প্রতীকী ছবি।
ফসল নষ্ট হলে বিমা রয়েছে। এ বার বাড়ির দুধেল গাই অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ পাবেন মালিক। রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর সেই বিমা চালু করেছে।
গো-রাজনীতি নিয়ে দেশময় যখন গেল গেল রব, তখন রাজ্যের এমন প্রকল্প নিয়ে হইচই নেই। রাজ্যের তরফ থেকেও কোনও প্রচার নেই। সরকারি কর্তাদের দাবি, এটা নতুন কিছু নয়। গরুর বিমা বরাবরই চালু ছিল। মাঝে বছর দুয়েক তা বন্ধ ছিল। এ বার ফের তা চালু হয়েছে। তবে গাভীর বিমা প্রকল্পে সিংহভাগ খরচ দিচ্ছে রাজ্যই।
সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, রাজ্যে প্রায় দেড় লক্ষ গরুকে এই বিমার আওতায় আনা হবে। এ জন্য প্রায় ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করে জেলায় জেলায় পাঠানোও হয়েছে। গত জুন মাসের নির্দেশিকা জারি হলেও, বিমার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে গত অগস্ট থেকে। তিন বছরের বিমার জন্য চাষি দেবেন ১০০টাকা। বাকি ৫৯৪ টাকা দিচ্ছে সরকার। নদিয়া-মুর্শিদাবাদে গোরুর বিমা শুরু হয়েছে। গত দু’-তিন বছর ধরে নদিয়া-মুর্শিদাবাদে গাভীর বিমা প্রকল্প ছিলনা। রাজ্য থেকে অনুমোদন পেতেই ফের গাভীর বিমা শুরু হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে বিমা করা থাকলে গাভীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে ময়না তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়ে চাষি ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে পারবেন। বিমা কোম্পানি থেকে গাভীর মৃত্যুর জন্য সর্বোচ্চ ১৮ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে।
নদিয়ার হাঁসখালির দক্ষিণপাড়ার দিগন্ত বিশ্বাস বলছেন, “চার-পাঁচ বছর আগে একবার বিমা করেছিলাম। একটি গরু মারা যাওয়ার পর বিমা কোম্পানি থেকে কিছু টাকা পেয়েছিলাম। এ বারে এ বিষয়ে প্রচার এলাকায় নেই।” মুর্শিদাবাদের ডোমকলের তাঞ্জুরা বেওয়ার বছর দশেক আগে স্বামী মারা গিয়েছেন। তিনি গরুর দুধ বেচে সংসার চালান। তাঁর দাবী, “দীর্ঘদিন ধরে দুধ বিক্রি করে সংসার চালাই। কিন্তু কোনও দিন কেউ জানায়নি গরুর বিমা হয়।”
প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের মুর্শিদাবাদের উপ অধিকর্তা তারাশঙ্কর পান বলছেন, “এ বছর আমাদের জেলায় ৩০ হাজার দুগ্ধবতী গাভীর বিমা করার জন্য টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ১৪ হাজার গরুর বিমা করা হয়েছে।’’ প্রাণিসম্পদ দফতরের নদিয়া উপ অধিকর্তা সুফলচন্দ্র খান বলছেন, “আমাদের জেলাতেও গাভীর বিমার কাজ শুরু হয়েছে গত অগস্ট থেকে। নদিয়ার দুগ্ধ সমবায় সমিতি কিসান মিল্কের মাধ্যমেও তা করানো হচ্ছে।”
প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ন্যাশনাল লাইভস্টক মিশনের ‘রিস্ক ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় দুগ্ধবতী গাভীর বিমা করা হচ্ছে। রাজ্যের মধ্যে মুর্শিদাবাদ জেলায় সব থেকে বেশি গরুর বীমা করানো হচ্ছে। এর পরেই রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর। ওই জেলায় প্রায় ১৪ হাজার গোরুর বিমা করানো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy