সিপিএমের পর সিপিআই। সিপিআইয়ের ২৩ তম পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হবে মেদিনীপুর শহরে। ইতিমধ্যে এ নিয়ে দলীয়স্তরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তও হয়ে গিয়েছে। আগামী ১-৩ ফেব্রুয়ারি এই সম্মেলন চলবে। জেলা সম্মেলন উপলক্ষে শহরে এক প্রকাশ্য সমাবেশও হবে। সমাবেশে উপস্থিত থাকার কথা দলের রাজ্য সম্পাদক মঞ্জুকুমার মজুমদার, প্রাক্তন সাংসদ গুরুদাস দাশগুপ্ত প্রমুখের। সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণা বলেন, “এ বার দলের জেলা সম্মেলন মেদিনীপুরেই হবে। দলীয়স্তরে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।” ২৩ তম জেলা সম্মেলনের জন্য একটি অভ্যর্থনা কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
বস্তুত, এক সময়ে অবিভক্ত মেদিনীপুরে সিপিআইয়ের জমি বেশ শক্তই ছিল। পরে অবশ্য ধীরে ধীরে সিপিএমের প্রভাব বৃদ্ধি হয়। প্রতি তিন বছর অন্তর দলের শাখা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে সম্মেলন করে আলাপ-আলোচনা, আত্মসমালোচনার মাধ্যমে, সাফল্য-ঘাটতি চিহ্নিত করে আগামী দিনে দলের অবস্থান-সহ সাংগঠনিক রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়। ২০১১ সালে দলের ২২ তম জেলা সম্মেলন হয়েছিল খড়্গপুরে। জেলার যে সব এলাকায় কিছুটা হলেও সিপিআইয়ের প্রভাব রয়েছে তারমধ্যে খড়্গপুর শহর, মেদিনীপুর শহর অন্যতম। দলের এক সূত্রে খবর, এ বার ২৫- ২৯ মার্চ দলের ২২ তম সর্বভারতীয় সম্মেলন (পার্টি কংগ্রেস) অনুষ্ঠিত হবে পণ্ডিচেরিতে। ২৫ তম রাজ্য সম্মেলন হবে বর্ধমানের অণ্ডালে। ১৫- ১৮ ফেব্রুয়ারি। পশ্চিম মেদিনীপুরে সিপিআইয়ের ৪৫৫টি শাখা কমিটি রয়েছে। ৩৫টি লোকাল কমিটি রয়েছে। ইতিমধ্যে শাখা কমিটির সম্মেলন শুরু হয়েছে। আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে সমস্ত লোকাল কমিটির সম্মেলন শেষ হওয়ার। এরপরই জেলা সম্মেলনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু হবে। জেলা সম্মেলনে প্রায় ৩৫০ জন প্রতিনিধি থাকবেন বলে দল সূত্রে খবর।
জেলার তিনটি লোকসভা আসনের মধ্যে দু’টিতেই সিপিআইয়ের প্রার্থী ছিল। ভোটের ফলেই স্পষ্ট, বামেদের জনসমর্থনে অনেকটাই ভাটা পড়েছে। এই পরিস্থিতি তড়িঘড়ি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয় বলে মানছেন সিপিআই জেলা নেতৃত্বও। একদা ‘লালদুর্গ’ বলে পরিচিত পশ্চিম মেদিনীপুরে গত লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ২৯ শতাংশ ভোট পেয়েছে বামেরা। তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট প্রায় ৫১ শতাংশ। পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে জনসংযোগে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষবাবুর কথায়, “চড়াই- উতরাই থাকবেই। তার মধ্যেই আমাদের কাজ করতে হবে।”