Advertisement
০৩ মে ২০২৪

মিড-ডে মিলে দুর্নীতির নালিশ, স্কুল সম্পাদক প্রহৃত পাঁশকুড়ায়

মিড-ডে মিলে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সম্পাদককে মারধর ও হেনস্থার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা। শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার সুরা মহামায়া গার্লস হাইস্কুলের এই পরিস্থিতি সামাল দিতে যাওয়া পুলিশকেও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সম্পাদক সাধন বেরা জখম অবস্থায় পাঁশকুড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিত্‌সাধীন রয়েছেন। তবে তিনি বিরোধী গোষ্ঠীর ১০জন কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৪ ০২:১১
Share: Save:

মিড-ডে মিলে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সম্পাদককে মারধর ও হেনস্থার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা। শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার সুরা মহামায়া গার্লস হাইস্কুলের এই পরিস্থিতি সামাল দিতে যাওয়া পুলিশকেও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সম্পাদক সাধন বেরা জখম অবস্থায় পাঁশকুড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিত্‌সাধীন রয়েছেন। তবে তিনি বিরোধী গোষ্ঠীর ১০জন কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁশকুড়া পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সুরা মহামায়া গার্লস হাইস্কুলের মিড-ডে মিলের রান্নার দায়িত্বে থাকা স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ও স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক সাধন বেরা। সাধনবাবু আবার পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান জাকিউর রহমানের ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদক। অভিযোগ, ন’মাস আগে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তথা রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রর স্ত্রী সুমনা মহাপাত্র সিদ্ধান্ত নেন, ওই স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দেখভাল করবে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা, স্থানীয় কাউন্সিলর ও স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর এক সদস্যা। মাস দু’য়েক আগে পুরপ্রধান আবার দায়িত্বের নির্দেশ দেন প্রধান শিক্ষিকা ও স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদককেই। ফলে অ্যাকাউন্ট দেখভালের দায়িত্ব থেকে বাদ পড়েন সুমনাদেবী। এই নিয়ে পুরপ্রধান জাকিউর রহমানের সঙ্গে সুমনাদেবীর বিরোধ বাধে। আর জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, জাকিউর গোষ্ঠীর সঙ্গে সৌমেন মহাপাত্রের গোষ্ঠীবিবাদ রয়েছেই।

ঠিক কী ঘটেছিল শনিবার? হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সাধনবাবু জানান, শনিবার এই বিষয় নিয়েই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে তাঁর বৈঠকের কথা ছিল। কিন্তু এ দিন স্কুলে ঢোকার মুখেই একদল মহিলা তাঁকে মারধর করে ও জামা ছিঁড়ে হেনস্থা করে। সেই সময় ঘটনাস্থলে থাকা দুই পুলিশকর্মী বাধা গিতে গেলে ওই মহিলারা তাঁদেরও মারধর করেন। সাধনবাবু বলেন, “আমি ভয়ে স্কুলে ঢুকে গিয়েছিলাম। পরে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে। তবে আমার বুকে ও ডান হাতে আঘাত লেগেছে।” ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুমনা মহাপাত্র বলেন, “ওই স্কুলের মিড-ডে মিলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের দায়িত্ব পাওয়ার পর নানা দুর্নীতি রুখে দেওয়া হয়েছিল। এ নিয়ে পুরপ্রধান ও ঘনিষ্ঠ পরিচালন সমিতির সম্পাদক ক্ষিপ্ত ছিলেন। আমাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য লুকিয়ে এ দিন একটা বৈঠক ডাকা হয়েছিল। তার প্রতিবাদেই এ দিন মিড-ডে মিলের মহিলারা বিক্ষোভ দেখান।” সেই সময় সাধনবাবু এক মহিলাকে চড় মারেন বলেও অভিযোগ জানান তিনি।

অবশ্য মিড-ডে মিলে দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে পুরপ্রধান জাকিউর রহমান খান বলেন, “আমি মিড-ডে মিল প্রকল্পের সরকারি নিয়ম মেনেই নির্দেশ দিয়েছিলাম ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ও সম্পাদকের নামে হবে। কিন্তু পরে সুমনাদেবী জোর করে নিজের নাম ঢুকিয়েছিলেন। আমি আবার আগের নিয়ম বহাল রাখার কথা জানানোয় তা মেনে নিতে পারেননি সুমনাদেবী। তাই এ দিন সুমনাদেবীর সমর্থকরা সাধনবাবুকে মারধর করেছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE