এ বার রেলের সিজন (মান্থলি) টিকিট কিনলেই দিতে হবে মুচলেকা। কী মুচলেকা? ‘কোনও বেআইনি বা দুষ্কৃতীমূলক কাজ করব না।’ আর রেলের কাছে এমনটা প্রমাণিত হলেই সিজন টিকিট বাতিল করা হবে।
সম্প্রতি এই নির্দেশ জারি করেছে রেল বোর্ড। মুচলেকা না দিলে কাউকেই সিজন টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। রেলের এ হেন সিদ্ধান্তে বেজায় চটেছেন নিত্যযাত্রীরা। তাঁদের প্রশ্ন, নিত্যযাত্রীরা কী এমন করেছেন যে হঠাৎ রেলকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হল। মেদিনীপুর-হাওড়া নিত্যযাত্রী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হিমাংশু পালের মতে, “এই ধরনের মুচলকা অত্যন্ত লজ্জাজনক। প্রতিবাদে রেলকে আমরা চিঠিও দিয়েছি।”
এ ব্যাপারে খড়্গপুর ডিভিসনের ডিআরএম গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, এটি রেল বোর্ডের নির্দেশ। তাই তাঁরা মানতে বাধ্য। যাত্রীদের প্রতিবাদের বিষয়টিও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এই মুচলেকা ঘিরে নানা সংশয়ও দেখা দিয়েছে। এটি বছরে একবার দিলেই হবে, নাকি প্রতি মাসেই দিতে হবে। কারণ, গত মাস থেকে চালু এই মুচলেকা প্রতি মাসেই দিতে হবে বলে জানিয়েছে রেল। নিত্যযাত্রীদের প্রধান প্রশ্নটি হল, দিতে হবে কেন? একটি ট্রেনে সিজন টিকিট কেটে বড় জোর ৫০-১০০ জন যাতায়াত করেন। কয়েক’শো যাত্রী থাকেন সাধারণ টিকিট কিংবা বিনা টিকিটের। তাঁদের ক্ষেত্রে রেলের কোনও সন্দেহ হল না, সিজন টিকিটে যাতায়াতকারীদের ক্ষেত্রেই কেন এমনটা হল? এই প্রশ্নই সম্বস্বরে তুলছেন সকলে।
সিজন টিকিট কিনতে হলে এমনিতেই যাত্রীর সব নথি রেলকে জানাতে হত। রেল যে কার্ড যাত্রীকে দিতেন তাতে তা ছাপাও থাকত। কিন্তু এখন তা নিতে গেলে আগে ছাপানো মুচলেকায় সই করতে হবে। তাতে রয়েছে নাম, ঠিকানা ও সাক্ষরের জন্য নির্ধারিত জায়গা। তা পূরণ করে ছবি সাঁটিয়ে জমা দেওয়ার পরেই দেওয়া হবে সিজন টিকিট। নতুবা নয়।
এই পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মী তথা খড়্গপুর-আদ্রা নিত্যযাত্রী অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সহ-সম্পাদক তরুণকুমার খান বলেন, “হঠাৎ কোথাও গণ্ডগোল হলেও আমাদের ফাঁসিয়ে দেওয়া হতে পারে। কারণ, আমরা নিয়মিত যাতায়াত করি। সকলের মুখ চেনা।” একই ভাবে রেলের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মী-আধিকারিক, ব্যবসায়ী থেকে সিজন টিকিট নিয়ে যাতায়াতকারী সব যাত্রীই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy