তদন্তে সিআইডি-র অফিসারেরা।
কৃষ্ণনগরে নিহত পুলিশকর্মী রমাপ্রসাদ চন্দ কবে কবে যে বিপুল পরিমাণ টাকার মালিক হয়ে উঠেছিলেন তা বিশ্বাসই করতে পারছেন না তাঁর প্রতিবেশী-পরিজনেরা। কী ভাবে ওই পুলিশকর্মী এত টাকার মালিক হলেন তা নিয়েই শহর জুড়ে চলছে জোর চর্চা। বুধবার রাতে কৃষ্ণনগরের পালপাড়ার ওই বাড়িতে ঢুকে রমাপ্রসাদবাবু ও তাঁর স্ত্রী জয়ন্তীদেবীকে খুন করে দুষ্কৃতীরা। ঘটনার তদন্তে নেমে সিআইডি প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছে কমবেশি প্রায় দশ কোটি টাকা সুদে খাটাচ্ছিলেন রমাপ্রসাদবাবু।
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে কৃষ্ণনগর শহরে ঢোকার রাস্তার পাশে ঝাঁ-চকচকে বাড়িটার মালিক এখন আর নেই। কিন্তু ওই বাড়িটাকে ঘিরে মানুষের কৌতূহল বেডে়ই চলেছে। ওই বাড়ির সামনে রয়েছে কিছু দোকান। পিছনে রমাপ্রসাদবাবুর বড়দা গোপাল চন্দের বাড়ি। ভাই-বোনেদের সঙ্গে বিশেষ মেলামেশা না থাকলেও পারিবারিক যোগাযোগ ছিল। তবে বড়বৌদি গীতা চন্দের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল রমাপ্রসাদবাবু ও তাঁর স্ত্রীর। কিন্তু তিনিও এতদিন জানতে পারেননি যে, তাঁর দেওর এত টাকার মালিক হয়ে উঠেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর কাছে প্রসঙ্গটা তুলতেই গীতাদেবী রীতিমতো বিস্মিত হয়ে বলেন, ‘‘নাহ্, একবারের জন্যও বুঝতে পারিনি রমার এত টাকা আছে।’’
এমনিতেই পুলিশে চাকরি করার সুবাদে রমাপ্রসাদবাবুকে এলাকার সকলেই সমীহ করতেন। তবে কারও সঙ্গে তাঁর বিশেষ ঘনিষ্ঠতা না থাকলেও এলাকায় তাঁর বিরুদ্ধে তেমন কোনও অভিযোগও শোনা যায়নি। এলাকার বাসিন্দা এক যুবকের কথায়, ‘‘রমাদা এমনিতে সজ্জন ছিলেন। দেখা হলে ভাল ভাবে কথাও বলতেন।’’ তাঁর পড়শিদের একাংশ জানান, রমাপ্রসাদবাবুর সুদের কারবারের কথা তাঁরাও জানতেন। কিন্তু সেটা যে এই পর্যায়ের তা তাঁরা জানতেন না। তাঁদের অনেককেই এ দিন বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘মনে হচ্ছে, ওই সুদের ব্যবসায় ওঁর কাল হল।’’
ঘটনার পরেই চন্দ বাড়ির সামনে ভিড় করেছিলেন এলাকার মানুষ। কিন্তু একদিন পরেই সেই এলাকা খাঁ খাঁ করছে। বাড়ির সামনে প্রহরায় আছে দু’জন পুলিশ। সংবাদমাধ্যম বা বাইরের লোকের বাড়ির ভিতরে ঢুকতে নিষেধ রয়েছে। চন্দ দম্পতির ছেলে রুদ্রাশিস আছে পিসির বাড়িতে। এর মধ্যে একবার তাকে যেতে হয়েছে কোতোয়ালি থানায়। সেখানে পুলিশ তাকে বেশ কিছু সময় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
রুদ্রাশিসও এ দিন বলে, ‘‘বিশ্বাস করুন, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আমিও জানতাম বাবা সুদের কারবার করে। কিন্তু সেটা যে এত টাকা সেটা মা বলার আগে পর্যন্ত জানতাম না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy