Advertisement
E-Paper

প্রধানশিক্ষককে মেরেছেন পার্শ্বশিক্ষক! মুর্শিদাবাদে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ ধ্বনি তুলে পথে কচিকাঁচারা

মুর্শিদাবাদের ইসলামপুরে গোয়াস কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ঘটনা। স্কুল থেকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরা নিয়ে স্কুলের প্রধানশিক্ষক শঙ্করচন্দ্র দাস ও পার্শ্বশিক্ষক জিয়াউল হকের মধ্যে বিবাদ হয়েছিল গত বুধবার।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৪ ১৮:৩৫
—নিজস্ব চিত্র।

—নিজস্ব চিত্র।

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে ‘রাত দখলের’ কর্মসূচিতে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ ধ্বনি তুলে সুর চড়িয়েছিলেন মেয়েরা। তার পর থেকে কলকাতা শহর তো বটেই, রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তে সমস্ত প্রতিবাদ-মিছিলে ধারাবাহিক ভাবে ধ্বনিত হচ্ছে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’! সেই স্বর এ বার মুর্শিদাবাদের একটি স্কুলের কচিকাঁচাদের গলাতেও শোনা গেল। তবে এ ক্ষেত্রে প্রেক্ষিত আরজি কর-কাণ্ড নয়। খুদেদের প্রতিবাদের কারণ, তাদের স্কুলের প্রধানশিক্ষককে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছেন এক পার্শ্বশিক্ষক। সেই পার্শ্বশিক্ষকের শাস্তির দাবি তুলেছে তারা।

মুর্শিদাবাদের ইসলামপুরে গোয়াস কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ঘটনা। স্কুল থেকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরা নিয়ে স্কুলের প্রধানশিক্ষক শঙ্করচন্দ্র দাস ও পার্শ্বশিক্ষক জিয়াউল হকের মধ্যে বিবাদ হয়েছিল গত বুধবার। অভিযোগ, সেই সময় স্কুলের ঘণ্টা বাজানোর হাতুড়ি দিয়ে মেরে প্রধানশিক্ষকের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলেন জিয়াউল। এর পরেই তিনি স্কুল থেকে চম্পট দেন। জখম প্রধানশিক্ষক বর্তমানে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। প্রধানশিক্ষকের উপর ওই হামলার ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার পথে নামলেন স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকেরা। অভিযুক্তের গ্রেফতারি ও কঠোরতম শাস্তির দাবিতে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন তাঁরা। সেখানেই ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ ধ্বনি তুলতে দেখা গেল স্কুলের কচিকাঁচাদের। আতিক মণ্ডল নামে এক ছাত্র বলে, ‘‘ওই পার্শ্বশিক্ষক কোনও দিন ভালও করে ক্লাস নেন না। প্রধানশিক্ষকের সঙ্গে প্রায়ই খারাপ আচরণ করেন উনি। আমরা এ সব ঘটনা প্রত্যেক দিন দেখি। পার্শ্বশিক্ষকের শাস্তি চাই।’’

পরে বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ও রানিনগর ১-এর বিডিও। তাঁরা পড়ুয়াদের দাবিকে মান্যতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে খবর স্কুল সূত্রে। ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস’ সংগঠনের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘অভিযুক্তের শাস্তির দাবিতে আমরা আজ প্রতিবাদ করেছি। রাস্তা অবরোধ করা হয়েছিল।’’

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান ছিল। কিন্তু ওই ব্যস্ত দিন টিফিনের ঘণ্টা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি যেতে চেয়েছিলেন ওই পার্শ্বশিক্ষক। সেই সময় স্কুলের প্রধানশিক্ষক তাঁকে বাচ্চাদের মিড ডে মিল খাওয়া শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন। কিন্তু পার্শ্বশিক্ষক তাতে রাজি হননি। প্রধানশিক্ষকের সঙ্গে রীতিমতো তর্ক জুড়ে দেন। অভিযোগ, বচসার সময় পাশে রাখা স্কুলের ঘণ্টা বাজানোর হাতুড়ি দিয়ে অতর্কিতে প্রধানশিক্ষকের মাথায় আঘাত করেন। একাধিক বার হাতুড়ি দিয়ে মাথায় মারা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় গুরুতর ভাবে মাথায় চোট পান প্রধানশিক্ষক। হইহট্টগোল শুনে অন্য শিক্ষকেরা ছুটে গেলে সুযোগ বুঝে স্কুল থেকে পালিয়ে যান অভিযুক্ত পার্শ্বশিক্ষক। এর পর স্কুলের অন্য শিক্ষকেরা প্রধানশিক্ষককে উদ্ধার করে ইসলামপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়া তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বর্তমানে ওই প্রধানশিক্ষকের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে। প্রধানশিক্ষক শঙ্কর বলেন, ‘‘আমি ওঁকে (পার্শ্বশিক্ষককে) বলেছিলাম বাচ্চাদের মিড ডে মিল খাওয়া শেষ হলে বাড়ি যেতে। কিন্তু তত ক্ষণ অপেক্ষা করতে চাননি। তখনই হাতুড়ি দিয়ে হামলা করেন।’’ অভিযুক্ত পার্শ্বশিক্ষকের সঙ্গে অবশ্য যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

Murshidabad
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy