পশ্চিম মেদিনীপুরে চালু হতে চলেছে ৩৯টি নতুন প্রাথমিক স্কুল। ইতিমধ্যে রাজ্য থেকে স্কুলগুলির জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদনও মিলেছে। নতুন প্রাথমিক স্কুলগুলোতে চলতি শিক্ষাবর্ষে জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে পঠনপাঠন শুরু করার চেষ্টা চলছে। জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র বলেন, “রাজ্য থেকে ৩৯টি নতুন প্রাথমিক স্কুলের অনুমোদন মিলেছে। এই সব স্কুলে চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই পঠনপাঠন শুরু হবে।” আপাতত, সংশ্লিষ্ট এলাকার কোনও ঘরে স্কুল চলবে। আগামী দিনে এই সব স্কুলের জন্য নতুন ভবন তৈরি হবে। নতুন স্কুলগুলোর ভবন তৈরির জন্য ইতিমধ্যে ৮ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দও হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সদ্য অনুমোদনপ্রাপ্ত প্রাথমিক স্কুলগুলির মধ্যে বিনপুর- ১ ব্লকে রয়েছে ১টি, বিনপুর- ২ ব্লকে ৭টি, চন্দ্রকোনা- ১ ব্লকে ১টি, দাঁতন- ১ ব্লকে ১টি, দাঁতন- ২ ব্লকে ১টি, গড়বেতা- ১ ব্লকে ১টি, গড়বেতা- ২ ব্লকে ২টি, ঘাটালে ৩টি, জামবনিতে ৭টি, খড়্গপুর- ২ ব্লকে ২টি, মেদিনীপুর (সদর)-এ ১টি, মোহনপুরে ৫টি, নারায়ণগড়ে ৩টি এবং নয়াগ্রামে রয়েছে ৪টি স্কুল রয়েছে। সদ্য অনুমোদনপ্রাপ্ত এই স্কুলগুলোর জন্য শিক্ষকেরও ব্যবস্থা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী এলাকার যে সব স্কুলে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত শিক্ষক ছিল, সেই সব স্কুলের এক বা একাধিক শিক্ষককে নতুন স্কুলে পড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদবাবু বলেন, “নতুন প্রাথমিক স্কুল চালুর ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকার ছাত্রছাত্রীরাই উপকৃত হবে।” তিনি জানান, কোন কোন এলাকায় প্রাথমিক স্কুল চালু করা প্রয়োজন, তার একটি তালিকা আগেই রাজ্যে পাঠানো হয়েছিল। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে রাজ্য থেকে ৩৯টি নতুন প্রাথমিক স্কুল চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেই মতোই জেলাস্তরে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
আগে জেলায় প্রাথমিক স্কুল ছিল প্রায় ৪,৭০০টি। স্থায়ী শিক্ষক- শিক্ষিকা ছিলেন প্রায় ১৪ হাজার ৭০০ জন। পার্শ্বশিক্ষক ছিলেন প্রায় ১ হাজার ৪০০ জন। মাস কয়েক আগে নতুন করে প্রায় ১ হাজার ৫০০ জন প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। জেলায় প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা সাড়ে ৩ লক্ষেরও বেশি। নিয়মানুযায়ী, আগে ৪০ জন ছাত্রপিছু ১ জন শিক্ষক থাকার কথা ছিল। এখন ৩০ জন ছাত্র পিছু ১ জন শিক্ষক থাকার কথা। সেই অর্থে ছাত্রছাত্রীর তুলনায় জেলায় শিক্ষক বেশিই রয়েছে। তাও সব স্কুলে ছাত্র-শিক্ষক সংখ্যার অনুপাতে সামঞ্জস্য নেই। দেদার বদলির জেরে সমস্যা আরও জটিল হয়েছে। শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদবাবুর অবশ্য দাবি, “সমস্যার সমাধানে ইতিমধ্যে পদক্ষেপ করা হয়েছে।”
অন্য দিকে, অনুমোদনপ্রাপ্ত যে সব জুনিয়র হাইস্কুলে শিক্ষক-সমস্যা রয়েছে, সেখানেও দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ করার জন্য তৎপরতা শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অতিথি-শিক্ষকই নিয়োগ করা হয়। অতিথি-শিক্ষক হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদেরই নিয়োগ করা হয়। জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে সমীক্ষা করে দেখা যায়, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৭৫০টি জুনিয়র হাইস্কুল চালু করা প্রয়োজন। বিষয়টি রাজ্যেও জানানো হয়। সেই মতো ২০০৯ সালে ২৯৭টি, ২০১১ সালে ১৭৫টি, ২০১২ সালে ৪৬টি এবং ২০১৩ সালে ৬৭টি জুনিয়র হাইস্কুল চালুর অনুমোদনও মেলে। ২০০৯ ও ২০১১ সালে অনুমোদনপ্রাপ্ত স্কুলগুলোতে এসএসসি’র মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। তবে ২০১২ এবং ২০১৩ সালে অনুমোদনপ্রাপ্ত স্কুলগুলোতে এসএসসি’র মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ এখনও হয়নি। স্কুলপিছু ২ জন করে অতিথি-শিক্ষক নিয়োগ করা যায়। ওই ১১৩টি স্কুলের মধ্যে ৮৮টি স্কুলে অতিথি-শিক্ষক নিয়োগ ইতিমধ্যে হয়েছে। তবে বাকি ২৫টি স্কুলে এখনও শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। প্রয়োজন ছিল ৭৫০টির অনুমোদন। মিলেছে ৫৮৫টির অনুমোদন। শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ বলেন, “জেলা থেকে তালিকা পাঠানো হয়েছে। এগুলো রাজ্যের বিবেচনার মধ্যে রয়েছে। আশা করি, আগামী দিনে আরও বেশ কয়েকটি
জুনিয়র হাইস্কুল চালুর অনুমোদন জেলা পাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy