রবিবার মেদিনীপুর শহরে বিএসএফের টহল।—নিজস্ব চিত্র।
হাতে আর দু’দিন।
বুধবার মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। বেশিরভাগ আধা সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যেই জেলায় পৌঁছে গিয়েছে। শুরু হয়ে গিয়েছে রুট মার্চ ও পুলিশি টহলও। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার শিসরাম ঝাঝোরিয়া বলেন, “আধা সামরিক বাহিনীর টহল শুরু হয়ে গিয়েছে। রয়েছে পুলিশি টহলও।”
বুধবার জেলার যে দু’টি কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হবে, তার একটি মাওবাদী অধ্যুষিত ঝাড়গ্রাম ও অন্যটি মেদিনীপুর। দু’টি লোকসভা কেন্দ্রই সীমান্ত এলাকায়। যার একদিকে রয়েছে ওড়িশা ও অন্যদিকে ঝাড়খণ্ড। ফলে মাওবাদী হামলার আশঙ্কা থেকেই যায়। আবার গড়বেতা, শালবনি, নারায়ণগড়, দাঁতন, খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকার মতো রাজনৈতিক উত্তেজনাপ্রবণ এলাকাও রয়েছে। তাই নির্বাচনের আগে রাজ্যের বিশেষ পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশও মেদিনীপুরে এসে প্রশাসনিক প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে যদিও তিনি জানিয়ে গিয়েছেন, “জেলার প্রস্তুতি খুবই ভাল। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে কমিশন সব ধরনের ব্যবস্থাই নিচ্ছে।”
বিশেষ পর্যবেক্ষকের অভয়বাণী সত্ত্বেও রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে নানা ধরনের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তাই রাজনৈতিক দলগুলিকে তাদের আশঙ্কার কারণ উল্লেখ করে এলাকার নাম দিয়ে কমিশনকে জানাতে বলা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলিও তাই করছে। তবে সকলের দাবি, প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকুক। আগে থেকেই এলাকায় টহল দিক কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী। তবেই মানুষের ভীতি কাটবে।
শুক্রবার থেকেই অবশ্য জেলায় আধা সামরিক বাহিনী ঢুকতে শুরু করে। শনিবার থেকে বিভিন্ন এলাকায় তাঁদের পাঠানোর কাজও শুরু হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টি লোকসভা কেন্দ্রের জন্য প্রায় ১৪০ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী আসার কথা। মাওবাদী উপদ্রুত এলাকার প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে। কোথাও এক সেকশন অর্থাৎ ৮ জন। আবার কোথাও তার অর্ধেক অর্থাৎ চারজনও। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিতর্ক এড়াতে সর্বত্রই বুথে বুথে এবার কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। তারই সঙ্গে আধা সামরিক বাহিনী দিয়েই এরিয়া ডোমিনেশন, রুট মার্চও করানো হবে। যদিও রাজনৈতিক দলগুলির আশঙ্কা, মাওবাদী এলাকায় সর্বত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী দিলেও অন্য এলাকায় তা নাও করতে পারে পুলিশ।
যদিও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্ত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে, রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ খতিয়ে দেখার পরই বিভিন্ন থানার ওসি এবং বিডিও মিলে ঠিক করেছেন, সেই এলাকার কোন বুথ উত্তেজনা প্রবণ, কোনটা অতি উত্তেজনা প্রবণ ও কোনটা সাধারণ। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই জেলা জুড়ে উত্তেজনাপ্রবণ বুথের তালিকা তৈরি করা হয়েছে এবং পুলিশ মোতায়েন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জাাননো হয়েছে, এটাও ঠিক যে উত্তেজনা প্রবণ বুথের সংখ্যা প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হতে থাকে। এখন যে এলাকা শান্তিপূর্ণ, ভোটের এক দিন আগে সেখানে সংঘর্ষের ঘঠনা ঘটলে সেই এলাকাটি উত্তেজনাপ্রবণ বুথের তালিকায়
ঢুকে যাবে। কোথাও আধা সামরিক বাহিনীর খামতি থাকবে না বলেই কমিশন জানিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy