Advertisement
২৩ মে ২০২৪

প্রেসিডেন্সিতে ফাঁকা ৩০০-র বেশি আসন

স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের অভিযোগ, স্নাতক স্তরে তৃতীয় পর্ব পর্যন্ত কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করে আসন ভরানোর চেষ্টা করা হলেও তা সফল হয়নি।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

মধুমিতা দত্ত
শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৩৯
Share: Save:

গত বছরের মতো একই মলিন ছবি। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের সব আসনে ছাত্র টানতে পারল না প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়। সব মিলিয়ে কমপক্ষে ৩০৫টি আসন ফাঁকা পড়ে রয়েছে।

রাজ্যের প্রথম সারির এক বিশ্ববিদ্যালয়ের এই হাল দেখে বিস্মিত শিক্ষকমহল। তাঁদের মতে, সমস্যার শিকড় কোথায়, তা খতিয়ে দেখার সময় এসেছে। কেউ বলছেন, বারবার কলেজ কর্তৃপক্ষ বনাম পড়ুয়াদের গোলমালের জেরে প্রেসিডেন্সির ভাবমূর্তি মার খেয়েছে। তাই প্রেসিডেন্সিতে ভর্তি হয়েও দিল্লি, বেঙ্গালুরু বা মুম্বইয়ে পাড়ি দিতে পিছপা হননি পড়ুয়ারা। আর এ সব ক্ষেত্রেই উঠে এসেছে ভর্তি ব্যবস্থায় গলদের প্রসঙ্গ।

স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের অভিযোগ, স্নাতক স্তরে তৃতীয় পর্ব পর্যন্ত কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করে আসন ভরানোর চেষ্টা করা হলেও তা সফল হয়নি। স্নাতকোত্তরের ক্ষেত্রে সেই চেষ্টাটুকুও করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন প্রেসিডেন্সির ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক অরিন্দম ডলই। মঙ্গলবার তিনি জানান, স্নাতক স্তরে ৬৫৬টি আসনের মধ্যে ফাঁকা পড়ে রয়েছে প্রায় ১৮০টি আসন। স্নাতকোত্তরে ১২৫টি আসন।

প্রেসিডেন্সিতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে এখন ভর্তির পরীক্ষা নেয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। পড়ুয়াদের অভিযোগ, ছাত্র ভর্তির ওয়েটিং লিস্টও এ বার খুবই ছোট প্রকাশ করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, যাঁরা ভর্তি হয়েছেন তাঁদের মধ্যে অনেকে আবার প্রেসিডেন্সি ছেড়ে চলেও গিয়েছেন।

প্রেসিডেন্সিরই এক পড়ুয়ার বক্তব্য, স্নাতক স্তরে পড়লেও অনেকে স্নাতকোত্তর স্তরে আর পড়তে চান না। অনেকেই রাজ্যের বাইরে পড়তে চলে যাচ্ছেন।
স্নাতক স্তরের ক্ষেত্রে কিছু পড়ুয়া রাজ্যের বাইরে না গেলেও পরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়ে চলে যাচ্ছে। ওই পড়ুয়ার যুক্তি, আগে যে ধরনের বড় নাম প্রেসিডেন্সির শিক্ষক তালিকায় থাকত, এখন আর তা নেই। পড়ুয়াদের মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার এটাও অন্যতম কারণ।

প্রেসিডেন্সির পূর্বতন ডিন অব সায়েন্স সোমক রায়চৌধুরীর যুক্তি, প্রেসিডেন্সিতে শিক্ষকের ঘাটতি রয়েছে। কিন্তু নিজের বিষয় পদার্থবিদ্যা নিয়ে তাঁর বক্তব্য, যে পাঠ্যক্রম পদার্থবিদ্যায় প্রেসিডেন্সিতে পড়ানো হয় তা খুবই আধুনিক। তারপরও আসন ফাঁকা থাকার বিষয়টিতে সোমকবাবু বিস্মিত।

এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া। ডিন অব সায়েন্স অরবিন্দ নায়েক জানালেন, স্নাতক স্তরে তৃতীয় পর্বের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হলেও স্নাতকোত্তরে তা করা সম্ভব হয়নি। কারণ তত দিনে বেশ কিছু ক্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে। তিনি জানান, অনেক পড়ুয়া ভর্তি হয়েও প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। তাই প্রথম দিকে সেই সব খালি আসন পূরণ করা যাচ্ছে না।

এ বছর সব তথ্য পেতে বেশ দেরি হওয়ায় আর স্নাতকোত্তর স্তরে তৃতীয় দফায় কাউন্সেলিং করা যায়নি। আগামী শিক্ষাবর্ষে এই প্রবণতা রুখতে কর্তৃপক্ষ কি ব্যবস্থা নেবেন? অরবিন্দবাবুর উত্তর, ‘‘দেখা যাক। কিছু একটা সমাধান বার করতেই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE