Advertisement
২১ মে ২০২৪

ফের অচেনা হবে না তো বাহিনীর ব্যবহার!

মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনও বাহিনীর জওয়ানদের ছড়িয়ে দিয়েছিল জেলার ৯২ শতাংশ বুথে। তবে, ফল যে খুব আশানুরূপ হয়েছিল, ভোট শেষে বিরোধীদের আক্ষেপ দেখে এমনটা মনে হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর ও রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৩২
Share: Save:

নির্বাচনের মুখে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভরসায় বুক বেঁধে ছিলেন বিরোধীরা। জংলা পোশাকে উর্দিধারীরা গ্রাম-শহরের রাস্তায় রুট-মার্চ শুরু করতেই বিরোধী প্রার্থীদের কেউ বা মুখ ফুটে বলেই ফেলেছিলেন, ‘‘ওঁরা এসে গিয়েছেন, (কেন্দ্রীয় বাহিনী), এ বার ভোট হবে অন্যরকম।’’

মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনও বাহিনীর জওয়ানদের ছড়িয়ে দিয়েছিল জেলার ৯২ শতাংশ বুথে। তবে, ফল যে খুব আশানুরূপ হয়েছিল, ভোট শেষে বিরোধীদের আক্ষেপ দেখে এমনটা মনে হয়নি।

কোথাও দৃষ্টিহীন ভোটারকে সাহায্য করার অছিলায় ছাপ্পার অভিযোগ, কোথাও বা বুথে ঢোকার আগেই ফিরে যাওয়ার শাসানি—কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনেই তৃণমূলের এমন ‘খবরদারি’র অজস্র অভিযোগ করেছিলেন বিরোধীরা। সেই তালিকায় শেষ সংযোজন ছিল, ভগবানগোলায় বুথের মধ্যেই এক কংগ্রেস কর্মীরে পিটিয়ে-কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ। কংগ্রেস প্রার্থী আবু হেনা দাবি করেছিলেন, ‘‘মারধর করা হচ্ছে দেখেও নিস্পৃহ ভঙ্গিতে জওয়ানেরা জানিয়েছিল, ‘আমাদের কাজ ইভিএম রক্ষা করা।’ এর পরেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরে ভরসা রাখতে হবে!’’ তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র অশোক দাস অবশ্য বলছেন, ‘‘হার নিশ্চিত জেনেই বিরোধীরা এখন অজুহাত সাজাচ্ছে।’’

বাহিনীর এমন ‘ব্যবহারের’ মাঝেই আজ, সোমবার চতুর্থ দফার নির্বাচনে মুর্শিদাবাদের সব কেন্দ্রেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচনী আধিকারিক পি উলাগানাথন। আর, তা জানাতে গিয়েই ফের বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন তিনি। শনিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক ডেকে তিনি ছুড়ে দিয়েছিলেন ফতোয়া— ‘‘বুথের মধ্যে ক্যামেরা, ভিডিয়ো তো দূরস্থান মোবাইল নিয়েই প্রবেশ করতে পারবেন না সাংবাদিকেরা।’’ তা নিয়ে জলঘোলা শুরু হতেই অবশ্য ঢোঁক গেলেন, ‘বোঝাতে ভুল হয়েছিল’ বলে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেও জানিয়ে দেওয়া হয়, বৈধ পাস থাকলে ক্যামেরা নিয়ে বুথে ঢুকতে কোনও বাধা নেই সাংবাদিকদের। বিতর্কটা ঝড়ের মতো ছড়িয়ে পড়ে এর পরেই।

বিরোধীরা প্রশ্ন তোলেন, শনিবার, বহরমপুর লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে জেলাশাসক সাংবাদিক বৈঠক করলেন কেন? বহরমপুরে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের এমন কড়াকড়ি দেখে বাঁকা প্রশ্ন তুলতে থাকেন বিরোধীরা। বিজেপি দাবি করে, জাতীয় নির্বাচন কমিশন যে ক্ষমতা মিডিয়াকে দিয়েছে জেলাশাসক তা খর্ব করতে পারেন কী ভাবে?

জঙ্গিপুরের বিদায়ী সাংসদ কংগ্রেসের অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “বহু দিন থেকে রাজ্যের শাসক দলের ভূমিকা নিয়েছে জেলা প্রশাসন। অধীর চৌধুরীকে হারানোর জন্য তাই জেলার প্রশাসন চাইছে সাংবাদিকদের রুখতে, যাতে বুথের কোনও অপকর্ম বাইরে না আসে।’’ সেই অবস্থায় আজ, একশো শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে নির্বাচন।

কিন্তু, বিরোধীদের সংশয়, চেনা পোশাকে ফের ‘অচেনা’ ব্যবহার করবে না তো কেন্দ্রীয় বাহিনী!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Election 2019 Phase 4 Lok Sabha Election 2019 CRPF
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE