E-Paper

সিবিআই আসার অপেক্ষায় পরিবার

গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে মুরুটিয়ার দীঘলকান্দি পঞ্চায়েতের ধাড়া গ্রামে নওশাদ শেখকে (৩০) কুপিয়ে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা।

অমিতাভ বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:২২
ব্রজনাথপুরে শওকত মণ্ডলের বাড়ি।

ব্রজনাথপুরে শওকত মণ্ডলের বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।

একটি অপমৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে মৃতের এক ভাইয়ের নাম একটি খুনের মামলায় জড়িয়ে যাওয়ার তদন্তও করতে বলা হয়েছে। সিবিআই অফিসারেরা কখন আসেন, আপাতত তারই প্রতীক্ষায় রয়েছেন মুরুটিয়ার ব্রজনাথপুর ও ধাড়া গ্রামের দু’টি পরিবার। অপেক্ষায় আছেন গ্রামবাসীও। কার্যত অস্বস্তিতে পড়া পুলিশ কর্তাদের বক্তব্য, আদালতের নির্দেশ হাতে না আসা পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।

গত ২৬ অগস্ট গভীর রাতে মুরুটিয়া থানার পুলিশ ব্রজনাথপুরে মোহন মণ্ডল-শওকত মণ্ডলের বাড়িতে হানা দেয়। পুলিশ এসেছে জানতে পেরে মোহন সীমান্তের অন্ধকারে গা ঢাকা দিলেও পরের দিন সকাল ৯টা নাগাদ শওকত মণ্ডলের (৩৮) বাড়ির পিছনে তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায়। তাঁর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করার ফলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ সেই অভিযোগ না নিলে তাঁরা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। হাই কোর্ট পুলিশকে এফআইআর নেওয়ার নির্দেশ দিলে সেই দিনই একটি খুনের মামলায় মোহনকে অভিযুক্ত করে মুরুটিয়া থানা— মোহনের আইনজীবী হাই কোর্টে এই কথা জানিয়েছেন।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে মুরুটিয়ার দীঘলকান্দি পঞ্চায়েতের ধাড়া গ্রামে নওশাদ শেখকে (৩০) কুপিয়ে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা। সেই মামলায় মোহনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আইনজীবীদের কাছে গোটা বিষয়টি শুনে বৃহস্পতিবার হাই কোর্ট সিবিআই-কে দু’টি খুনেরই তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে।

শুক্রবার ব্রজনাথপুর গ্রামে শওকতের বাড়িতে গেলে তাঁর স্ত্রী মাঞ্জুরা বিবি বলেন, "আমার স্বামী যখন মারা যান, তখন আমি অন্তঃসত্ত্বা ছিলাম। খুব অসহায় অবস্থায় হাই কোর্টের দ্বারস্থ হই। মোহনই আমায় সেখানে নিয়ে যায়। সিবিআই তদন্তে আশা করি সুবিচার পাব।"

তবে মোহন ও শওকত অবৈধ কাজকর্মে যুক্ত থাকতে পারেন গ্রামবাসীদের একা‌ংশের ধারণা। তাঁরা জানান, পুলিশ মাঝেমধ্যেই তাঁদের তাড়া করত। গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য কামালউদ্দিন মণ্ডল বলেন, "সে দিন সকালে শওকতের স্ত্রী মাঞ্জুরার ফোন পেয়ে গিয়ে দেখি বাড়ির পিছনে বাঁশবাগানে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে শওকতের দেহ। দেখেই বুঝেছিলাম, ও মারা গিয়েছে। ওর হার্টের রোগ ছিল। কী ভাবে মারা গিয়েছে, কেন মারা গিয়েছে তা আমার কাছে বিষয়টি স্পষ্ট নয়।"

ধাড়া গ্রামে নিহত নওশাদের বাবা খেজমত শেখ আবার দাবি করেন, “ওই খুনে মোহন জড়িত। সিবিআই তদন্ত হলে ভালই হবে।” নওশাদের ভাই মহসিন শেখ পুলিশের কাছে ১২ জনের নামে অভিযোগ করেছিলেন। এ দিন তিনি বলেন, “মোহন-সহ মোট আট জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে, বাকিরা পলাতক।” তাঁর দাবি, “চোখের সামনে দাদাকে যারা কুপিয়েছিল তাদের মধ্যে মোহনও ছিল। সাক্ষীরা আদালতে গিয়ে তা জানিয়ে এসেছেন।” দীঘলকান্দি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কার্তিক মণ্ডল বলেন, "নওশাদ খুনে পুলিশ আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করেছে। সিবিআইও তদন্ত করে দেখুক।"

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

murutia

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy