মিত্র কম্পাউন্ড এলাকার এই বাড়িতেই হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
রীতিমতো কলিংবেল বাজিয়ে বাড়িতে ঢুকে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মেদিনীপুর শহরের স্টেশন রোড সংলগ্ন মিত্র কম্পাউন্ড এলাকায়। রবিবার রাতে বাড়ির কর্তা বৃদ্ধ রমেশচন্দ্র দাসের হাত-পা মাফলার দিয়ে বেঁধে ‘অপারেশন’ চালায় দুই দুষ্কৃতী। ধস্তাধস্তিতে জখম হন রমেশবাবুর স্ত্রী বৃদ্ধা প্রণতিদেবীও। প্রায় দশ হাজার টাকা ও সোনার গয়না নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।
সদর শহরের বুকে এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন বাসিন্দারা। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে কোতয়ালি থানার পুলিশ। তবে কেউ ধরা পড়েনি। এ দিন ফোন ধরেননি জেলার পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। তবে জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “এমন ঘটনা এড়াতে দুষ্টচক্রগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে। ধরপাকড় চলেই। তবে মূল পাণ্ডাদের কয়েকজন এখনও অধরা। তাদের খোঁজ চলছে।”
রমেশবাবুর দুই ছেলে। চাকরিসূত্রে তাঁরা মেদিনীপুরের বাইরে থাকেন। রবিবার রমেশবাবু ও প্রণতিদেবীই বাড়িতে ছিলেন। রাত ন’টা নাগাদ দুই যুবক কলিং বেল বাজায়। বৃদ্ধ দরজা দরজা খুলতেই এক যুবক তাঁকে জড়িয়ে ধরে মাফলার দিয়ে হাত-পা বেঁধে দেয়। তারপর তাঁকে একটি ঘরে আটকে রেখে শুরু হয় টাকা-গয়নার খোঁজ। বৃদ্ধাকে আংটি-চুড়ি খুলে দেন। তাঁর কানের দুল টেনে নিতে যায় দুষ্কৃতীরা। তাতে প্রণতিদেবী জখম হন। ইতিমধ্যে রমেশবাবুু চিৎকার শুরু করেন। তাতে বেগতিক বুঝে দুই দুষ্কৃতী ছাদের পাইপ বেয়ে নীচে নেমে চম্পট দেয়। চুরির খবর পেয়ে খড়্গপুর থেকে মেদিনীপুরে শ্বশুরবাড়িতে এসেছিলেন ওই বৃদ্ধ দম্পতির পুত্রবধূ সঙ্গীতা দাস। তিনি বলেন, “বছর দেড়েক আগেও এক বার এই বাড়িতে চুরি হয়েছিল। তখন অবশ্য বাড়িতে কেউ ছিল না। আবার এমন ঘটনা ঘটায় আমরা চিন্তায় রয়েছি। শ্বশুর-শাশুড়ি তো বাড়িতে একা থাকেন।”
মিত্র কম্পাউন্ডে চুরির ঘটনা এই প্রথম নয়। কয়েক সপ্তাহ আগেও এই এলাকায় হার ছিনতাই হয়েছে। শহরবাসীর অভিযোগ, মেদিনীপুরে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ হচ্ছে। প্রায়ই চুরির ঘটনা ঘটছে। রাস্তায় দাঁড় করানো মোটর বাইক, সাইকেলও নিয়ে পালাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। সাদা পোশাকে শহরে নজরদারি চালায় পুলিশ। তা-ও চুরি-ছিনতাইয়ে লাগাম টানা যাচ্ছে না। পুলিশের এক সূত্রে খবর, মূলত নেশাগ্রস্ত যুবকেরাই চুরি- ছিনতাইয়ের চক্রে যুক্ত হয়ে পড়ছে। নেশার টাকা জোগাড়ে হাত পাকাচ্ছে অপরাধ দুনিয়ায়।
শহরবাসীর মতে, অসামাজিক কাজকর্ম রোধে যদি পুলিশ তৎপর না হয় তাহলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। সর্বত্র পুলিশি টহল যথাযথ ভাবে হচ্ছে না বলেও অভিযোগ। তাই নিরাপত্তার ফাঁক গলে দুষ্কৃতীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। পুলিশের অবশ্য বক্তব্য, শহরের নিরাপত্তা যথেষ্ট জোরদার। মিত্র কম্পাউন্ডের ঘটনায় দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে বলেও জানায় পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy