Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Mother kept daughter's corpse

৫ দিন মেয়ের দেহ আগলে রাখলেন মা, আতঙ্ক বেলঘরিয়ায়

দেহে প্রাথমিক ভাবে কোনও আঘাতের চিহ্ন বা অস্বাভাকিতা পাননি তদন্তকারীরা।

গ্রাফিক: সৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: সৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২০ ১৮:৪৮
Share: Save:

মেয়ের মৃতদেহ আগলে পাঁচ দিন ধরে ঘরবন্দি হয়ে রইলেন মা। ঘটনাটি ঘটেছে বেলঘরিয়া থানা এলাকার বিএন ঘোষাল রোডে। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি জানাজানি হতেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। কারণ, এখনও স্পষ্ট নয় কী ভাবে মারা গিয়েছেন ওই মহিলার মেয়ে।

কামারহাটি পুরসভার বিএন ঘোষাল রোডের বাসিন্দা বছর ষাটেকের জয়া ভট্টাচার্য এবং তাঁর মেয়ে পারমিতা (৩৭)। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বাড়িরই অন্য অংশের বাসিন্দা রেখা দে এ দিন জয়াদেবীর কাছে গিয়েছিলেন খোঁজখবর নিতে। তাঁর স্বামী শ্যামল দে প্রতিবেশীদের জানিয়েছেন, এক বছর আগে জয়াদেবীর স্বামীর মৃত্যু হয়। তিনি অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী ছিলেন। তার পর থেকেই মা-মেয়ে থাকতেন। পাড়ায় কারও সঙ্গে মেলামেশা ছিল না তাঁদের। আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল না।

বেশ কয়েক দিন মা-মেয়েকে দেখতে না পেয়ে রেখাদেবী খোঁজ নিতে যান। জানা গিয়েছে, জয়াদেবী দরজা খুলতে রেখা জানতে চান তাঁরা কেমন আছেন। রেখার দাবি, খুব নির্বিকার ভাবে জয়া বলেন যে, তিনি ভালই আছেন। তবে তাঁর মেয়ে পারমিতা কয়েকদিন আগে মারা গিয়েছেন। জয়ার এক প্রতিবেশী কৌশিক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জয়াদেবীর কথা শুনে রেখা জানতে চান যে পারমিতার অন্ত্যেষ্টি কখন হল? রেখাকে অবাক করে জয়া জানান যে, মেয়ের অন্ত্যেষ্টি হয়নি। দেহ ঘরেই রয়েছে। শুনেই প্রতিবেশীদের খবর দেন রেখা।’’

আরও পড়ুন: কোভিডে আক্রান্ত অফিসার, দিল্লিতে সিল করা হল নীতি-আয়োগ ভবন

প্রতিবেশীরা গিয়ে দেখেন শোওয়ার ঘরে বিছানার উপর পড়ে রয়েছে পারমিতার দেহ। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় বেলঘরিয়া থানায়। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় ময়নাতদন্তের জন্য। পুলিশ সূত্রে খবর, দেহে ব্যাপক ভাবে পচন ধরে গিয়েছিল। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, অন্তত ৭ দিন আগে মৃ্ত্যু হয়েছে পারমিতার। তবে পুলিশের কাছে জয়াদেবী দাবি করেছেন, পারমিতার মৃত্যু হয়েছে পাঁচ দিন আগে।

আরও পড়ুন: ‘মুসলিমদের থেকে সব্জি কিনবেন না’, করোনা এড়াতে বিতর্কিত পরামর্শ বিজেপি বিধায়কের

তবে, বার বার জিজ্ঞাসা করা সত্ত্বেও কী ভাবে পারমিতার মৃত্যু হয়েছে তা নিয়ে মুখ খোলেননি জয়াদেবী। দেহে প্রাথমিক ভাবে কোনও আঘাতের চিহ্ন বা অস্বাভাকিতা পাননি তদন্তকারীরা। তবে জেরায় জয়াদেবী পুলিশকে জানিয়েছেন, পারমিতা অসুস্থ ছিলেন। স্থানীয় কাউন্সিলর সুব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দিন দশেক আগে শেষ দেখা গিয়েছিল মা-মেয়েকে। দু’জনেই ওয়ার্ড কমিটির অফিস থেকে ত্রাণের চাল আনতে গিয়েছিলেন।” প্রতিবেশীদের দাবি, মা-মেয়ে দু’জনেরই মানসিক অসুস্থতা রয়েছে।

ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা পাড়ায়। কল্লোল মুখোপাধ্যায় নামে এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ‘‘কী ভাবে পারমিতার মৃত্যু তা স্পষ্ট নয়। কোভিডে আক্রাম্ত হয়েছিলেন কি না তাও বোঝা যাচ্ছে না। ফলে আমরা ভয় পাচ্ছি খুব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Belghoria
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE