পিকনিকে চলছে রান্না। মেদিনীপুর ইকো পার্কে। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে সামান্য তাল কাটলেও থেমে থাকল না বর্ষবরণের হইহুল্লোড়। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই নাচে-গানে নতুন বছরকে বরণ করল মেদিনীপুরও। আনন্দে মাতল আট থেকে আশি- সকলেই।
নতুন বছরের প্রথম ছুটির দিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার কোনও তাড়া ছিল না। কারও কারও একটু দেরি করেও ঘুম ভাঙে। অবশ্য বুধবার সন্ধ্যা থেকেই আনন্দে মাতেন মেদিনীপুরের মানুষ। বিভিন্ন ক্লাব, হোটেল, রেস্তোরাঁয় নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। রাত ১২টা বাজতেই নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে নানা জায়গায় আতসবাজি জ্বালানো হয়। অনেকেই গভীর রাত পর্যন্ত চুটিয়ে আনন্দ করেন। বর্ষবরণের আলোয় ততক্ষণে সেজে উঠেছে নানা এলাকা। সারা বছরের দিন যাপনে যেন অন্য মাত্রা যোগ করে এই বর্ষবরণের উত্সবও। উত্সবের দিনে শহর এবং শহরতলিতে অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে প্রস্তুত ছিল পুলিশ- প্রশাসনও। মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক অমিতাভ দত্ত বলেন, “বর্ষবরণের উত্সব নির্বিঘ্নেই কেটেছে।”
উত্সবের আমেজ অবশ্য শুরু হয়েছিল বড়দিনের দিন থেকেই। শীতের আমেজ সঙ্গে নিয়ে বর্ষবরণটাও কেটে গেল। বুধবার রাতে কোথাও বসে আড্ডার আসর, কোথাও বা চলেছে দেদার খানাপিনা। একই ছবি চোখে পড়ে বৃহস্পতিবার রাতেও। দিনটা একটু অন্য ভাবে কাটাতে অনেকে দিনের বেলায় সপরিবার হোটেল- রেস্তোরাঁয় গিয়েছেন। এই দিনে হোটেলগুলোয় খাদ্যরসিকদের জন্য বিশেষ আয়োজন করা হয়। এ দিন কেউ সপরিবার ঘুরতে বেরিয়েছেন। কেউ বনভোজনে মেতেছেন। নতুন বছরের প্রথম দিনে শহর এবং শহরতলির পার্কগুলোয় ভিড় উপচে পড়ে। কয়েকশো মানুষ ভিড় করেন। অনেকেই মনে করেছিলেন, এ দিন অন্তত আকাশ পরিষ্কার থাকবে। হিমেল হাওয়াও থাকবে। অবশ্য দিনভর এই আবহাওয়ার দেখাই মেলেনি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আকাশ ছিল মেঘলা। দুপুর গড়ানোর আগেই ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়। কিন্তু বৃষ্টি উপেজ্ঞা করেই চলে অনুষ্ঠান। বছরের প্রথম দিন বলে কথা! তাই সকাল থেকেই পার্কে পার্কে ভিড় জমাতে শুরু করেন অনেকে। এরপর বেলা যত গড়িয়েছে, ভিড়ও তত বেড়েছে। কেউ আসেন পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে। কেউ বা বন্ধুদের সঙ্গে। কচিকাঁচাদের নিয়ে অনেকে চিড়িয়াখানাতেও আসেন।
পার্কের পাশাপাশি এ দিন নদীর ধারেও বনভোজনের আসর বসে। মেদিনীপুরের পাশ দিয়েই চলে গিয়েছে কংসাবতী নদী। শহরের বাসিন্দা অসিত সাহু, তমাল দাসদের কথায়, “বছরের প্রথম দিনে পিকনিক করার মজাই আলাদা।” শহরের বিভিন্ন ক্লাবেও এ দিন পিকনিক হয়। বেশ কয়েকটি ক্লাবের আশপাশ এলাকা সাজানো হয়েছিল। নতুনবাজার থেকে কেরানিতলা, বটতলা থেকে সিপাইবাজার- বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার দিনভর উত্সব মুখর ছিল শহরের নানা এলাকা। বিকেল গড়াতেই চোখে পড়ে নানা রঙের আলোর ঝলকানি। কোথাও টুনি বাল্ব, কোথাও এলইডি আলো দিয়ে এলাকা সাজানো হয়। বড়দিন উপলক্ষে শহরের চার্চস্কুল মাঠে মেলা বসেছে। নতুন বছরের প্রথম দিনে অনেকে মেলায় আসেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy