Advertisement
১৮ মে ২০২৪

সংসদের দখল নিয়ে কোন্দল বিদ্যাসাগরে

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ গঠন করতে গিয়েও চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হল তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে। গোড়ায় দু’টি প্যানেল জমা দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছিল সংগঠনের দু’পক্ষ। ক্যাম্পাসে এ নিয়ে বচসাও হয়। শেষমেশ অবশ্য একটি প্যানেলই জমা পড়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৪ ১৯:০৩
Share: Save:

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ গঠন করতে গিয়েও চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হল তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে। গোড়ায় দু’টি প্যানেল জমা দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছিল সংগঠনের দু’পক্ষ। ক্যাম্পাসে এ নিয়ে বচসাও হয়। শেষমেশ অবশ্য একটি প্যানেলই জমা পড়ে। সংসদ গঠিত হয়। ১৯ জন সদস্যের ছাত্র সংসদে সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন স্বদেশ সরকার, সহ-সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন রাজদীপ সিংহ, সভাপতি হয়েছেন পামেলী দেবনাথ এবং সহ-সভাপতি হয়েছেন পথিক দাস। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, “ভোটাভুটির একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তবে, শেষ পর্যন্ত ভোটাভুটি হয়নি। কারণ, একটি প্যানেলই জমা পড়ে।” তাঁর কথায়, “খুব শান্তিপূর্ণ ভাবেই সংসদ গঠন হয়েছে।”

দু’টি প্যানেল জমা দেওয়ার তোড়জোড় যে শুরু হয়েছিল, তা স্বীকার করছেন টিএমসিপি’র জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি। তাঁর কথায়, “কিছু ক্ষোভ ছিল। তাই দু’টি প্যানেল তৈরি হয় বলে শুনেছি। তবে, ভোটাভুটি হয়নি। আলোচনার মাধ্যমে শেষমেশ একটি প্যানেলই জমা পড়ে।” যে প্যানেলটি শেষ পর্যন্ত জমা পড়ে, তার অধিকাংশ সদস্যই টিএমসিপি’র বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর কর্মী- সমর্থক বলে পরিচিত। সংগঠনের অন্দরে তাঁরা মাঝেমধ্যেই জেলা সভাপতির কাজকর্মের প্রতিবাদ করেন। টিএমসিপি’র জেলা সভাপতির অবশ্য দাবি, “গোষ্ঠী কোন্দলের কোনও ব্যাপার নেই। কারোর সঙ্গে কারোর মত বিরোধ থাকতেই পারে।”

তবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের এক নেতা মানছেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ গঠন নিয়ে ক্যাম্পাসে যা হল, তা অনভিপ্রেত। আগেই আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া উচিত ছিল। তা না-হওয়ার ফলেই দু’টি প্যানেল জমা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হল। শেষমেশ যে ভোটাভুটির প্রয়োজন হয়নি, এটাই রক্ষা!” জানা গিয়েছে, ছাত্র সংসদের ১৪৩ জন সদস্যের মধ্যে এ দিন ১০৭ জন উপস্থিত ছিলেন। এঁদের মধ্যে ৩০ জন টিএমসিপি’র জেলা সভাপতির অনুগামী বলে পরিচিতদের তৈরি প্যানেলের পক্ষে ছিলেন। বাকি ৭৭ জনই বিক্ষুব্ধ বলে পরিচিতদের তৈরি প্যানেলের পক্ষে ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে কক্ষ ত্যাগ করেন ৩০ জন। জেলা সভাপতির অনুগামী বলে পরিচিতরা তাঁদের তৈরি প্যানেল জমা না-দিয়েই বেরিয়ে আসেন।

সোমবারই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়। ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, ভোট হওয়া ১৮টি আসনের মধ্যে টিএমসিপি পেয়েছে মাত্র ৬টি আসন। কেন এমন ফল হল তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয় সংগঠনের অন্দরেই। অনেকের মতে, এটা সাংগঠনিক ব্যর্থতারই পরিণতি। পরিস্থিতি যা তাতে সব আসনে লড়াই হলে ছাত্র সংসদ হাতছাড়াও হতে পারত।

ঠিক ছিল, মঙ্গলবার ছাত্র সংসদ গঠিত হবে। সেই মতো এ দিন সকাল থেকে সংসদ গঠন নিয়ে টিএমসিপির তৎপরতা শুরু হয়। সূত্রের খবর, গোড়ায় দু’টি প্যানেল জমা দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করে বিবাদমান দু’পক্ষ। একদিকে ছিলেন টিএমসিপি’র জেলা সভাপতির অনুগামীরা। অন্য দিকে বিক্ষুব্ধরা। জেলা সভাপতির অনুগামী বলে পরিচিতরা যে প্যানেলটি তৈরি করেন, সেখানে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিশ্বনাথ দাসের নাম প্রস্তাব করা হয়। তিনিই বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের টিএমসিপি’র সভাপতি। সহ-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে স্বদেশ সরকারের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। অন্য গোষ্ঠী যে প্যানেলটি তৈরি করেছিলেন, সেখানে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে স্বদেশ সরকার এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রাজদীপ সিংহের নাম প্রস্তাব করা হয়। শেষমেশ অবশ্য এই প্যানেলটিই জমা পড়ে এবং সংসদ গঠিত হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

vidyasagar university college election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE