Advertisement
২১ মে ২০২৪

বৃদ্ধা খুনে স্বামীর বয়ানে অসঙ্গতি, ধন্দে পুলিশ

ভরদুপুরে বাড়িতে ঢুকে বৃদ্ধা খুনের পর দু’দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু ঘটনার তদন্তে নেমে এখনও ধন্দে পুলিশ। দুষ্কৃতীরা শনিবার দুপুরে খড়্গপুরের ইন্দার বিদ্যাসাগরপুরে বাড়িতে ঢুকে লোহার রড দিয়ে স্মৃতি মুখোপাধ্যায়ের (সোমবারের পাতায় প্রকাশিত সুনীতি মুখোপাধ্যায় নামটি ভুল ছিল) মাথায় আঘাত করে। তবে পরে দেখা যায়, বাড়ির কোনও কিছু খোওয়া যায়নি। সোমবার সকালে স্মৃতিদেবীর ছেলে ধ্রুবধী আমেরিকা থেকে বাড়িতে ফিরেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:১৫
Share: Save:

ভরদুপুরে বাড়িতে ঢুকে বৃদ্ধা খুনের পর দু’দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু ঘটনার তদন্তে নেমে এখনও ধন্দে পুলিশ। দুষ্কৃতীরা শনিবার দুপুরে খড়্গপুরের ইন্দার বিদ্যাসাগরপুরে বাড়িতে ঢুকে লোহার রড দিয়ে স্মৃতি মুখোপাধ্যায়ের (সোমবারের পাতায় প্রকাশিত সুনীতি মুখোপাধ্যায় নামটি ভুল ছিল) মাথায় আঘাত করে। তবে পরে দেখা যায়, বাড়ির কোনও কিছু খোওয়া যায়নি। সোমবার সকালে স্মৃতিদেবীর ছেলে ধ্রুবধী আমেরিকা থেকে বাড়িতে ফিরেছে। এ দিন দুপুরেই স্মৃতিদেবীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তবে ওই বৃদ্ধাকে খুনের কে বা কারা জড়িত, তা নিয়েই জল্পনা চলছেই। মৃতার স্বামী পূর্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়কে জেরা করা হয়।

পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক তদন্তে পূর্ণেন্দুবাবুর কথায় অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। পূর্ণেন্দুবাবু জানিয়েছিলেন, টম্যাটো আনতে তিনি বাজারে গিয়েছিলেন। অথচ পুলিশ তদন্তে নেমে দেখতে পায়, সে দিন আগে থেকেই বাড়ির রেফ্রিজারেটরে টম্যাটো মজুত ছিল। প্রশ্ন উঠছে, তবে কেন তিনি টম্যাটো কিনতে গিয়েছিলেন? পূর্ণেন্দুবাবুর উত্তর, “ওই দিন দুপুরে খিচুরি হয়েছিল। রাতে মাংস হওয়ার কথা ছিল। ফ্রিজে যে চারটি টম্যাটো ছিল, তা যথেষ্ট ছিল না। তাই টিউশন সেরে উঠে মাংস রান্নার জন্য টম্যাটো আনতে গিয়েছিলাম।” তবে এই বক্তব্যেও সন্দেহ কাটছে না পুলিশের। বৃদ্ধা খুনের ঘটনায় পারিবারিক কোনও কলহ রয়েছে কিনা, তা দেখছে পুলিশ।

যদিও পূর্ণেন্দুবাবুর দাবি, স্ত্রীর সঙ্গে কোনও সমস্যা ছিল না। কিন্তু ঘটনার দিন কোনও অশান্তি হয়েছিল? তাঁর বক্তব্য, “নতুন দু’টি টিউশন পেয়েছিলাম। তার প্রথম মাসের বেতনের পাঁচশো টাকা দিলে আমায় খিচুরি খাওয়াবে বলে জানিয়েছিল স্ত্রী। আমি স্ত্রীকে সেজন্য টাকাও দিয়েছিলাম।” স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত নবম ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ইংরেজি পড়াতেন তিনি। কয়েক বছর আগে তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠায় ইদানীং তিনি নবম-দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীদের পড়াতেন না। ঘটনার তদন্তে এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। উঁচু ক্লাসের ছাত্রীদের তিনি পড়াতেন না কেন? উত্তরে পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, “আমি এখন বেশি টিউশন করি না। তবে পঞ্চম শ্রেণির অনেক ছাত্রীই তো আসে।” বিষয়গুলি নিয়ে তদন্তে পূর্ণেন্দুবাবুর পরিবারের লোকেদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিদ্যাসাগরপুরের বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে একাই থাকতেন স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক পূর্ণেন্দুবাবু। শনিবার দুপুরে বাড়ির বাইরে যান। ফিরে এসে তিনি বাড়ির রান্নাঘরের মেঝেতে স্ত্রীকে রক্তাত্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। প্রতিবেশীদের সাহায্যে স্মৃতিদেবীকে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পথেই স্মৃতিদেবীর মৃত্যু হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

smriti mukhopadhyay murder kharagpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE