Advertisement
০৪ মে ২০২৪
kali Puja 2022

শান্তিপুরে কৃষ্ণানন্দের পুজো এ বার পা দিল ৩৭৬ বছরে, প্রাচীন রীতি মেনে আজও হয় অর্চনা

কৃষ্ণানন্দ প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণা কালীর পুজো দীপান্বিতা অমাবস্যায়। কার্তিক মাসের পঞ্চমীতে পুজোর শুরু। শান্তিপুরে কৃষ্ণনন্দের বংশধররা আজও প্রাচীন রীতি মেনে নিজহাতে তৈরি করেন ছোট কালীমূর্তি।

শান্তিপুরে আগমেশ্বরীর পুজো।

শান্তিপুরে আগমেশ্বরীর পুজো। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিপুর শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২২ ১৯:১৭
Share: Save:

এ বার ৩৭৬ বছরে পা দিল নদিয়ার শান্তিপুরে কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশের কালীপুজো। এক সময় নবদ্বীপের আগমেশ্বরী পাড়ায় শুরু হয়েছিল সেই পুজো। পরে কৃষ্ণানন্দের বংশধরদের সঙ্গে পুজোও চলে এসেছিল নদিয়ারই শান্তিপুরে। আজও চিরাচরিত প্রথা মেনে চলে আসছে সেই পুজো।

কৃষ্ণানন্দ প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণাকালীর পুজো হয় দীপান্বিতা অমাবস্যায়। কার্তিক মাসের পঞ্চমীতে এই পুজোর শুরু। চিরাচরিত প্রথা মেনে আজও শান্তিপুরে কৃষ্ণানন্দের বংশধররা নিজহাতে তৈরি করেন ছোট কালীমূর্তি। কোজাগরী পুর্ণিমার পর পঞ্চমী থেকে একাদশী পর্যন্ত ওই মুর্তিতেই করা হয় পুজো। একাদশী তিথিতে শুরু হয় বড় মূর্তি তৈরির কাজ। এর পর বড় মূর্তির হৃদয়ে স্থাপন করা হয় কৃষ্ণানন্দের বংশধরদের হাতে তৈরি খড়ের কালী মূর্তিকে। অমাবস্যা শুরু হলে তবেই চোখ আঁকা হয় মূর্তির।

নদিয়ার নবদ্বীপের আনুমানিক ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন কৃষ্ণানন্দ। পরে তন্ত্রশাস্ত্রে ব্যুৎপত্তির জন্য ‘আগমবাগীশ’ উপাধি লাভ করেন কৃষ্ণানন্দ। তন্ত্রসাধনার আকর গ্রন্থ ‘বৃহৎ তন্ত্রসার’ তাঁরই রচিত। কথিত আছে, শাক্ত এবং বৈষ্ণবদের মধ্যে বিরোধ মেটাতে শান্তিপুরে অদ্বৈত আচার্যের উত্তরপুরুষ মথুরেশ গোস্বামী কৃষ্ণানন্দের প্রপৌত্র সার্বভৌম আগমবাগীশের সঙ্গে তাঁর নিজের মেয়ের বিয়ে দেন। এর পর নবদ্বীপের তদানীন্তন বৈষ্ণব এবং শাক্ত সমাজ সার্বভৌমকে একঘরে করে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সময় শান্তিপুরের বড় গোস্বামী পরিবারে জামাই এবং মেয়েকে শান্তিপুরে নিয়ে চলে আসেন মথুরেশ। বড় গোস্বামী বাড়ির কাছেই তিনি পঞ্চমুণ্ডির আসন প্রতিষ্ঠা করে সেখানে কালীপুজোর প্রচলন করেন। এর পর শান্তিপুর বড় গোস্বামী পাড়ায় শুরু হয় কালীপুজো। সেই প্রতিমার নামই আগমেশ্বরী।

মনে করা হয়, কৃষ্ণানন্দই বাংলায় প্রথম কালীমূর্তি এবং দক্ষিণাকালিকার পুজোর প্রবর্তক। কৃষ্ণানন্দের সেই পুজোয় ছিল বিশেষ রীতি। ভোগে দেওয়া হয় অড়হর ডালের খিচুড়ি, মোচার ঘণ্ট, এঁচোড়ের ডালনা এবং চালতার টক। পুজোর পর দিন দুপুর ১২ টায় বেহারার কাঁধে চাপিয়ে বিসর্জন দেওয়া হয় প্রতিমা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kali Puja 2022 Kali Puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE