ঢাকঢোল পিটিয়ে একই সেতুর জন্য শিলান্যাস হয়েছে দু’দুবার। একবার বাম আমলে। এক বার এই আমলে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। নদীর উপর সেতু তৈরির সূচনা করেছিলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক আবীররঞ্জন বিশ্বাস। মঞ্চে দাঁড়িয়ে মন্ত্রী খুব শীঘ্রই সেতু তৈরি হবে বলে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর প্রায় আট মাস পেরিয়ে গেলেও একটা কোদালের কোপও পড়েনি।
একদিকে রানাঘাটের মাজদিয়া, অন্য দিকে আনুলিয়া গ্রাম। মাঝে চূর্নি। কমবেশি ২৫ হাজার মানুষ নদী পরিয়ে কাজে যান। প্রায় পাঁচশোর বেশি স্কুল পড়ুয়া লেখাপড়া করতে যায়। এই পথ দিয়ে ১০ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে বালাগড় ঘাট পার হয়ে হুগলিতে যাওয়া যায়। দীর্ঘ দিন থেকে এখানেই নদীর উপর দিয়ে সেতু হওয়ার কথা। কিন্তু, কাজের কাজ কিছুই হয় না।
এখন সেতু নিয়ে আশা হারিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মাজদিয়ার বাসিন্দা আশি ছুঁই ছুঁই প্রমথ ঘোষ বলেন, “মনে হয় না সেতু দেখে যাতে পারব। মন্ত্রী-নেতারা বারে বারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সবাই বলেছেন, খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। মাঝে মাঝে শোনা যায় পাথর লরি আসছে। বালির লরি আসছে। কিন্তু কিছুই আসে না। সেতু তো দূর, কাউকে কোদালের কোপও দিতে দেখলাম না।”
আরও এক বাসিন্দা ধীরেন ঘোষ বলেন, ‘‘সেতুর আশা ছেড়ে দিয়েছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘একটু রাত হলে খেয়া পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। অসুস্থ কাউকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হলে বিপাকে পড়তে হয়।’’
বছর সাতেক আগে বাম সরকাররে পরিবহণ মন্ত্রী প্রয়াত সুভাষ চক্রবর্তী সেতু তৈরির জন্য শিলান্যাস করেছিলেন। বাম আমলেও কিছু হয়নি। যদিও প্রাক্তন বিধায়ক ও সিপিএম নেতা অলোক কুমার দাসের দাবি, “কাজ খানিকটা এগিয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতা চলে যাওয়ায় এটা করা সম্ভব হয়নি।”
প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক আবীররঞ্জন বিশ্বাস বলেন, “বিধায়ক থাকার সময়ে কথা দিয়েছিলাম সেতু হবে। এখনও বলছি সেতু হবে। খানিকটা কাজ হয়ে গিয়েছে।” তাঁর দাবি, “সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়রেরা পরিদর্শন করেছেন। মাপজোকের কাজ শেষ হয়েছে।’’ নভেম্বরের শেষে অথবা ডিসেম্বরের শুরুতে সেতুর কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানান।
জেলা সেচ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, খুব শীঘ্রই সেতুর তৈরির জন্য টেন্ডার ডাকা হবে।