ফাঁকা ক্লাসরুমে বসে নিবিষ্ট মনে মোবাইলে খুটখাট করছেন এক পড়ুয়া।
‘‘ক্লাস নেই? কী করছ?’’
‘‘এখন ক্লাস নেই। কয়েকটা বিষয় গুগলে সার্চ করছি,’’ জবাব পড়ুয়ার।
ওই পড়ুয়া অবশ্য জানতেন না যে, প্রশ্নকর্তা ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যক্রিডিটেশন কাউন্সিল বা নাক-এর পরিদর্শকদলের সদস্য। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের বাণিজ্য বিভাগে এই অভিজ্ঞতার পরে বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিদর্শকদের পরামর্শ, ‘‘সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে পঠনপাঠনেও যতটা সম্ভব আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা উচিত।’’
সোমবার, পরিদর্শনের প্রথম দিনেই ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে নাক-এর প্রতিনিধিদের বৈঠকে পড়ুয়ারা জানিয়েছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্যাম্পাসে ওয়াইফাই পরিষেবা পাওয়া যায় না। এ যুগে পঠনপাঠনে প্রযুক্তি ব্যবহার করা যে জরুরি, ছাত্রছাত্রীদের মুখোমুখি বসে সেটা জানিয়েছিলেন নাক-পরিদর্শকেরা। বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকেও যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে প্রযুক্তিকে সঙ্গী করে নেওয়ার কথা বলেন তাঁরা। ‘‘নাক বারে বারেই প্রযু্ক্তি ব্যবহারের উপরে জোর দিতে বলছে,’’ এ দিন বলেন সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) স্বাগত সেন। শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানান, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু সল্টলেক ক্যাম্পাসেই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি রয়েছে। ওই ক্যাম্পাসটি ন্যানো ক্যাম্পাস নামে পরিচিত।
কিন্তু সেই প্রযুক্তি বাকি সব ক্যাম্পাসে নেই। নাকের প্রতিনিধিদলটি প্রতিটি ক্যাম্পাসেই স্মার্ট ক্লাসরুম, ওয়াইফাই পরিষেবা-সহ সব রকম প্রযুক্তির পক্ষে সওয়াল করেছে। ক্যাম্পাস ছাড়াও হস্টেলগুলিতে ওয়াইফাই পরিষেবার কথা বলেছে তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞ মহলও মনে করছে, নাক-এর এই পর্যবেক্ষণ সম্পূর্ণ ভুল নয়। ছাত্র সংসদের ঘরে যেখানে সর্বক্ষণ এলইডি টিভি চলে, সেখানে ক্লাসরুমগুলিতে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আরও ভাবা উচিত কর্তৃপক্ষের। নাক-ও জানায়, দেড়শো বছরের পুরনো এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠনের স্বার্থে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। গবেষণার প্রশংসা করলেও শিক্ষকদের আরও সচেতন হতে বলেছে নাক।