জলের জন্য অপেক্ষা। বেলডাঙায় তোলা নিজস্ব চিত্র।
জেলায় বেলডাঙাকে আর্সেনিকপ্রবণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে প্রশাসন। এই গরমে সেই এলাকায় টান পড়েছে তেষ্টার জলে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে যে টাইম কল রয়েছে তাতে দু’বেলা জল পড়লেও ধারা খুবই ক্ষীণ। ফলে লাইনে দাঁড়ানো অর্ধেক মানুষই জল পাচ্ছেন না। প্রায় দিনই জল নিয়ে ঝামেলা বাঁধছে। অনেকেই বাধ্য হন নলকূপের জল খেতে।
এ দিকে, গত রবিবার বিকেল থেকে সোমবার পযর্ন্ত জল পরিষেবা বন্ধ ছিল। সোমবার সকালে পুরসভার পক্ষে শহরে মাইক বাজিয়ে পরিষেবা বন্ধের কথা প্রচার করা হয়। মঙ্গলবার সকালেও জল পড়লেও তা খুব ধীরে ধীরে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেলডাঙার ১, ২, ৩ বা ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে টাইমকলে ঠিক মতো জল পড়ে না। কোথাও কোথাও পুরসভা নিজের উগ্যোগে ট্যাঙ্কিতে জল ভরে জল সরবারাহ করে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। জল পড়ে না বেলডাঙা-১ ব্লক হাসপাতালের কলেও। নাকাল হতে হয় রোগী ও বাড়ির আত্মীয়দের। কাছারিপাড়ার বাসিন্দা পূর্ণিমা মণ্ডল বলেন, ‘‘সকাল-বিকেল মিলিয়ে টেনেটুনে ঘণ্টা দেড়েক জল পড়ে। সকলে জল পান না। ফলে জলের জন্য মারামারি লেগেই রয়েছে।’’ ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝপাড়ার বাসিন্দা শর্মিলা বিবি বলেন, ‘‘সেই ভোররাতে উঠে গিয়ে লাইনে গিয়ে দাঁড়াই। তাতেও কোনও কোনও দিন জল মেলে না। মাথা ঠিক থাকে বলুন?’’
পাহারপাড়ার বাসিন্দা রোজিনা বেওয়া জানান, পাড়ায় কলের জল নেই। জল নিতে যেতে হয় মাঝপাড়ায়। তখন ও পাড়ার লোক তেড়ে আসে। মারামরিও হয়। পুরসভা যদি পাইপ লাইন বসায় তবে তাঁদের রোজ ঝামেলার মধ্যে পড়তে হয় না।
শহরের এই জলকষ্ট নিয়ে পুরসভাকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। বিজেপির শহর সভাপতি শঙ্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রায় সব কলেই সারা বছর জল পড়ে না। অনেক বাড়িতে সংযোগ থাকলেও জল পান না। ক্ষমতায় এসে কংগ্রেস শহরের জলকষ্ট দূর করবে বলেছিল। কিন্তু বছর পেরোলেও সমাধান অধরা থেকে গিয়েছে।’’
বেলডাঙা সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্পাদক ও পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান প্রিয়রঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘শহরের প্রায় অর্ধেক মানুষ জল পাচ্ছেন না। মাঝে দু’একবার সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে কোনও কাজ দেয়নি। ফলে সাধারণ মানুষকে নলকূপ বা কেনা জলের উপরই ভরসা করতে হচ্ছে।’’ বেলডাঙা পুরসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপির সুমিত ঘোষ জানান, ‘‘বেশ কিছু ওয়ার্ডে জলকষ্ট সারা বছরের ঘটনা। গ্রীষ্মে সেই সঙ্কট চরমে উঠেছে।’’
পুরপ্রধান কংগ্রেসের ভরত ঝাওর অবশ্য জলকষ্টের জন্য বাসিন্দাদের একাংশকে দায়ি করছেন। তিনি বলেন, ‘‘যাঁদের বাড়িতে সংযোগ রয়েছে তাঁরা বেআইনি ভাবে মোটর বসিয়ে জল তুলে নিচ্ছেন। ফলে অনেক মানুষ প্রয়োজনীয় জলটুকু পাচ্ছেন না। এই জল তোলা রুখতে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ করতে করেছি। আগের থেকে জলের যোগান অনেক ভাল। যেটুকু সমস্যা রয়েছে তা মেটানোর চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy