Advertisement
E-Paper

এটিএমে সংসার পাতছে সারমেয়

কপিয়ার বসিয়ে প্রতারণার যান্ত্রিক কায়দা-কানুনের চেয়েও সরল গ্রামীণ মানুষকে পিন নম্বর জেনে প্রতারণার নজিরের দিকেই পাল্লা ভারী বলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৮ ০১:৪১
সুখ-নিদ্রা: রবিবার বহরমপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

সুখ-নিদ্রা: রবিবার বহরমপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

দেশ জুড়ে এটিএম জালিয়াতির আঁচ থেকে মুর্শিদাবাদও যে বাদ পড়ছে না, পুলিশের খাতায় চোখ রাখলে তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

কখনও জেলা সদর কখনও বা ঝাড়খণ্ড সীমানার গঞ্জ শহর— এটিএমে কপিয়ার বসিয়ে কিংবা অন্য কোনও ভাবে জালিয়াতির নজির কম নয়। গত সাত দিনেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তার কিছু নজির। তবে, কপিয়ার বসিয়ে প্রতারণার যান্ত্রিক কায়দা-কানুনের চেয়েও সরল গ্রামীণ মানুষকে পিন নম্বর জেনে প্রতারণার নজিরের দিকেই পাল্লা ভারী বলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে।

তার উপর জেলার অধিকাংশ এটিএমেই সিসিটিভি নেই। ফলে সেখানে প্রতারণার পরে তার কোনও সূত্র পড়ে থাকে বলেই দাবি করেছে জেলা গোয়েন্দারা। বিভিন্ন ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান বলছে, জেলার অধিকাংশ এটিএমই রক্ষীবিহীন। শহর বহরমপুর ছাড়া মুর্শিদাবাদ জেলার অধিকাংশ এটিএমে রক্ষী নেই দীর্ঘ দিন ধরে। তা নিয়ে গ্রাহকদের আপত্তি এত দিন কানেই তোলেননি বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। এমনকি প্রতারণার এমন সুবিস্তৃত জাল ছড়িয়ে পড়ার পরেও কোনও ব্যাঙ্কের কাছে সে আশ্বাস মেলেনি। আর সেই সুযোগে প্রতারণার অবাধ ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে সীমান্ত ঘেঁষা এই জেলা।

গত কয়েক দিনে বহরমপুর এবং আশাপাশের শহর ঘুরে যে ছবিটা দেখা তাতে স্পষ্ট এই প্রতারণা নিয়ে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের তেমন উদ্যোগ নেই। গোরাবাজার থেকে খাগড়া, বানজেটিয়া থেকে শহরের প্রাণ কেন্দ্র ব্যারাক স্কোয়্যারের আশপাশ— কোনও এটিএমেই প্রহরীর দেখা মেলেনি। যা মিলেছে, তা হল কোথাও বৃষ্টির থেকে বাঁচতে কুকুরের স্থানীয় আড্ডাখান কোথাও বা ছাগলের পরিপাটি সংসার।

বহরমপুরের অন্তত তিনটি এটিএমে দেখা গিয়েছে ভর সন্ধেতেই চিৎপাত হয়ে ঘুমোচ্ছেন ভবঘুরেরা। খাগড়ার রামপ্রসাদ হাজরা কিংবা হরিহরপাড়ার রাজীবুল ইসলাম এমনই দাবি করেছেন। ডোমকলে প্রায় ৩০টি এটিএম রয়েছে। সেখানে দু’টি ছাড়া কোনওটিতেই রক্ষী নেই। কোথাও দরজা ভাঙ্গা, কোথাও এটিএমের ভেতরে শুয়ে আছে কুকুর-ছাগল। একই ছবি রানিনগরে।

জেলার লিড ব্যাঙ্ক ইউবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলায় বিভিন্ন ব্যাঙ্কের প্রায় ৫২৫টি এটিএম আছে। তার মধ্যে মেরেকেটে একশোটিতে রক্ষী আছে। এক সময় জেলায় এটিএমের সংখ্যা কম ছিল, তখন ব্যাঙ্কগুলি নিজেরাই তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা করত। কিন্তু সংখ্যায় বেড়ে যাওয়ায় তাদের দেখভালও এখন কার্যত শিকেয়। ব্যাঙ্কের ম্যানেজার অমিত সিংহ বলছেন, “বছর ছয়েক ধরে এটিএমের রক্ষী থেকে শুরু করে টাকা ভরা, সব কিছুই এজেন্সিকে দিয়ে করানো হয়। এটি উর্দ্ধত্বন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত। যা ব্যবস্থা নেওয়ার তাঁরাই নেবেন।” মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, “এলাকার ব্যাঙ্ক আধিকারিকদের নিয়ে প্রতিটি থানাকে নিরাপত্তা বিষয়ে বৈঠক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশের টহলদারিও বাড়ানো হবে। আশা করা যায় তাতে কিছুটা সুরাহা হবে।’’

ATM Dog
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy