Advertisement
১১ মে ২০২৪
Coronavirus

চাপড়াতেও এ বার হানা দিল করোনা

পর্যাপ্ত পিপিই, এন৯৫ মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার-সহ যাবতীয় নিরাপত্তার দাবিতে এ দিন শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের ওয়ার্ড ছেড়ে বেরিয়ে এসে বিক্ষোভ দেখান নার্সদের একাংশ।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

সুস্মিত হালদার 
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৩৯
Share: Save:

দিল্লি সংযোগে বার্নিয়ার পাঁচ জনের পরে ফের করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলল নদিয়ায়।

জেলাশাসক বিভু গোয়েল জানান, চাপড়ার বাসিন্দা ওই ব্যক্তিকে প্রথমে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে তাঁকে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে ‘সারি’ (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস) হাসপাতাল হিসেবে প্রস্তুত গ্লোকাল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। বুধবার রাতে রিপোর্ট এলে দেখা যায়, তিনি করোনা পজ়িটিভ। বৃহস্পতিবার তাঁকে কলকাতায় বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে ওই রোগীর সংস্পর্শে আসায় কোনও চিকিৎসক, নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মীকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হচ্ছে কি না, পাঠালে কত জনকে, তা রাত পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি।

পর্যাপ্ত পিপিই, এন৯৫ মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার-সহ যাবতীয় নিরাপত্তার দাবিতে এ দিন শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের ওয়ার্ড ছেড়ে বেরিয়ে এসে বিক্ষোভ দেখান নার্সদের একাংশ। চতুর্থ শ্রেণির কিছু কর্মীও তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে কর্মরত নার্স তথা প্রোগ্রেসিভ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের নদিয়া জেলা আহ্বায়ক গৌরী মালোর অভিযোগ, “আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি যে মেডিসিন ওয়ার্ডে পিপিই এবং এন ৯৫ মাস্ক দিতে হবে। কিন্তু তা দেওয়া হচ্ছে না। আবার সারি হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও প্রায় জোর করেই সন্দেহভাজন করোনা রোগীকে জেলা হাসপাতালে রাখা হচ্ছে।” ‘সারি’ হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও কেন করোনা সন্দেহভাজনদের জেলা হাসপাতালে রাখা হচ্ছে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা। জেলাশাসক বলেন, “সকলের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টা জানছি। তার আগে মন্তব্য করব না।”

জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চাপড়ার বাসিন্দা ওই প্রৌঢ় বিএসএফ থেকে অবসর নিয়ে খিদিরপুরে পোর্ট ট্রাস্টে রক্ষী হিসাবে কাজ করছিলেন।

জ্বর নিয়ে গত ৮ এপ্রিল তিনি বাড়ি ফেরেন। জ্বর না কমায় বুধবার তাঁকে চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালের আউটডোরে আনা হয়। সেখানে থেকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল।

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, আক্রান্তের পরিবারের আড়াই বছরের শিশু-সহ ছ’জনকে বুধবারই কৃষ্ণনগর কর্মতীর্থে কোয়রান্টিন করা হয়েছে।

এ দিন জেলা প্রশাসনের দেওয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিতেও ছ’জনকে কর্মতীর্থে কোয়রান্টিন কেন্দ্রে ভর্তি করার কথা জানানো হয়েছে। আক্রান্ত যে গ্রামের বাসিন্দা, সেটির সমস্ত রাস্তা ও খেয়াঘাট সিল করে দেওয়া হয়েছে। ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের শনাক্ত করে তালিকা তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। হাসপাতালেও একই ধরনের তালিকা হতে পারে।

এ দিন প্রোগ্রেসিভ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের জেলা আহ্বায়ক গৌরী মালোর অভিযোগ করেন, “চাপড়ারই এক মহিলা রোগীকে সারি হাসপাতাল থেকে আবার শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনও রকম পিপিই বা এন৯৫ মাস্ক ছাড়াই তাঁর দেখভাল করতে হচ্ছে। আমাদের কোনও রকম আপত্তি শোনা হচ্ছে না।”

শক্তিনগর হাসপাতালের সুপার শচীন্দ্রনাথ সরকার এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে হাসপাতাল সূত্রের খবর, চাপড়ার ওই আক্রান্ত ব্যক্তি যেখানে ভর্তি ছিলেন, সেই মেডিসিন ওয়ার্ডের রোগীদের বের করে অন্য ঘরে রাখা হচ্ছে।

মে়ডিসিন ওয়ার্ডকে সংক্রমণ মুক্ত করার ব্যবস্থা হচ্ছে। প্রশাসনের কর্তারা কর্তব্যরত নার্সদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পিপিই, মাস্ক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরে তাঁরা কাজে ফিরে গিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Chapra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE