অনির্বাণ নন্দী। ফাইল চিত্র।
রাত পৌনে ৮টা। নিজের ফেসবুক পেজে নতুন একটা ছবি পোস্ট করেছিলেন। রেল লাইনের পাশের রাস্তায় দাঁড়ানো সেই ছবির স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘বাই’!
এমনকী, বন্ধুদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকেও বেরিয়ে গিয়েছিলেন অনির্বাণ নন্দী নামে ওই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। সোমবার তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রেল লাইন থেকে উদ্ধার হল অনির্বাণের দেহ। স্বাভাবিক ভাবেই এটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি আত্মহত্যা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বরাহনগরের গোপাললাল ঠাকুর রোডে। পরীক্ষার্থীর মৃতদেহটি উদ্ধার হয়েছে হাওড়া শাখার বালি স্টেশনের কাছে। বছর আঠারোর অনির্বাণ কেন অত রাতে বালি স্টেশনে গিয়েছিলেন, তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন।
যদিও প্রাথমিক তদন্তের পর রেল পুলিশের অনুমান, নিয়ম ভেঙে লাইন পার হতে গিয়েই ট্রেনের ধাক্কায় ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। রেল সূত্রে খবর, ওই দিন রাত ১১টা ৫ মিনিট নাগাদ হাওড়ামুখী বর্ধমান লোকাল বালি স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে কিছুটা এগোতেই ওই ছাত্রকে ধাক্কা মারে। বালিহল্ট সেতু পার করে প্রায় ২০০ মিটার দূরে গিয়ে পড়ে অনির্বাণের দেহ। ঘটনার পরে লোকাল ট্রেনটি দাঁড়িয়ে যায়। খবর পেয়ে বেলুড় জিআরপি-র কর্মীরা এসে দেহ তুলে নিয়ে যাওয়ার পরে ফের ছাড়ে ট্রেনটি।
পরে ওই লোকাল ট্রেনের গার্ড যে মেমো বালি স্টেশনে জমা দিয়েছেন তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, যে জায়গায় ধাক্কা লেগেছিল, সেখান দিয়েই যাত্রীরা বেআইনি ভাবে রেললাইন পার করে বালি স্টেশনের শেষ প্রান্তে গিয়ে বালিহল্ট সেতুতে ওঠেন।
আরও পড়ুন: শামিকে দেখতে মেয়েকে নিয়ে দিল্লিতে হাসিন
ছাত্রের পকেটে পাওয়া আধার কার্ড দেখেই বরাহনগর থানায় খবর দেওয়া হয়। তার পরেই বরাহনগর থানার পুলিশ অনির্বাণের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। মঙ্গলবার অনির্বাণের বাবা অমরনাথবাবু বলেন, ‘‘মাঝে মধ্যে রাতে রিষড়ায় এক বন্ধুর বাড়িতে যেত। কিন্তু ওই দিন কোথায় গিয়েছিল, কী ভাবে এমন ঘটল কিছুই বুঝতে পারছি না।’’
গোপাললাল ঠাকুর রোডের বাসিন্দা অমরনাথবাবুর ছোট ছেলে অনির্বাণ। বরাহনগরের জ্যোতিনগর হাই স্কুলে কর্মাসের ছাত্র ছিল। অমরনাথবাবু জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বাড়িতে মোবাইল চার্জে বসিয়ে বেরিয়েছিল অনির্বাণ। এর পরে আর বাড়ি ফেরেনি। নিহত ছাত্রের এক বন্ধু শৌভিক দত্ত বলেন, ‘‘সাড়ে ৯টা নাগাদ দেখা হতেই বলেছিল বাড়ির জন্য রুটি আনতে যাচ্ছি। এর পরে আর দেখা হয়নি।’’
আরও পড়ুন: ফিরিয়ে দে চোখ, টেনে চড় যুবককে
অনির্বাণের দাদা অরিন্দম জানান, পাড়ার ক্লাবে ক্যারাম খেলতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিল সে। ইদানীং পড়াশোনা না করার জন্য বাবা-মা বকাবকিও করতেন অনির্বাণকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy