Advertisement
০৪ মে ২০২৪
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়

সংঘর্ষ বিরতি, জেলা নেতৃত্বের কড়া বার্তায় সংযত টিএমসিপি

দু’দিন ধরে দফায় দফায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের পর শুক্রবার স্বাভাবিকই ছিল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এদিন নতুন করে কোনও গোলমাল বাধেনি। দু’পক্ষই নিজেদের সংযত রেখেছিল। দলের এক সূত্রে খবর, লাগাতার গোলমাল চলতে থাকায় বৃহস্পতিবার রাতেই টিএমসিপির জেলা নেতৃত্বকে কড়া বার্তা দেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। তাঁরা বুঝিয়ে দেন, যে করেই হোক এমন ঘটনা এড়াতে হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৪ ০১:০২
Share: Save:

দু’দিন ধরে দফায় দফায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের পর শুক্রবার স্বাভাবিকই ছিল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এদিন নতুন করে কোনও গোলমাল বাধেনি। দু’পক্ষই নিজেদের সংযত রেখেছিল। দলের এক সূত্রে খবর, লাগাতার গোলমাল চলতে থাকায় বৃহস্পতিবার রাতেই টিএমসিপির জেলা নেতৃত্বকে কড়া বার্তা দেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। তাঁরা বুঝিয়ে দেন, যে করেই হোক এমন ঘটনা এড়াতে হবে। না- হলে দলই ছাত্র নেতাদের রাশ টেনে ধরতে বাধ্য হবে। শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ব্যবহার করব, আর তাঁর আচার- আচরণ ত্যাগ করব, তা হবে না। জেলা নেতৃত্ব তা হতে দিতে পারেও না। দলে থাকলে হলে সকলকেই শৃঙ্খলাপরায়ণ হতে হবে।

আগামী ২১ জুলাই কলকাতায় তৃণমূলের সমাবেশ রয়েছে। জেলা নেতৃত্বের বার্তা বুঝে ওই সমাবেশের আগে বিতর্ক এড়াতে টিএমসিপির দুই গোষ্ঠীই নিজেদের সংযত করে নেয়। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরে ভর্তির ফর্ম- ফিলাপ চলছে। মূলত, ফর্ম- ফিলাপের প্রক্রিয়া চলাকালীন সংগঠনের রাশ কার হাতে থাকবে, সেই নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত। মেদিনীপুরেও টিএমসিপির দুই গোষ্ঠী রয়েছে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের ক্ষমতা রয়েছে এক গোষ্ঠীর হাতে। টিএমসিপির বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের ক্ষমতা রয়েছে অন্য গোষ্ঠীর হাতে। ফর্ম- ফিলাপ ঘিরে ছাত্র সংসদ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে একটি ক্যাম্প করেছে। অন্যদিকে, টিএমসিপির বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটও ক্যাম্পাসের বাইরে একটি ক্যাম্প করেছে। আগেও দুই গোষ্ঠীর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। সংঘর্ষের জেরে ব্যাহত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজকর্মও। পরিস্থিতির কথা অজানা নয় দলের রাজ্য নেতৃত্বের। দলের এক সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহের গোড়ায় মেদিনীপুরে এসে জেলা নেতাদের সঙ্গে দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনার সময় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় টিএমসিপির জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরিকে সতর্কও করেন। বুঝিয়ে দেন, বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কিত কিছু খবর তাঁর কাছে পৌঁছেছে। ছাত্র সংগঠন যে তার দায়িত্বই ঠিকঠাক ভাবে পালন করে।

মুকুলবাবুর এই সতর্কবার্তার পরও বুধ এবং বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে টিএমসিপির দুই গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে ‘বহিরাগতদের’ এনে অশান্তি বাধানোর অভিযোগে সরব হয়। স্বাভাবিক ভাবে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের অস্বস্তি আরও বাড়ে। পরিস্থিতি দেখে বৃহস্পতিবার রাতেই টিএমসিপির জেলা নেতৃত্বকে কড়া বার্তা দেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। জেলা নেতৃত্বের এই ‘দাওয়াইতে’ কাজও হয়েছে। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নতুন করে কোনও গোলমাল বাধেনি। টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক স্বদেশ সরকারের কথায়, “বহিরাগতরা ঢুকেনি। তাই গোলমাল হয়নি!” অন্যদিকে, টিএমসিপির বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের চেয়ারম্যান বিশ্বনাথ দাসও বলেন, “বহিরাগতরা না- ঢুকলে গোলমাল হবে কী করে? শুক্রবার ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের আনাগোনা ছিল না। তাই গোলমাল হয়নি!” তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, “দলের কোনও স্তরেই বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না। একটা কথা সকলকেই মনে রাখতে হবে, মানুষের কাছে আমাদের দায়বদ্ধতা আছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি মানুষ দেখতে চান না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

clash tmcp vidyasagar university
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE