Advertisement
০২ মে ২০২৪
বাঁধের কাজের বরাত নিয়ে গোলমাল

বোমা বাঁধতে গিয়ে মৃত দুই

বোমা বাঁধতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কেতুগ্রাম থানার চেঁচুরি গ্রামের মোড়লপুকুর এলাকার ঘটনা।পুলিশের দাবি, কুঁয়ে নদীর বাঁধ সংস্কারের জন্য মাটি ফেলার বরাত নিয়ে কয়েকদিন ধরেই গোলমাল চলছিল স্থানীয় দুই ঠিকাদারের মধ্যে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেতুগ্রাম ও কান্দি শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৬ ০৬:৪৭
Share: Save:

বোমা বাঁধতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কেতুগ্রাম থানার চেঁচুরি গ্রামের মোড়লপুকুর এলাকার ঘটনা।

পুলিশের দাবি, কুঁয়ে নদীর বাঁধ সংস্কারের জন্য মাটি ফেলার বরাত নিয়ে কয়েকদিন ধরেই গোলমাল চলছিল স্থানীয় দুই ঠিকাদারের মধ্যে। তার জেরেই এই ঘটনা। যদিও মৃত গোলাম মেহবুব শেখ (২৪) ও বাবু মাঝি (৩৫) এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। ওই দুই ঠিকাদারও তৃণমূল ঘনিষ্ঠ। ফলে বাঁধের কে কাজ পাবে সেই লড়াইয়ে জড়িয়ে গিয়েছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও। তৃণমূলের নেতারা যদিও ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও রকম যোগাযোগের কথা মানতে চাননি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কেতুগ্রামের সীমান্ত লাগোয়া কুঁয়ে নদীর বাঁধ সংস্কারের কাজ সম্প্রতি শুরু করেছে কান্দি মহকুমা সেচ দফতর। বাঁধে মাটি ফেলার জন্য ২৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। তার মধ্যেই ওই কাজ কে করবে তা নিয়ে মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের শ্যামপুর-চাঁচোয়া, কাশীপুর এলাকার তৃণমূল ঘনিষ্ঠ দুই ঠিকাদারের মধ্যে গোলমাল বেধে যায়। এক দিন বোমাবাজি, সংঘর্ষও বাধে দু’পক্ষের। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে সানোয়ার শেখ ও সুখচাঁদ শেখ নামে দুই নেতার গোষ্ঠীর মধ্যে ওই ঝামেলা বেধেছিল। ১৫ জুন দু’জনকেই গ্রেফতার করে ভরতপুর থানার পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই বাঁধ সংস্কারের মূল ঠিকাদার গোষ্ঠী ও স্থানীয় পঞ্চায়েতের নেতাদের উপস্থিতিতে দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানে ঠিক হয়, দু’পক্ষই অর্ধেক করে মাটি ফেলার কাজের দায়িত্ব নেবে।

তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, ওই মীমাংসার পরে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ সানোয়ার শেখ ও সুখচাঁদ শেখের লোকেরা মাটি ফেলার কাজ শুরু করে। দু’পক্ষই এক দিন করে মাটি ফেলে বাঁধে। তার মধ্যেই আবারও গোলমাল বেধে যায়। স্থানীয় সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানার এক কেবল্‌ ব্যবসায়ী শ্যামপুর এলাকা থেকে কাজ সেরে রোদের তাপ থেকে বাঁচতে মুখে রুমাল বেঁধে মোটরবাইক চালাচ্ছিলেন। অভিযোগ, সুখচাঁদের দলবল ওই ব্যবসায়ীকে সানোয়ারের লোক ভেবে মারধর করে। পাল্টা হামলায় তৈরি হয় সানোয়ারের লোকজনও। অভিযোগ, সুখচাঁদ কেতুগ্রামের চেঁচুরি থেকে দুষ্কৃতী ভাড়া করে সানোয়ারের লোকজনকে হুমকি দেয়। চলে পাল্টা হুমকি। পুলিশের দাবি, জেল থেকে ছাড়া পেলে আবারও গোলমাল পাকানোর জন্য লোকজন দিয়ে বোমা তৈরির কাজ চালাচ্ছিল ওই দুই নেতা। মঙ্গলবার কেতুগ্রামে সুখচাঁদের হয়ে বোমা বাঁধতে গিয়ে বোমা ফেটে বাবু ও গোলাম আহত হন বলেও পুলিশে দাবি। রাতেই কাটোয়া হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় দু’জনকে। বুধবার ভোরে সেখানেই মারা যান তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সানোয়ার বছর তিনেক আগে বামফ্রন্টের শরিকদল আরএসপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেয়। সুখচাঁদও কংগ্রেস ছেড়ে বছর দুই আগে তৃণমূলে নাম লেখায়। যদিও ভরতপুর ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি নূর আলমের দাবি, ‘‘ভরতপুরে তৃণমূলের কোনও গোষ্ঠী নেই। আর সানোয়ার ও সুখচাঁদ কেউই আমাদের দলের সাথে জড়িত নয়।’’ একই কথা কেতুগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জাহের শেখেরও। তিনি বলেন, ‘‘পুরোটাই বাঁধে মাটি ফেলা নিয়ে গ্রাম্য বিবাদ।’’

যদিও এ দিন কাটোয়া মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে মৃত বাবু মাঝির ভাই চাঁদকুমার মাঝি দাবি করেন, “আমার দাদা তৃণমূল করে। বোমা বাঁধতে গিয়েই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।” চেঁচুরি গ্রামে মৃতের প্রতিবেশিদেরও দাবি, তারা তৃণমূল কর্মী। এসডিপিও (কাটোয়া) শচীন মাঁকড় শুধু বলেন, “বোমা বাধতে গিয়ে দু’জন মারা গিয়েছেন। কেন এই ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

দেহ উদ্ধার: এক বধূর দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। বুধবার হরিহরপাড়ার মাগুরা গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম আলেয়া বিবি (২৭)। বছর পাঁচেক আগে রাকিব বিশ্বাসের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁর তিন বছরের পুত্র সন্তানও রয়েছে। মৃতের বাবা আবু হোসেন পুলিশকে অভিযোগে জানান, বিয়ের পর থেকেই তাঁর মেয়েকে নানা ভাবে অত্যাচার করতো জামাই। ব্যবসা করার জন্য বাড়তি টাকাও চায় মৃতার স্বামী। না পেয়েই তাকে শ্বাসরোধ করে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে তাকে খুন করেছে তার স্বামী। পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bomb Miscreants Police TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE