Advertisement
১৮ মে ২০২৪

বহু নলকূপ অকেজো, গরমে জল সঙ্কট পূর্বে

মাথার উপর প্রখর রুদ্র। আকাশে মেঘের দেখা নেই, সকাল হতেই গনগনে রোদ্দুরে নাজেহাল আট থেকে আশি। গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানীয় জলের সঙ্কটও তীব্র হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমার, চণ্ডীপুর, নন্দীগ্রাম ১, নন্দীগ্রাম ২ ব্লক, কাঁথি, রামনগর, এগরা, খেজুরি-সহ বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৪ ০১:৪৭
Share: Save:

মাথার উপর প্রখর রুদ্র।

আকাশে মেঘের দেখা নেই, সকাল হতেই গনগনে রোদ্দুরে নাজেহাল আট থেকে আশি।

গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানীয় জলের সঙ্কটও তীব্র হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমার, চণ্ডীপুর, নন্দীগ্রাম ১, নন্দীগ্রাম ২ ব্লক, কাঁথি, রামনগর, এগরা, খেজুরি-সহ বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায়। অভিযোগ, অনেক জায়গায় পানীয় জলের নলকূপ অকেজো হয়ে পড়ায় সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

জেলা পরিষদ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রচণ্ড গরমের সঙ্গে জেলায় দীর্ঘ দিন বৃষ্টি না হওয়ার ফলে মাটির নীচের জলস্তর নেমে গিয়েছে। জেলার বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায় পানীয় জলের জন্য প্রধান ভরসা নলকূপ। ভূগর্ভস্থ জলস্তর অনেক নেমে যাওয়ায় অধিকাংশ নলকূপ দিয়ে জল উঠছে না। আবার কোথাও নলকূপ থেকে ওঠা জলের পরিমাণ অনেক কমে গিয়েছে। জেলার নন্দকুমার ব্লকের সাওড়াবেড়িয়া জালপাই ১, বাসুদেবপুর, শীতলপুর, কল্যাণচক, দক্ষিণ নারিকেলদা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা, চণ্ডীপুর ব্লকের ইশ্বরপুর, বৃন্দাবনপুর, নন্দপুর বরাঘুনি গ্রাম পঞ্চায়েত ও নন্দীগ্রাম ১, ২ ব্লক এলাকায় বেশ কয়েকটি নলকূপ দিয়ে জল না ওঠায় সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নন্দকুমার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্ত্বরে থাকা নলকূপও অকেজো হয়ে গিয়েছে। এমনকী নন্দকুমার এলাকায় থাকা জলসরবরাহ প্রকল্পের ট্যাপ থেকেও ঠিকমতো জল পড়ছে না। নন্দকুমারের সাওড়াবেড়িয়া জালপাই এলাকার বাসিন্দা শ্রীদাম দাস বলেন, “আমাদের পাড়ার নলকূপটি প্রায় সপ্তাহ দু’য়েক আগে অকেজো হয়ে যায়। এখন বেশ কিছুটা দূরে গ্রামের অন্য একটি নলকূপ থেকে আমাদের পানীয় জল আনতে হচ্ছে।” নন্দকুমার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকুমার বেরা বলেন, “ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে নলকূপ অকেজো হয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমাদের কাছে এখনও পর্যন্ত ২০টির বেশি দরখাস্ত এসেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জলস্তর নেমে যাওয়ায় নলকূপ দিয়ে জল উঠছে না বলে জানা গিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জরুরি ভিত্তিতে আগামী ২৫ মে পঞ্চায়েত সমিতির বৈঠক ডাকা হয়েছে।”

চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য দফতরের কর্মাধ্যক্ষ হাসিরানি রথ বলেন, “ব্লকের অধিকাংশ গ্রামীণ এলাকায় পানীয় জলের জন্য সাব-মার্সিবল পাম্প বসানো হয়েছে। অনেক নলকূপ অকেজো হয়ে গিয়েছে। ফলে নলকূপের উপর ভরসা করে থাকা এলাকার বাসিন্দারা সমস্যায় পড়েছেন।” নন্দীগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আবু তাহের বলেন, “প্রচণ্ড গরমের জেরে জলস্তর নেমে যাওয়ায় ব্লকের কয়েকটি নলকূপ দিয়ে জল ওঠার পরিমাণ কমে গিয়েছে। ফলে পানীয় জলের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।”

জেলার বেশ কিছু এলাকায় পানীয় জলের সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন খোদ জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য দফতরের কর্মাধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম দাস। তিনি বলেন, “প্রচণ্ড গরমের জেরে জলস্তর নেমে যাওয়ার কারণে জেলার নন্দকুমার, চণ্ডীপুর, নন্দীগ্রাম-সহ বেশ কিছু এলাকায় নলকূপ অকেজো হয়ে পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে এই সব এলাকাগুলিতে পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে আমরা উদ্যোগী হয়েছি। জরুরি ভিত্তিতে ২০০টি নলকূপ বসানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ জানান, পানীয় জলের ব্যবস্থা ও শৌচাগার নির্মাণের কাজে জেলার জন্য প্রায় ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। বরাদ্দ টাকার একাংশ দিয়ে পানীয় জলের জন্য নলকূপ বসানো হবে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অজয় পাল বলেন, “জেলার কয়েকটি এলাকায় পানীয় জলের সমস্যার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। পানীয় জলের জন্য নলকূপ বসানো ছাড়াও কাঁথি ৩ ব্লকের কয়েকটি গ্রামে পঞ্চায়েতের উদ্যোগে পুকুরের জল পরিস্রুত করে ব্যবহার করার প্রকল্প চালু হয়েছে। একশো দিনের কাজের মাধ্যমে তিন-চার লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই জল প্রকল্প চালু করার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে প্রকল্প জমা দিতে বলা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

water crisis tamluk
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE