Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

হাসপাতালে এখন রোজই চাঁদের অমাবস্যা!

করোনার ছায়া পড়েছে গাঁয়ের গভীরেও। নিভু নিভু গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির সামনেও ভয়ার্ত মানুষের আঁকাবাঁকা লাইন। কেমন আছে সেই সব অচেনা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি, খোঁজ নিল আনন্দবাজারব্লক হাসপাতালের দুরত্ব প্রায় ১৮ কিলোমিটার। জিয়াগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালের দূরত্বও প্রায় একই।

রোগী দেখছেন চিকিৎসক। নিজস্ব চিত্র

রোগী দেখছেন চিকিৎসক। নিজস্ব চিত্র

মৃন্ময় সরকার
রানিতলা  শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২০ ০৬:৩৮
Share: Save:

গ্রামের আটপৌরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কালেভদ্রে চিকিৎসক এলে লোকজন টিপ্পনি কাটতেন, ‘ওই দ্যাখেন চাঁদের অমাবস্যা এলেন!’ প্রায় নিঝুম সেই হাসপাতাল সপ্তাহভর চলত, একজন ফার্মাসিস্টের অনুশাসনে। ভগবানগোলার কোলান, জীবনপুর, আমডহড়া, ভান্ডারা কিংবা হাজিগঞ্জের বাসিন্দারা তাই জ্বর থেকে পেট খারাপের ওষুধ খুঁজতেও ছুটতেন নশিপুর গ্রামীণ হাসপাতালে।

ব্লক হাসপাতালের দুরত্ব প্রায় ১৮ কিলোমিটার। জিয়াগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালের দূরত্বও প্রায় একই। ঘরের কাছে কোলান প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পা বাড়ানো ছিল নিছক দুর্ঘটনায়। অথচ ওই হাসপাতালগুলিতে ভিড় কমাতেই কোলান গ্রামের ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। গ্রামবাসীরা বলছেন, ‘‘কোন ভরসায় যাব শুনি, আছে তো একজন ফার্মাসিস্ট আর এক নার্স।’’ চিকিৎসকের আনাগোনা ছিল কচ্চিত কদাচিৎ। জীবনপুর থেকে আমডহড়া তাই ছুটত দূরের হাসপাতালে।

করোনার ছায়ায় সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিই এখন চেহারা বদলে ফেলেছে। লকডাউনের নিস্তব্ধতা ভেঙে সেখানে গ্রামীণ মানুষের ভিড়ও হচ্ছে বেশ। জেলা স্বাস্থ্য দফতর বলছে, এখন সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোজ নিয়ম করে চিকিৎসক আসছেন। সকাল ন'টা থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত চলছে চিকিৎসা। বেড়েছে নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যাও। রোগের ছায়ায় বেড়েছে রোগীর সংখ্যাও।

ভগবানগোলা-২ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক উৎপল মজুমদার বলেন, ‘‘চিকিৎসকের ঘাটতি ছিল বলেই কোলান স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক নিয়মিত যেতেন না। এখন সেই সমস্যা মেটানো গিয়েছে অনেকটা।’’ জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্য দফতরের তত্ত্বাবধানে আশা কর্মীদের একটি দল নিয়মিত বহিরাগত মানুষজনের উপরে নজর রাখছেন। প্রয়োজনে তাঁরাই বাড়ি গিয়ে ঘরে ফেরা সেই সব ভিন রাজ্যের শ্রমিকদের খোঁজ রাখছেন। খবর পেয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক নিজেই ছুটে যাচ্ছেন বহু গ্রামে। খোঁজ নিচ্ছেন পরিযায়ী সেই সব শ্রমিকদের। স্থানীয় বাসিন্দা সিকান্দার শেখ বলেন, ‘‘এখন প্রতিদিনই ডাক্তার আসছেন। আর নশিপুর বা জিয়াগঞ্জ হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে না। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে লোকজন আসছে। কিন্তু করোনার ভয় কেটে গেলেও চিকিৎসক নিয়মিত আসবেন তো! সে প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE