Advertisement
০১ মে ২০২৪
State news

মারধর করে কী হবে? শ্লীলতাহানি করলে সরাসরি অঙ্গচ্ছেদ! বিতর্কে তৃণমূল নেতা

শ্লীলতাহানির শাস্তি অঙ্গচ্ছেদ! শাসকদলের এক নেতার কাছ থেকেই এমন ‘নিদান’ মিলেছে! শ্লীলতাহানির বিচার করতে সালিশি সভার আয়োজন করেছিলেন কালনার এক তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য। সেখানে সাজা হিসাবে শুধুমাত্র অভিযুক্তকে মারধর করেই শান্ত হননি শাসক দলের নেতারা।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৬ ১৩:৪৪
Share: Save:

শ্লীলতাহানির শাস্তি অঙ্গচ্ছেদ! শাসকদলের এক নেতার কাছ থেকেই এমন ‘নিদান’ মিলেছে! শ্লীলতাহানির বিচার করতে সালিশি সভার আয়োজন করেছিলেন কালনার এক তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য। সেখানে সাজা হিসাবে শুধুমাত্র অভিযুক্তকে মারধর করেই শান্ত হননি শাসক দলের নেতারা। উপরন্তু শাসক দলের এক নেতা তাঁর অঙ্গচ্ছেদেরও নিদান দেন! খোদ শাসক দলের নেতার মুখে এমন নিদান শুনে এখন দলের অন্দরেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। অধিকাংশই অবশ্য বিষয়টিকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। কালনা ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি উমাশঙ্কর সিংহরায় যেমন প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে অবশ্য বলেন, ‘‘দল এটাকে মান্যতা দেয় না। এমন বলে থাকলে দল ব্যবস্থা নেবে।’’ আর যিনি এই নিদান দিয়েছেন? এমন নিদানের পরে সেই শ্যামল কুমারের সঙ্গে যোগাযোগের অনেক চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

ঠিক কী হয়েছিল?

ঘটনার সূত্রপাত সোমবার। কালনার ধর্মডাঙা এলাকার এক গৃহবধূ স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের কাছে এলাকার এক প্রৌঢ়ের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানান। তাঁর অভিযোগ, ওই রাতে স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। সে সময় এলাকারই বাসিন্দা ওই প্রৌঢ় দরজায় কড়া নাড়েন। দরজা খুলতেই তাঁর শ্লীলতাহানি করেন বলে অভিযোগ। ওই বধূর মুখ থেকে সবটা শোনেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য শোভা রায়। পুলিশের কাছে যাওয়ার পরামর্শ না দিয়ে তিনি নিজেই সালিশি সভা ডেকে বসেন। পরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার এলাকার একটি ক্লাবে কয়েকজন তৃণমূল নেতা এবং ক্লাবের সদস্যদের নিয়ে সেই সালিশি সভার আয়োজন করা হয়। ডাকা হয় ওই বধূ এবং অভিযুক্ত প্রৌঢ়কেও।

আরও পড়ুন: নিজের পায়ে দাঁড়াবই, যুদ্ধে কন্যারা

প্রৌঢ়ের বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, সালিশি সভা চলাকালীনই আচমকা প্রৌঢ়কে জুতো দিয়ে পেটাতে শুরু করেন অভিযোগকারী গৃহবধূ। সকলের সামনে এই ঘটনা ঘটলেও কেউ তাঁকে বাধা দেননি। বেধড়ক মারে সালিশি সভা চলাকালীনই তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়েন। তাঁকে কালনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সালিশি সভার খবর ছড়িয়ে পড়ার পরেই সংবাদমাধ্যম কালনা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শ্যামলকুমার দাঁ-র কাছে বিষয়টি জানতে চায়। যদিও তিনি এই সভায় উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু সব শুনে আরও একধাপ এগিয়ে মন্তব্য করে বসেন শ্যামলকুমার। সরাসরি ওই প্রৌঢ়ের অঙ্গচ্ছেদের নিদান দিয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘‘সালিশি সভা, মারধর, এ তো কিছুই নয়, ওঁর অঙ্গচ্ছেদ করা উচিত ছিল।’’

এক নেতার সালিশি সভা আর এক নেতার অঙ্গচ্ছেদের নিদান এই দুইয়ের ফলে এখন দলের অন্দরেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। এর পর অবশ্য আর শ্যামলকুমারবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। কিন্তু তাঁর মন্তব্যের জেরে কালনা শাসক দল তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে। বর্ধমান জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘বিষয়টা কানে এসেছে। আমরা দেখছি। ঘটনা সত্যি হলে দল ব্যবস্থা নেবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

molestation amputation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE