Advertisement
E-Paper

দুর্নীতির অভিযোগ লালগোলার স্কুলে

লালগোলার এমএম অ্যাকাডেমির পরে ওই এলাকারই আরও একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল-সহ বিভিন্ন বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:২৮

লালগোলার এমএম অ্যাকাডেমির পরে ওই এলাকারই আরও একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল-সহ বিভিন্ন বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

এমএম অ্যাকাডেমির মতো অভিভাবক ও পড়ুয়ারাই নয়, এ বার অভিযোগ তুলেছেন লালগোলার রাজানগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির বিদায়ী সম্পাদক আব্দুল হান্নান। তাঁর অভিযোগ, ‘‘মিড ডে মিল, ছাত্রছাত্রীদের পোশাকের টাকা, বিদ্যালয়ে গরহাজিরার প্রমাণ মুছতে শিক্ষকদের হাজিরার খাতা পরিকল্পিত ভাবে লোপাট করে দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয় ভবন নির্মাণে সরকারি টাকাও নয়ছয় করা হয়েছে।’’

তাঁর দাবি, এই সব দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে তিনি রুখে দাঁড়িয়েছেন বলেই তাঁকে গত ৪ অগস্ট গোপনে ও অবৈধ ভাবে পরিচালন সমিতি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সোমবার ও বুধবার তিনি এই গোটা বিষয়টি জানিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক, লালগোলার বিডিও এবং লালগোলার সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

এমন অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ রাজারামপুর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক সাইফুদ্দিন শেখ। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘আব্দুল হান্নানের এক ছেলের রয়েছে ইমারতি সামগ্রীর দোকান রয়েছে। তিনি চান বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ইমারতি সামগ্রী তাঁর ছেলের দোকান থেকে কেনাই হোক। তাঁর আর এক ছেলেকে চুক্তির ভিত্তিতে বিদ্যালয়ের কম্পিউটর প্রশিক্ষক হিসাবেও নিয়োগ করতে চান। ওই দু’টো প্রস্তাবের কোনওটাই রাখতে পারিনি। তাই আমার বিরুদ্ধে আব্দুল হান্নান কুৎসা ও মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’

লালগোলার সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘আব্দুল হান্নানের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

পঞ্চম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের স্কুলের পোশাকের জন্য পড়ুয়া পিছু ৪০০ টাকা করে দেওয়া হয়। ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের পোশাক বিতরণের টাকা, নিম্নমানের মিড ডে মিল ও অনিয়মিত পঠনপাঠনের অভিযোগ তুলে কয়েক মাস আগে রাজারামপুর বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তালাবন্দি
করে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখান।

সেই প্রসঙ্গ তুলে আব্দুল হান্নানের অভিযোগ, ‘‘২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের পোশাকের জন্য ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার ৮০০ টাকা বরাদ্দ হয়। প্রধানশিক্ষক সব টাকা এক সঙ্গে তুলে তাঁর হাতে দিতে বলেন। দুর্নীতি আটকাতে তাঁকে বলি, একটি ক্লাসের টাকা বিলি হয়ে গেলে পরের ক্লাসের জন্য টাকা তুলব। গত ২৮ জুলাই ওই নিয়ে মত বিরোধ হয়। তার ৬ দিন পর আমাকে ও পরিচালন সমিতির চার-পাঁচ জন সদস্যকে আড়ালে রেখে গোপনে মিটিং করা হয়। সেই মিটিং-এ আমাকে অবৈধ ভাবে সম্পাদকের পদ থেকে অপসারিত করা হয়।’’

গত ৩১ জুলাই ওই বিদ্যালয়ের স্টাফ কাউন্সিলের মিটিং হয়। মিটিং-এ স্টাফ কাউন্সিলের ৪৮ জন সদস্যের মধ্যে হাজির ছিলেন ২৯ জন। বাকি ১৯ জনই ছিলেন গরহাজির। মিটিং- এর রেজুলেশন বলছে, ‘‘শিক্ষকশিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের ০১।০১।২০১৪ হতে ০৭।০৭।২০১৫ তারিখ পর্যন্ত হাজিরার স্বাক্ষর থাকা হাজিরার খাতা খুঁজে না পাওয়ায় নতুন খাতায় ০৮।০৭।২০১৫ তারিখ থেকে স্বাক্ষর করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হল। কিছু দিন অপেক্ষা করার পর হাজিরা খাতা না পেলে থানায় ডায়েরি করা হবে।’’ দেড় বছরের স্বাক্ষর থাকা হাজিরা খাতা উধাওয়ের বিষয়ে আজও থানায় ডায়েরি করা হয়নি। ওই প্রসঙ্গ তুলে আব্দুল হান্নান বলেন, ‘‘আসলে শিক্ষকদের একটা অংশের অস্বাভবিক গরহাজিরা আড়াল করতেই প্রধানশিক্ষকের জিম্মায় থাকা শিক্ষকদের হাজিরা খাতা লোপাট দেখানো হয়েছে।’’

তাঁর সংযোজন, ‘‘হাজিরা খাতা লোপাটের মতো জরুরি বিষয়ে ডাকা স্টাফ কাউন্সিলের মিটিং হল। অথচ ৪৮ জনের মধ্যে হাজির মাত্র ২৯ জন। ১৯ জনই গরহাজির। ফলে সহজেই বোঝা যায় স্কুলে অন্য দিনের হাজিরার দশা।’’ মিড ডে মিল, ডেপুটেশন ভ্যাকান্সিতে শিক্ষক নিয়োগ, ভবন নির্মাণের ব্যয়-সহ যাবতীয় দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধানশিক্ষক বলেন, ‘‘ব্যস্ত থাকায় খোয়া যাওয়া হাজিরা খাতার বিষয়ে থানায় ডায়েরি করা যায়নি। ভবন নির্মাণ থেকে মিড ডে মিল পর্যন্ত কোনও বিষয়ের টাকাকড়ি নিজে হাতে নাড়ি না। ওই সব বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তরা ভুল করলে আমার ঘাড়ে তার দোষ পড়ে।’’

আব্দুল হান্নান বলছেন, ‘‘অভিজ্ঞতা বলছে, আসলে শিক্ষকরা দায়িত্বে থাকলে মিড ডে মিল মোটামুটি ভাল চলে। কিন্তু শিক্ষদের থেকে দায়িত্ব নিয়ে প্রধানশিক্ষক তাঁর অনুগত অশিক্ষক কর্মীকে দায়িত্ব দিয়েছেন অর্থ নয়ছয় করার উদ্দেশ্যেই। প্রকৃত তদন্ত হলে তা ধরা পড়বে।’’

আলোচনাসভা। আলোকবর্ষ উপলক্ষে একটি আলোচনা সভা হয়ে গেল ঘাটাল বিদ্যাসাগর হাইস্কুলে। মহকুমা বিজ্ঞান ও উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় যোগ দেন মেদিনীপুর কলেজের অধ্যাপক মাখনলাল নন্দ গোস্বামী ও মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক তথা সায়েন্স সেন্টারের সম্পাদক সুচাঁদ পাল। ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুেরর ঘাটাল পুরসভার চেয়ারম্যান বিভাস ঘোষ প্রমুখ।

Corruption Lalgola school headteacher mid day meal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy