Advertisement
০৮ মে ২০২৪

ফের ক্যাম্পাসেই ফিরছে বিদ্যাসাগরের সমাবর্তন

বহু বছর পর ফের ক্যাম্পাসেই ফিরছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান। আগামী ৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭তম সমাবর্তন অনুষ্ঠান হবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। এতদিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বড় সভাগৃহ ছিল না। তাই সমাবর্তন অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া করা হত জেলা পরিষদের প্রদ্যোত্‌ স্মৃতি সদন। শেষমেশ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বড় সভাগৃহ তৈরি হয়েছে। এ বার সেই বিবেকানন্দ সভাগৃহেই সমাবর্তন অনুষ্ঠান হবে। উপস্থিত থাকবেন আচার্য তথা রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

নতুন তৈরি এই প্রেক্ষাগৃহেই হবে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনর অনুষ্ঠান। —নিজস্ব চিত্র।

নতুন তৈরি এই প্রেক্ষাগৃহেই হবে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনর অনুষ্ঠান। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:১২
Share: Save:

বহু বছর পর ফের ক্যাম্পাসেই ফিরছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান। আগামী ৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭তম সমাবর্তন অনুষ্ঠান হবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। এতদিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বড় সভাগৃহ ছিল না। তাই সমাবর্তন অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া করা হত জেলা পরিষদের প্রদ্যোত্‌ স্মৃতি সদন। শেষমেশ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বড় সভাগৃহ তৈরি হয়েছে। এ বার সেই বিবেকানন্দ সভাগৃহেই সমাবর্তন অনুষ্ঠান হবে। উপস্থিত থাকবেন আচার্য তথা রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, “আগামী ৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান হবে। সুষ্ঠু ভাবে এই অনুষ্ঠান করতে সব রকম পদক্ষেপই করা হচ্ছে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জয়ন্তকিশোর নন্দী বলেন, “বহু বছর পর ফের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই সমাবর্তন অনুষ্ঠান হবে। এটা একটা ভাল ব্যাপার। ক্যাম্পাসে সভাগৃহ তৈরি হয়েছে। এই সভাগৃহেই সমাবর্তন অনুষ্ঠান হবে।” সমাবর্তনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বৈঠকও হয়। উপাচার্য রঞ্জনবাবু, রেজিস্ট্রার জয়ন্তবাবুর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদস্থ আধিকারিকেরাও। ক্যাম্পাসে সমাবর্তন অনুষ্ঠান হতে চলায় খুশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদও। ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক স্বদেশ সরকার বলেন, “ছাত্রছাত্রীরাও চাইছিলেন, ক্যাম্পাসেই সমাবর্তন হোক। এ বার তা হচ্ছে। আমরা খুশি।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের চেয়ারম্যান বিশ্বনাথ দাসও বলেন, “এ বার ক্যাম্পাসেই সমাবর্তন হচ্ছে। এটা সত্যিই একটা ভাল ব্যাপার। আমরা খুশি।”

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, এ বার সমাবর্তনে মুখ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিজ্ঞানী কে এন গণেশ। তিনি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (পুণে)-এর ডিরেক্টর। এ বার বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সাম্মানিক ডি-লিট দেওয়া হবে ইতিহাসবিদ্‌ তথা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য সব্যসাচী ভট্টাচার্য, লেখক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এবং উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) বিভবভূষণ উপাধ্যায়কে। এ ছাড়া প্রায় ১৪৫ জন পিএইচডি ডিগ্রি পাবেন।

১৯৭৮ সালে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠে ১৯৮৬ সালে। ওই বছর থেকেই পঠনপাঠন শুরু হয়। জানা গিয়েছে, একেবারে গোড়ার দিকে কয়েকটি সমাবর্তন অনুষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হয়েছিল। তখন ক্যাম্পাসের মধ্যে মঞ্চ বেঁধে সমাবর্তন অনুষ্ঠান হত। একবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অনুষ্ঠান মঞ্চ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই বার কোনও রকমে পরিস্থিতি সামলে সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়েছিল। তারপর থেকে প্রদ্যোত্‌ স্মৃতি সদনেই সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়ে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয় ২০১২ সালের নভেম্বরে। এ জন্য ভাড়া করা হয় শহরের প্রদ্যোত্‌ স্মৃতি সদনই। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বড় সভাগৃহ তৈরি হয়েছে। ফলে, বহু বছর পর ফের সেই ক্যাম্পাসেই ফিরছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান।

ন্যাকের বিচারে বিশ্ববিদ্যালয় এ বার ‘বি’ গ্রেড পেয়েছে। ‘এ’ গ্রেডে উন্নীত হতে পারেনি। এখানে পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সূত্রে খবর, এখনও এই বিশ্ববিদ্যালয় অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ ভাবে কোনও কাজ করতে পারেনি। অথচ, এক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্বন্বয় উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ভীষণ জরুরি। তবেই শিক্ষার সার্বিক মানোন্নয়ন সম্ভব। ছাত্রছাত্রীদের অন্য দেশের শিল্প, সংস্কৃতি, পাঠ্যক্রম জানা জরুরি। না হলে নিজেদের আন্তর্জাতিকস্তরে উন্নীত করতে পারবে না তাঁরা। বর্তমানে শিল্প একটি বড় বিষয়। সেই কারণে প্রতিটি বিষয়ের শিল্পের যোগ থাকা জরুরি বলে মনে করেন অনেকে। তাই প্রয়োজন শিল্প সংস্থার সঙ্গে যোগসূত্র তৈরি করা। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় ব্যর্থ। পিছিয়ে পেটেন্টের ক্ষেত্রেও। অথচ, এমন নয় যে গবেষণাগার নেই। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবশ্য আশ্বাস, শিক্ষার মানোন্নয়নে সব রকম চেষ্টা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

medinipur vidyasagar university convocation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE