Advertisement
০১ মে ২০২৪

তোপের মুখে কাউন্সিলরেরা

নদিয়ার প্রায় সব শহরই এগিয়ে রেখেছে বিজেপিকে। তৃণমূলের পক্ষে কতটা গভীর সেই ফাটল? খোঁজ নিচ্ছে আনন্দবাজার।নদিয়ার প্রায় সব শহরই এগিয়ে রেখেছে বিজেপিকে। তৃণমূলের পক্ষে কতটা গভীর সেই ফাটল? খোঁজ নিচ্ছে আনন্দবাজার।

সৌমিত্র সিকদার
শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৯ ০১:০৪
Share: Save:

মাত্র দু’বছর আগের কথা।

কুপার্স ক্যাম্প নোটিফায়েড এরিয়ার নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দিয়ে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছিলেন অধিকাংশ বিজেপি প্রার্থী। মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরে তাঁরা এলাকায় ফেরেন। ২০১৭ সালের ওই নির্বাচনে ১২টি ওয়ার্ডের সব ক’টিতেই জিতেছিল তৃণমূল। বিজেপি তো নয়ই, খুঁজে পাওয়া যায়নি বাম আর কংগ্রেসকেও।

লোকসভা নির্বাচনে কিন্তু ১২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ছ’টিতেই লিড পেয়েছে বিজেপি। কুপার্স থেকে প্রায় এক হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল তারা। চেয়ারম্যান শিবু বাইনের ওয়ার্ডেও সামান্য ভোটে এগিয়ে তারা।

কুপার্সের বাসিন্দাদের বড় অংশই মনে করেন, গোটা রাজ্যের সঙ্গে এই এলাকার একটা হল ফারাক হল— অন্যত্র দল বা প্রার্থী দেখে ভোট হয়, কুপার্সে ভোট হয় কাউন্সিলর দেখে। এখানে কাউন্সিলরেরাই শেষ কথা। তাঁরা যা বলবেন, সেটাই শেষ কথা। কিন্তু একচ্ছত্র ক্ষমতায় থেকে তাঁদের একাংশ স্বজনপোষণ এবং দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ। যার মাসুল এ বার গুনতে হয়েছে।

তৃণমূলেরই একাংশের অভিযোগ, কাউন্সিলরদের অনেকে মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেন না। বেশির ভাগই ফুলে-ফেঁপে উঠেছেন। সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হচ্ছে গরিব মানুষকে ঘর দেওয়া নিয়ে। কাউন্সিলর অনেককেই ঘরের জন্য মোটা টাকা দিতে হয়। বকলমে তাঁরা যে ঘর করে দেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা নিম্নমানের। কেউ প্রতিবাদ করলে ঘর পাবেন না। ঘরের অনুমোদন পেয়ে গেলেও সেই ঘরের কাজ শেষ হতে দু’বছর লেগে যায়। এ ছাড়া, উন্নয়নের কাজের নামে মোটা টাকা কাটমানি চলে। পাল্লা দিয়ে চলছে সিন্ডিকেট-রাজও।

চেয়ারম্যান শিবু বাইন অবশ্য পাল্টা বলছেন, “আমাদের এখানে যা উন্নয়ন হয়েছে, তার নিরিখে এই ভোট হয়নি। ২৩০০-র বেশি ঘর দেওয়া হয়েছে। আরও ঘরের কাজ চলছে। কোনও অভিযোগ কেউ করেনি। কিন্তু মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে ভোট দিয়েছে।”

ক্ষোভের অবশ্য আরও কারণ আছে। যেমন তৃণমূল প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও কুপার্স হাসপাতালের কাজ এখনও শুরুই হয়নি। গত পুরভোটে অনেকে ভোটও দিতে পারেননি বলে অভিযোগ। তবে কুপার্স শহর তৃণমূলের সভাপতি তথা ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পিন্টু দত্তের দাবি, “আমাদের ভোট আসলে বেড়েছে। সিপিএম এবং কংগ্রেসের সব ভোট বিজেপির দিকে চলে যাওয়ায় এই ফলাফল।”

সিপিএমের রানাঘাট পূর্ব ১ এরিয়া কমিটির সদস্য তথা কুপার্সের বাসিন্দা অশোক চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘তৃণমূলের লুটপাট, দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিজেপি-কে লোকে ভোট দিয়েছে।” কুপার্স শহর বিজেপি সভাপতি দীপক দে-ও বলেন, “শহরবাসীকে মানুষ বলে মনে করেন না অনেক কাউন্সিলর। এ বার সুযোগ পেয়ে মানুষ প্রতিবাদ করেছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cooper's Camp TMC Councilors
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE