুললেন খড়্গপুরের কংগ্রেস পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে। বৃহস্পতিবার পুরভবনে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এই অভিযোগ করেন তিনি। পুরপ্রধানের দাবি, অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সম্প্রতি বোর্ড মিটিংয়ে পুরপ্রধানকে বিশেষাধিকার দেওয়ার দাবি উঠলেও একাংশ তৃণমূল কাউন্সিলররা তার বিরোধিতা জানিয়েছেন।

দোতলা বাড়ির নকশা অনুমোদন করিয়ে তিনতলা বাড়ি তৈরি, ৩ ফুট ছেড়ে বাড়ির তৈরির নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এক ফুট জমিও না ছাড়া, সরকারি বা ব্যক্তিগত জমি জবরদখল করে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এ সব ক্ষেত্রে নোটিস দেওয়ার আগেই বাড়ি তৈরি হয়ে যায়। তখন জরিমানা আদায় করেই বিষয়টিতে দাঁড়ি টানা হয়। কংগ্রেসের অভিযোগ, গত চার বছরে শহরের ইন্দা ও মালঞ্চ এলাকায় যে বহুতলগুলি তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে ১২টি অবৈধ। এর মধ্যে ৯টি আবার ইন্দা এলাকার। এই সব অবৈধ বহুতল ভাঙতে কংগ্রেস পরিচালিত পুরবোর্ড উদ্যোগী হয়েছে। ইন্দার একটি বহুতলের নির্মাণ আটকাতে বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয়। তবে ফ্ল্যাট বিক্রি হয়ে গিয়েছে জানিয়ে বহুতলের মালিক মাস ছ’য়েক আগে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। সেই মামলা এখন ডিভিশন বেঞ্চে চলছে। হাইকোর্টের রায় পুরসভার পক্ষেই থাকবে বলে এ দিন আশা প্রকাশ করেছেন পুরপ্রধান।

এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে পুরপ্রধান রবিশঙ্করবাবু বলেন, “শহর জুড়ে বাড়তে থাকা অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে আমরা উদ্যোগী হয়েছি। যে সব ক্ষেত্রে ভাঙা সম্ভব নয়, সেখানে আইনমতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি জানান, এক-দেড় মাস অন্তর হওয়া বোর্ড মিটিংয়ের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে গেলে সময় নষ্ট হয়। তখন জটিলতা বাড়ে। তাই গত ৩০ মে-র বোর্ড মিটিংয়ে পুরপ্রধানকে অবৈধ নির্মাণের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়ার বিশেষাধিকার দেওয়ার দাবি জানানো হয়। কিন্তু একাংশ তৃণমূল কাউন্সিলর তার বিরোধিতা করেন বলে অভিযোগ। পুরপ্রধান বলেন, “তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় তো তেড়ে আসেন। বিরোধিতা করেন দিব্যেন্দু পাল, শিবশঙ্কর রাও-সহ আরও কয়েকজন তৃণমূল কাউন্সিলর। অথচ সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের ওয়ার্ডেই ওই বহুতলের সংখ্যা বেশি। আমাদের ধারনা ওঁদের মদতেই এ সব হয়েছে।”

তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, শহর জুড়ে ৪০ বছর ধরেই অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে। কংগ্রেস পুরসভার ক্ষমতায় থাকাকালীনও বহু নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পুর-আইন অনুযায়ী, ২১৮ থেকে ২২১ নম্বর ধারায় অবৈধ নির্মাণের যাবতীয় আইন রয়েছে। সেই আইন অনুযায়ী পুরবোর্ডের সভ্যদের মাধ্যমেই এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার কথা। তৃণমূলের পুরসভার বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের তুষার চৌধুরী বলেন, “পনেরো বছর ধরে কংগ্রেস বোর্ডের আমলে অবৈধ নির্মাণ চলেছে। আমরা তিন বছরে সেই সব ধরে ফেলেছিলাম। কিন্তু এখন পুরপ্রধান নিজে ক্ষমতা হাতে নিয়ে পয়সা কামাতে চাইছেন।” যে তৃণমূল কাউন্সিলের বিরুদ্ধে সব থেকে বেশি অভিযোগ, সেই সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পুর-আইন অনুযায়ী বোর্ড সদস্যেদের মাধ্যমে অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হয়। কিন্তু পুরপ্রধান একাই রাশ ধরতে চাইছেন। তা আইন বিরোধী। আমরা তাই বিরোধিতা করেছি।” পুরপ্রধানের অবশ্য মত, উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিরোধিতা ঠিক নয়। তাছাড়া, পুরপ্রধান সব কিছুতেই বিশেষাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। বিষয়টি নিয়ে ফের বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা করা হবে বলেও জানান তিনি।

illegal construction row kharagpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy