Advertisement
২০ মে ২০২৪

গ্রামে কি ডেঙ্গির হানা, দেখে গেলেন ডাক্তারেরা

ক’দিন ধরে ধুম জ্বর। প্লেটলেট নেমে যায় হু হু করে। শেষে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল মাকে। একটু সুস্থ হতে প্রৌঢ়াকে বাড়ি নিয়ে আসে ছেলে। কিন্তু দু’দিন যেতে যেতেই এ বার তাঁর পালা। বলছিলেন মহিষন্যাংড়ার বাসিন্দা প্রশান্ত মাঝি। শুধু তিনি-ই নন, গোটা গ্রামেই ঘরে ঘরে এক অবস্থা।

চলছে রক্তপরীক্ষা। — নিজস্ব চিত্র

চলছে রক্তপরীক্ষা। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:১৫
Share: Save:

ক’দিন ধরে ধুম জ্বর। প্লেটলেট নেমে যায় হু হু করে। শেষে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল মাকে।

একটু সুস্থ হতে প্রৌঢ়াকে বাড়ি নিয়ে আসে ছেলে। কিন্তু দু’দিন যেতে যেতেই এ বার তাঁর পালা। বলছিলেন মহিষন্যাংড়ার বাসিন্দা প্রশান্ত মাঝি। শুধু তিনি-ই নন, গোটা গ্রামেই ঘরে ঘরে এক অবস্থা। এক মাসে অন্তত ৫০ জন জ্বরে আক্রান্ত। এমনকী পড়শি গ্রাম গোয়ালদহের ছবিটাও আলাদা নয়। ডেঙ্গির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে কৃষ্ণনগরের ১ ব্লকের দোগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের এই দু’টি গ্রামে।

গত এক মাস ধরে ওই দু’টি গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা জ্বরে আক্রান্ত। তাঁদের অনেকেরই রক্তে এনএসওয়ান পজিটিভ এসেছে। ফলে ডেঙ্গি-ভয়ে কাঁপছেন বাসিন্দারা। সোমবার পর্যন্ত ওই দু’টি গ্রামের ৭ জন বাসিন্দা শক্তিনগরে জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বাসিন্দাদের দাবি, প্রায় প্রতি দিনই কেউ না কেউ জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।

মহিষন্যাংড়া গ্রামের বাসিন্দা তহমিনা বিবির প্লেটলেট ৪৩ হাজারে নেমে যায়। জেলা হাসপাতাল তাঁকে এনআরএস-এ রেফার করেছিল। গত ২৯ অগস্ট তিনি বাড়ি ফিরেছেন। বললেন, ‘‘সুস্থ তো হয়েছি, কিন্তু বাড়িতে এখনও তিন জন ভুগছে।’’

ঘটনার খবর পেয়ে সোমবার দুপুরে দুই গ্রামেই পাঠানো হয়েছিল মেডিকেল টিম। তাঁরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে দেখেন। সংগ্রহ করেন জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের রক্তের নমুনা। মশার আতুঁড়ঘর হিসেবে চিহ্নিত করেন বেশ কিছু জায়গা। গ্রামের আনাচে কানাচে যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মজা পুকুর-জলা খাল-বিল। পাট পচা জলে মশার আরওই বাড়বাড়ন্ত। বাসিন্দাদের সতর্ক করার পাশাপাশি এ দিন সকালে মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় জেলা হাসপাতালে গিয়ে জ্বরে আক্রান্তদের খোঁজখবর নেন। বৈঠকও করেন হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে। তাপসবাবু পরে বলেন, “ওই দু’টি গ্রামে বেশ কিছু লোকের জ্বর হয়েছে। অনেকেরই এনএসওয়ান পজিটিভ এসেছে। তবে ডেঙ্গি কি না নিশ্চিত নয়।’’

নিজেদের গ্রামকে পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব নিজেদেরও। মেডিক্যাল টিমের এমন পরামর্শে সন্তুষ্ট নন বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, দু’টি গ্রামের জন্য একটি মাত্র উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। তারা কিংবা স্বাস্থ্য দফতরের কেউই এলাকায় কোনও কাজ করে না। দোগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের অর্চনা বিশ্বাস বলেন, “আমাদের তো মশা তাড়ানোর কামান নেই। তবে গত দু’দিন ধরে ব্লিচিং-চুন ছড়ানো হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dengue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE