প্রতীকী ছবি।
স্বাস্থ্যভবনের তালিকা অনুযায়ী সারা রাজ্যের মধ্যে কলকাতায় ৯৩ হাজার পাঁচশো, উত্তর চব্বিশ পরগনায় ৪৭ হাজারের পর একমাত্র মুর্শিদাবাদ জেলায় ৩৭ হাজার পাচশো কোভিড ডোজ এসেছে। জেলায় মোট ৩৫ হাজার ৩৯৫ জনকে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। আরও দু’হাজারের ওপর এই ডোজ় অতিরিক্ত থাকবে।
অন্য জেলার তুলনায় মুর্শিদাবাদে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কম হওয়া সত্ত্বেও এই জেলায় এত প্রতিষেধক কেন তাই নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। যদিও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে এর কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি কেউ। অতিরিক্ত জেলাশাসক (স্বাস্থ্য) রজত নন্দা বলেন, “মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের তরফ থেকে জেলার প্রত্যেক সরকারি হাসপাতাল, বেসরকারি হাসপাতাল, সমস্ত ক্লিনিক থেকে স্বাস্থ্যকর্মী এমনকি আইএমএ অনুমোদিত চিকিৎসকদের ডাটা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই ডাটা অনুযায়ী ভ্যাকসিন চাওয়া হয়েছিল।” জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, “আমাদের মোট স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা এই মুহুর্তে ৩৯ হাজারের কাছাকাছি। ওই তালিকায় যে সংখ্যা দেখা যাচ্ছে সেটা পুরনো। হিসেব অনুযায়ী ভ্যাকসিন ডোজ কমই এসেছে।” কিন্তু অন্য জেলার সঙ্গে এই জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কম, তা স্বত্তেও এত ডোজ কেন প্রয়োজন? প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, “অন্য জেলার তুলনায় এই জেলায় চিকিৎসক, নার্স, গ্রামীণ স্বাস্থ্যকর্মী, আশা কর্মী এবং অঙ্গনওয়ারী কর্মীর সংখ্যা বেশি। সেই জন্য এই জেলায় ডোজের সংখ্যাও বেশি দাঁড়িয়েছে।”
দেশ জুড়ে করোনা সংক্রমন থেকে রেহাই পাননি এই জেলার মানুষজনও। সরকারি তথ্য অনুয়ায়ী ইতিমধ্যে করোনা সংক্রমণে ১৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী জেলার করোনা হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২০ জন। যদিও বেলাশেষে হাসপাতালে মাত্র ৬জন ভর্তি আছেন বলে করোনা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়। জেলার বাইরে চিকিৎসাধীন আছেন আরও ১৪জন বা তারও কম বলে স্বাস্থ্যদফতর সূত্রে জানা যায়। ১১৭ জন আছেন হোম আইসোলেশনে। তবে ১১ হাজার দু’শো ১৪ জন সংক্রামিতের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন এগারো হাজারের কাছাকাছি মানুষ। জেলার বেশ কয়েকটি পুরসভায় কোভিড সংক্রমণ শূন্য রয়েছে মাস খানেক ধরে।
অথচ লকডাউনের সময় ভিন রাজ্য থেকে জেলায় ফিরেছিলেন পরিযায়ীরা। সেই সময় জেলা স্বাস্থ্যদফতর ও প্রশাসন করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছিল। আর সেই সম্ভাবনা থেকেই জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও প্রচুর সংখ্যক স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজে লাগিয়েছিল। আর তারাও নিজেদের উজাড় করে যতটা সম্ভব করোনা ভাইরাস যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে ব্যাপারে সদা তৎপর ছিলেন।
ফলে সক্রিয় স্বাস্থ্যকর্মীদের সেই তৎপরতায় জেলায় করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ছিল। পাশাপাশি ধারাবাহিক পরীক্ষা চালানো, জেলা স্বাস্থ্যদফতর সহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ধারাবাহিক প্রচার চালিয়ে, নির্দিষ্ট সময় অন্তর শিবির করে মানুষকে বোঝানোর জন্যই করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েনি বলেই দাবি প্রশাসনের।
পুলিশ প্রশাসনের সক্রিয় ভুমিকার কথাও এক্ষেত্রে উল্লেখ করেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “ভুলে গেলে চলবে না অন্য জেলার তুলনায় এই জেলায় জনসংখ্যা বেশি। ফলে স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যাও বেশি। আর এত সংখ্যক স্বাস্থকর্মী বিশেষ করে এএনএম বা আশাকর্মীরা সদা তৎপর না থাকলে এই অতিমারীকে ঠেকানো যেত না।” আর তাই কোভিশীল্ড এই জেলায় বেশি প্রয়োজন হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy